শনিবার, ০৫ অক্টোবর ২০২৪, ০৫:১৭ অপরাহ্ন

রাজনৈতিক পরিচয়ের কারণে তিনি প্রধান আসামি 

খবরপত্র ডেস্ক:
  • আপডেট সময় শুক্রবার, ২২ এপ্রিল, ২০২২

আইনজীবী মকবুল হোসেনের দাবি

ব্যবসায়ীদের ক্ষতিসহ দু’জনের প্রাণ গেছে ঢাকার নিউ মার্কেট এলাকায় সংঘাতের ঘটনায়। বন্ধ ছিল ওই এলাকার দোকানপাট। তবে গত বৃৃহস্পতিবার থেকে খুলে দেয়া হয় দোকানপাট। এদিকে রক্তক্ষয়ী সংঘাতে দুদিন নিউ মার্কেট এলাকায় অচলাবস্থার পর বুধবার রাতে যখন সমঝোতা বৈঠকের তোড়জোড় চলছিল, তখন রাত ৯টার পর তিনটি মামলা হয়। মামলার একটিতেই আসামির তালিকায় ২৪ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। সেই মামলাটিতে ১ নম্বরে রয়েছে আইনজীবী মকবুল হোসেনের নাম। যে দোকান দুটিতে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছিল সেগুলোর মালিক মকবুল হোসেন। ফাস্ট ফুডের এই দোকান দুটি হল ‘ক্যাপিটাল’ ও ‘ওয়েলকাম’। তবে কোনো দোকানই নিজে চালান না মকবুল। রফিকুল ইসলাম ও শহিদুল ইসলাম নামে দুজনকে ভাড়া দিয়ে রেখেছেন দোকান দুটি। রফিকুল ও শহিদুল আবার পরস্পরের আত্মীয়। এদিকে নিউ মার্কেট থানা বিএনপির সাবেক সভাপতি মকবুল দাবি করছেন, সরকারবিরোধী রাজনৈতিক পরিচয়ের কারণে তাকে মামলার আসামি করা হয়েছে।
অন্যদিকে ঢাকা মহানগর পুলিশের নিউ মার্কেট জোনের অতিরিক্ত কমিশনার শাহেন শাহ বলছেন, দলীয় পরিচয় দেখে নয়, গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে মকবুলকে আসামি করা হয়েছে। নিউ মার্কেট থানায় দায়ের করা তিনটি মামলার মধ্যে দুটি করেছে পুলিশ। একটি করেছেন সংঘর্ষে প্রাণ হারানো নাহিদ হাসানের চাচা মো. সাঈদ। হত্যার অভিযোগে করা এই মামলায় আসামির তালিকায় কারও নাম উল্লেখ করা হয়নি। সংঘর্ষের সময় হাতবোমা ফাটানোর ঘটনাকে কেন্দ্র করে বিস্ফোরক আইনে মামলাটি করেছেন নিউ মার্কেট থানার এসআই মেহেদী হাসান। এতে আসামি হিসেবে ১৫০ থেকে ২০০ জনের কথা বলা হলেও সবাই অজ্ঞাতনামা।

দাঙ্গা-হাঙ্গামা, জ্বালাও-পোড়াও, পুলিশের কাজের বাধা দেয়ার অভিযোগে নিউ মার্কেট থানার পরিদর্শক (তদন্ত) ইয়ামিন কবির যে মামলা করেছেন, তাতেই শুধু আসামির তালিকায় ২৪ জনের নাম উল্লেখ করা হয়। আর অজ্ঞাতনামা আসামি হিসেবে ২০০ থেকে ৩০০ জন ব্যবসায়ী ও দোকানকর্মী এবং ৬০০-৭০০ কলেজ শিক্ষার্থীর কথা বলা হয়েছে এজাহারে। ২৪ জন আসামির মধ্যে মকবুল ছাড়াও রয়েছেন- আমির হোসেন আলমগীর, মিজান, টিপু হাজি জাহাঙ্গীর হোসেন পাটোয়ারী, হাসান জাহাঙ্গীর মিঠু, হারুন হাওলাদার, শাহ আলম শন্টু, শহিদুল ইসলাম শহিদ, জাপানি ফারুক, মিজান বেপারী, আসিফ, রহমত, সুমন, জসিম, বিল্লাল, হারুন, তোহা, মনির, বাচ্চু, জুলহাস, মিঠু, মিন্টু ও বাবুল। মকবুল ছাড়া অন্য কারও ব্যক্তিগত কোনো পরিচয় জানা যায়নি। অ্যাডভোকেট মকবুল জানান, গত ছয় মাস হল আমি নিউ মার্কেট এলাকায় যান না। ধানম-ির বাসা থেকে উচ্চ আদালতে যান, সেখান থেকে পল্টনে চেম্বারে যান। তিনি বলেন, ‘১৫ বছর ধরে ওই দুটি দোকান রফিকুল ও শহিদুলকে ভাড়া দেয়া। আর এখন তাদের দুই কর্মচারীর মারামারিতে আমি আসামি!’ এজাহারে ২৪ জনের নাম উল্লেখের বিষয়ে নিউ মার্কেট থানার ওসি স ম কাইয়ুম বলেন, ‘যাদের নাম এসেছে, উসকানিদাতা হিসেবে এসেছে।’ শিক্ষার্থীদের সঙ্গে নিউ মার্কেটের দোকানকর্মীদের রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়েছিল গত সোমবার রাতে, ‘ক্যাপিটাল হোস্টেলে’ ঢাকা কলেজের কয়েকজন ছাত্র মারধরের শিকার হওয়ার পর। গত মঙ্গলবার প্রথম প্রহর থেকে রাত আড়াইটা পর্যন্ত সংঘর্ষ চলার পর পুলিশ থামিয়েছিল। কিন্তু সকালে বাধে ব্যাপক সংঘর্ষ, তাতে ঢাকা কলেজের শিক্ষার্থীদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়িয়ে পড়ে ওই এলাকার বিপণি বিতানগুলোর দোকানকর্মীদের পাশপাশি হকাররা। গত মঙ্গলবার দিনভর চলা সংঘর্ষের কারণে সেখানে কোনো দোকান খোলেনি, মিরপুর সড়কও ছিল বন্ধ। সংঘর্ষে আহতদের মধ্যে নাহিদ হাসান নামে একজন ডেলিভারিম্যান সেদিনই মারা যান, মোরসালিন নামে এক দোকানকর্মীর মৃত্যু হয় গত বৃহস্পতিবার। গত মঙ্গলবারের পর উত্তেজনা চলায় ঈদের বাজারে বুধবারও সব বিপণি বিতানের দোকান ছিল বন্ধ। ঢাকা কলেজ বন্ধ ঘোষণা করলেও ছাত্ররা কলেজে অবস্থান নিয়ে ছিল। এরপর গত বৃহস্পতিবার প্রথম প্রহরে শিক্ষা বিভাগের কর্মকর্তা ও পুলিশের মধ্যস্থতায় বৈঠকে সমঝোতা হওয়ার পর সকালে সব দোকান খোলে।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com