এ্যালোভেরা বা ঘৃতকুমারী আমাদের কাছে সুপরিচিত একটি নাম। এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ ভেষজ ঔষধি গাছ। দেখতে অনেকটা মধুপুরের আনারস গাছের মত। সব রকম জমিতেই এ্যালোভেরা চাষ করা যায়। তবে দোঁ-আশ ও অল্প বালু মিশ্রিত মাটিতে গাছের বৃদ্ধি ভালো হয়। বাজারে এর চাহিদা ভালো ও অধিক মুনাফা লাভ করা যায় বলে অনেকেই আজকাল বানিজ্যিক ভাবে এ্যালোভেরা চাষ শুরু করেছেন। গাছ রোপনের ৩ মাস পর থেকেই ফলন পাওয়া যায়। একটি গাছ থেকে ৬৫-৭০টি পাতা বিক্রি করা যায়। সময়ভেদে ৫-২৫ টাকা কেজি বিক্রি হয়ে থাকে এর পাতা। ৬ মাস থাকে ভরা মৌসুম। এ সময় দাম বেশি থাকে। এক বিঘাতে ২৫০ মণ ঘৃতকুমারী উৎপাদিত হয়। চারা বিক্রি করা যায় ৩০-৪০হাজার টাকা। গড় হিসেবে অল্প খরচে এক বিঘা জমিতে ঘৃতকুমারী চাষ করে বছরে দেড় থেকে দুই লক্ষ টাকা আয় করা যায়। সরজমিনে গিয়ে দেখা যায়, এ্যালোভেরা চাষ লাভজনক হওয়ায় টাঙ্গাইলের মধুপুর উপজেলার বেরিবাইদ ইউনিয়নের মুন্নাছ আলী বানিজ্যিক ভাবে এ্যালোভেরা চাষ শুরু করেন।
এ্যালোভেরা চাষী মুন্নাছ আলী বলেন,আমি এক বছর পূর্বে ৪০ শতাংশ জায়গায় এ্যালোভেরা চাষ করি, পাতা বিক্রিও শুরু করেছি। আমার বাগানের গাছের পাতায় সমস্যা। পাতার অগ্রভাগে ক্ষুদ্র ক্ষদ্র বিন্দুর মত দাগ পড়ে, সেখান থেকে কষ বের হয়ে পাতা নস্ট হয়ে যায়। এই রোগে আমার বাগান শেষ, বেশির ভাগ গাছ রোগে আক্রান্ত। এ পর্যন্ত অনেক পাতা নষ্ট হয়েছে। আমার প্রায় ৪লক্ষ টাকার মত খরচ। পাতা বিক্রি করেছি মাত্র ১০ হাজার টাকার। আমার খরচের তুলনায় সিকি ভাগ ও টাকা তুলতে পারিনি। আমি বড় দুশ্চিন্তায় আছি। বিক্রি সমস্যা না থাকলেও আমি পাতায় সমস্যা রোগটা নিয়ে বড় চিন্তিত। এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি অফিসার আল মামুন রাসেল বলেন, অতিরিক্ত তাপে পাতা মড়া রোগটি দেখা দেয়। আমরা ইতিমধ্যে মুন্নাছ আলীর বাগান পরিদর্শন করেছি। তার এ্যালোভেরা বাগানে চুন প্রয়োগ ও পাতা মরা রোগ প্রতিরোধে সকল পরামর্শ প্রদান করেছি। এছাড়া পন্য উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানে বানিজ্যিক ভাবে এ্যালোভেরা পাতা বিক্রির ব্যবস্থা করেছি। বর্তমানে পাতা বিক্রিও করতেছেন তিনি। সঠিক ব্যবস্থাপনায় অতিদ্রুত মুন্নাছ আলী সফলতা অর্জন করবেন বলে আমরা আশা করি।