রূপগঞ্জ টাইগার্সের দেওয়া ২৪৮ রানের জবাবে খেলতে নেমে ৮১ রানে ৫ উইকেট হারিয়ে খাদের কিনারায় চলে গিয়েছিল শেখ জামাল ধানম-ি। তারপর জয় পেতে প্রয়োজন ছিল অবিশ্বাস্য কিছুর। যার জন্ম দিলেন নুরুল হাসান সোহান। মোহামেডান সুপার লিগ থেকে ছিটকে যাওয়াতে মেহেদী হাসান মিরাজের ঠিকানা হয়েছে শেখ জামাল। ৬ষ্ঠ উইকেটে এই স্পিনিং অলরাউন্ডারকে সঙ্গে নিয়েই ১৩৪ রানের জুটি গড়ে অসাধারণ এক জয় নিশ্চিত করেছেন তিনি। ৪ উইকেটের অবিশ্বাস্য জয়ে শিরোপার আরও কাছে পৌঁছে গেছে শেখ জামাল। মিরপুর শেরে বাংলা স্টেডিয়ামে শেখ জামালের জয়ের নায়ক ছিলেন উইকেটকিপার ব্যাটার সোহান। শেখ জামালের ক্ষুদে শিক্ষার্থীরা এদিন মিরপুরে এসেছিলেন বড় ভাইদের খেলা দেখতে। সোহান যখন সেঞ্চুরিতে জয় নিশ্চিত করে মাঠ ছাড়ছিলেন, গ্যালারিতে তখন চলছে হর্ষধ্বনি। জবাবে সোহান ব্যাট উঁচিয়ে চলে যান ড্রেসিংরুমে। কেবলমাত্র তখনই নয়, ইনিংসের পুরোটা সময়ই সোহান, সোহান- স্লোগানে মুখরিত ছিল মিরপুরের নির্দিষ্ট গ্যালারি। হবে না কেন, ধ্বংসস্তূপে দাঁড়িয়ে যে একাই অদম্য এক লড়াইয়ের উদাহরণ রেখেছেন। ১০ চার ও ৫ ছয়ে ১১৮ বলে ১৩২ রানে অপরাজিত থেকে মাঠ ছেড়েছেন। শেষ ১২ বলে শেখ জামালের প্রয়োজন ২৩ রান। সোহান ৪৯তম ওভারের প্রথম বলেই মুকিদুল ইসলাম মুগ্ধকে চার আর দ্বিতীয় বলে স্কয়ার লেগে হাওয়ায় ভাসিয়ে মেরেছেন ছয়। ১ বল ডট দিয়ে আবার এক চারের পর টানা দুই ছয়। ছয় বলেই রূপগঞ্জ টাইগার্সের বিপক্ষে চার উইকেটের জয় নিশ্চিত করে সোহান তারপর মাঠ ছাড়েন বিজয়ীর বেশে। অবিশ্বাস্য এক জয় এনে দিয়ে ম্যাচ সেরার পুরস্কারও জেতেন তিনি। যদিও জয়ের পথটা সহজ ছিল না। দ্রুত গতিতে টপ অর্ডার ব্যাটাররা চলে গেলে বিপর্যয়ে পড়ে শেখ জামাল। মোহামেডান থেকে শেখ জামালে খেলতে আসা মুশফিকুর রহিমও বড় ইনিংস খেলতে পারেনি। ক্রিজে থিতু হয়ে ফেরেন ৩২ রান করে। ইমরুল কায়েস ১২, সাইফ হাসান ফেরেন ১১ রানে। রবিউল ইসলাম রানের খাতাই খুলতে পারেননি। আর পারভেজ রসুলের ব্যাট থেকে আসে মাত্র ১ রান। সবমিলিয়ে কঠিন পরিস্থিতিতে পড়া শেখ জামালকে ম্যাচে ফেরায় মিরাজ-সোহানের ১৩৪ রানের অসাধারণ এক জুটি। মিরাজ সাজঘরে ফেরার আগে ৭৪ বলে ৪৩ রান করেছেন।
মুকিদুল ইসলাম মুগ্ধ সর্বোচ্চ দুটি উইকেট নিয়েছেন। এছাড়া ১টি করে উইকেট নেন নাহিদ হাসান, শরিফুল্লাহ ও এনামুল হক জুনিয়র। এর আগে টস হেরে ব্যাট করতে নেমে ৬ উইকেটে ২৪৭ রান করেছে রূপগঞ্জ। সর্বোচ্চ ৭৫ রান করেন জাকির হাসান। এই ব্যাটার ৯৮ বলে ৭ চারে নিজের ইনিংসটি সাজিয়েছেন। এছাড়া ৫০ রান করে অপরাজিত ছিলেন সাদ নাসিম। তার সঙ্গে ১৭ বলে ২৭ রান করে অপরাজিত ছিলেন নাসুম আহমেদ। শেখ জামালের হয়ে ৪৩ রান খরচায় ৩ উইকেট নেন মিরাজ। সানজামুল নেন দুটি এবং পারভেজ রাসুল নেন একটি উইকেট।