মুন্সীগঞ্জ সদর থেকে নেশায় বুদ হয়ে প্রাইভেট কার নিয়ে ঘুরতে বের হয়ে অর্ধ নির্মিত ব্রিজ থেকে নদী পড়ে দুই কিশোরের মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার (১৪ মে) দিনগত রাত সাড়ে ৩টার দিকে উপজেলার পুরাবাজার প্রবেশের ব্রিজে এ দুর্ঘটনা ঘটে। এ সময় অপর একজন আহত হয়েছে। নিহতরা হলেন উপজেলার মুন্সীগঞ্জ উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেণীর ছাত্র মো. মানিকের ছেলে সাইফুল ইসলাম জিসান(১৭) ও সদরের উত্তর চরমশুরা এলাকার শরফতউল্লাহর ছেলে ফাহিম(১৫)। আহতের নাম জিহাদ। তারা মুন্সীগঞ্জ হাই স্কুলের শিক্ষার্থী। তারা তিনজনই বন্ধু ছিলেন। স্থানীয় সূত্র থেকে জানা যায়, বৃহস্পতিবার ও শুক্রবার বিবাহের অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে গায়ে হলুদের দিন এবং বিয়ের দিন রাতে প্রচন্ড রকমের মদ্য পান করে তিন বন্ধু। সাউন্ড বক্স বাজিয়ে মদ খেয়ে নাচানাচিও করতে দেখা গেছে রাতে। প্রাইভেট কারের ভিতরেও মদের বোতল নিয়ে মদ্য পান করেছে তিন বন্ধু। মদের নেশায় বুদ হয়েই অর্ধ নির্মিত ব্রিজে গাড়ি চালিয়ে উঠে নদীতে পড়ে যায় গাড়ি নিয়ে। মুন্সীরহাট কবর স্থানের পাশেই একটি মাঠে বিয়ের গায়ে হলুদ ও সাউন্ড সিস্টেম এনে মদ, বিয়ারের আয়োজন করা হয়। পুলিশ প্রশাসন মাদকের বিরুদ্ধে অভিযান না চালানোর ফলে মাদকে সয়লাব হয়ে গেছে মুন্সিরহাট থেকে কলেজ পর্যন্ত। দিনে রাতে সব সময় বিক্রি হয় গাজা, ইয়াবা, মদ এবং ফেনসিডিল। জিসানের বোন ফাহিমা আক্তার রুপা জানান, জিসান তার দুই বন্ধু ফাহিম ও জিহাদকে নিয়ে রাতের গাড়ি চালাতে গিয়েছিল। পুলিশ সূত্রে জানা যায়, শুক্রবার গভীর রাতে বাড়ি থেকে প্রাইভেটকার নিয়ে জেলা সদর থেকে টঙ্গীবাড়ী উপজেলার দীঘিরপাড়ের অভিমুখে যাচ্ছিলো তিন বন্ধু। পথে পুরাবাজারের ঝুঁকিপূর্ণ বেইলি সেতু ভেঙে নতুন করে নির্মাণাধীন। ফলে পাশে নতুন সেতু দিয়ে চলাচলের রাস্তা করা হয়েছে। কিন্তু দ্রুত গতির গাড়িটি নতুন সেতু দিয়ে না গিয়ে নির্মাণাধীন বেইলি সেতু দিয়ে অতিক্রম করার সময় খালের পানিতে পড়ে যায়। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল থেকে তিনজনকে উদ্ধার করে মুন্সিগঞ্জ জেনারেল হাসাপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক দুজনকে মৃত ঘোষণা করেন। টঙ্গীবাড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সোয়েব আলী জানান, ভোর সাড়ে ৩টার দিকে আলদীতে একটি নির্মাণাধীন সেতু থেকে গাড়িটি খালে পড়ে গেলে ঘটনাস্থলেই দুজনের মৃত্যু হয়। এ সময় আহত জিহাদকে উদ্ধার করা হয়। তাকে স্থানীয় হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে। এদিকে নিহতদের স্বজনদের আহাজারিতে হাসপাতালে তৈরি হয় শোকাবহ এক পরিবেশ। স্বজনরা বলছেন নির্মাণাধীন ভাঙা সেতুতে সতর্কবার্তা থাকলে হয়তো এ দুর্ঘটনা এড়ানো সম্ভব হতো।