দ্বাদশ সংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদেরের নোয়াখালী-৫ (কবিরহাট ও কোম্পানীগঞ্জ) আসন থেকে দলীয় মনোনয়ন চাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন নোয়াখালী-৪ (সদর ও সুবর্ণচর) আসনের সংসদ সদস্য একরামুল করিম চৌধুরী। গত শুক্রবার (১৬ এপ্রিল) সন্ধ্যায় কবিরহাট উপজেলার সুন্দলপুর ইউনিয়নের নিজ বাড়িতে আয়োজিত ইফতার ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠানে তিনি এ ঘোষণা দেন। নোয়াখালী আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক কমিটির এই সদস্য বলেন, “আমার বাড়ি কবিরহাট, এ জন্য আমি অনেক বেশি গর্ববোধ করি। এটা আমার হৃদয়। কবিরহাটের মানুষ ভোট দিয়েছেন। আপনারা কিন্তু কবিরহাটের মানুষকে সে সম্মান দেখাচ্ছেন না। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সিদ্ধান্ত কী হবে আমি জানি না। তবে যদি আপনারা চান, আমি নোয়াখালী-৪ এবং নোয়াখালী-৫ এই দুই আসন থেকে নমিনেশন চাইবো। জননেত্রী শেখ হাসিনা সিদ্ধান্ত দেবেন। আমার কী ইচ্ছে করে না আমার নিজ এলাকার মানুষকে ভালোবাসি। আপনাদের ভালোবাসার জন্য দিছি। কই আপনারাও ভালোবাসা দিচ্ছেন না। আপনারা যদি আমাকে নমিনেশন নেওয়ার জন্য অনুমতি দেন, তাহলে আমাকে হাত তুলে দেখান।” এ সময় উপস্থিত নেতাকর্মীরা হাত তুলে সমর্থন জানান।
ওবায়দুল কাদেরকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, ‘আপনাকে বাবার পরে স্থান দিয়েছি। কিন্তু আপনি তো ধরে রাখতে পারেননি। আপনার আপন ভাইয়ের (আবদুল কাদের মির্জা) কথায় আপনি আমাকে সাধারণ সম্পাদক থেকে বাদ দিয়ে দিলেন। আমাকে বাদ দেননি, সারা নোয়াখালী আওয়ামী লীগ পরিবারকে তছনছ করে দিয়েছেন। আজকে যাকে-তাকে আহ্বায়ক বানিয়ে দিয়েছেন। আহ্বায়ক হয়ে শুধু বহিষ্কার, বহিষ্কার। আরে কত বহিষ্কার করবেন?’
একরামুল করিম চৌধুরী বলেন, ‘কবিরহাটের মানুষ আমাকে নেতা বানিয়েছেন। আমার কী অপরাধ? আমাকে এভাবে অপমানজনকভাবে সরানো হলো। আমি ২৬টা খুন করছি, আমার ছেলে অস্ত্র নিয়ে চলে? কে এটা বলছে, আমি বলতে চাই না। অথচ এ দেশে বিচার নেই। কাদের ভাই বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। আমি যেহেতু আওয়ামী লীগ করি, আমি মাইকের সামনে কিছু বলবো না। কিন্তু আমার প্রশ্নটা হলো, আপনার স্ত্রীকে যে অসৌজন্যমূলক কথাবার্তা বলা হইছে, এটার বিচারও কি বাংলাদেশের মানুষ পাবে না?’ তিনি বলেন, ‘নিজ স্বার্থে যারা মিথ্যা কথা বলে বক্তৃতা দেয়, আমি মনে করি তাদের কাছে আর কবিরহাটের মানুষ যাবে না। যে লোক আমার সামনে বসতো না, সে লোক অসংখ্য বিশ্রী কথা বলে।’ আওয়ামী লীগের এই নেতা আরও বলেন, ‘কবিরহাট বঞ্চিত এলাকা। সবাই আমার কাছে আসে। আমি বিরক্ত হতাম। এখন আমার বাড়ি উন্মুক্ত। এখন থেকে মনে করবেন, এটাই আপনাদের বাড়ি। আমি মন্ত্রিত্ব চাই না, নগদ চৌধুরী হয়ে বাঁচতে চাই। ১৮ এপ্রিল আমি সিঙ্গাপুর যাবো। ২১ এপ্রিল ডাক্তার দেখানোর তারিখ। আমি যেন সুস্থ হয়ে ফিরে আসি, তার জন্য দোয়া করবেন। ফিরে এলে আমি সবার বাড়ি বাড়ি যাবো। কবিরহাটের জন্য ঝাঁপিয়ে পড়বো।’ এ সময় সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এ কে এম সামছুদ্দিন জেহান, কবিরহাট উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান, একরামুল করিম চৌধুরীর সহধর্মিণী কামরুন্নাহার শিউলী ও জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক আব্দুল মোমিন উপস্থিত ছিলেন।