আসন্ন ঈদুল আজহা উপলক্ষে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় ১৭টি অস্থায়ী পশুর হাট বসানোর প্রস্তুতি নিচ্ছে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন। এর মধ্যে দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিসি) এলাকায় ১০টি ও উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) এলাকায় সাতটি পশুর হাট বসবে। এরই মধ্যে এসব হাট ইজারায় দরপত্র আহ্বান করা হয়েছে। এদিকে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের উদ্যোগে কোরবানির পশু বিক্রির জন্য অনলাইন প্লাটফর্ম ‘ডিএনসিসি ডিজিটাল হাট’ ফরমরঃধষযধধঃ.হবঃ চালুর প্রস্তুতি চলছে। ডিএনসিসির সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, করোনা মহামারির কারণে গত দুই বছর অনলাইন হাট জনপ্রিয় হয়েছিল।
গত ২০ এপ্রিল রাজধানীর পৃথক ১০টি স্থানে অস্থায়ী পশুর হাটের দরপত্র আহ্বান করে ডিএসসিসি। এর মধ্যে সরকারি দাম এক কোটি ২২ লাখ ৬০০ টাকায় উত্তর শাহজাহানপুর খিলগাঁও রেলগেট বাজার মৈত্রী সংঘের ক্লাব সংলগ্ন আশপাশের খালি জায়গা, আর এক কোটি ৫২ লাখ ৬৯ হাজার ৩০০ টাকায় হাজারীবাগ এলাকায় ইনস্টিটিউট অব লেদার টেকনোলজি মাঠ সংলগ্ন উন্মুক্ত এলাকা, এছাড়া এক কোটি ৩৭ লাখ ৮১ হাজার ৭৬৭ টাকায় পোস্তগোলা শ্মশানঘাট সংলগ্ন আশপাশের খালি জায়গায় হাট ইজারায় দরপত্র চাওয়া হয়েছে। অপরদিকে এক কোটি ৮৭ লাখ ৬৭ হাজার ৩০০ টাকায় মেরাদিয়া বাজার সংলগ্ন আশপাশের খালি জায়গা, দুই কোটি ৬৭ লাখ ১২ হাজার টাকায় লিটল ফ্রেন্ডস ক্লাব সংলগ্ন খালি জায়গা ও কমলাপুর স্টেডিয়াম সংলগ্ন বিশ্বরোডের আশপাশের খালি জায়গা, দুই কোটি ৮৭ লাখ ২৬ হাজার ৮৩৩ টাকায় দনিয়া কলেজ মাঠ সংলগ্ন খালি জায়গা, দুই কোটি ৭০ লাখ ৩১ হাজার ৬০ টাকায় ধোলাইখাল ট্রাক টার্মিনাল সংলগ্ন উন্মুক্ত জায়গা, ২১ লাখ ৪৬ হাজার ৫০৩ টাকায় আমুলিয়া মডেল টাউনের আশপাশের খালি জায়গা, ৩৮ লাখ ২৬ হাজার ৬০০ টাকায় রহমতগঞ্জ ক্লাব সংলগ্ন আশপাশের খালি জায়গা, ৫৪ লাখ ৬ হাজার টাকায় শ্যামপুর-কদমতলী ট্রাকস্ট্যান্ড সংলগ্ন খালি জায়গায় হাট ইজারায় দরপত্র চাওয়া হয়। এর বাইরে ডেমরার সারুলিয়ায় ডিএসসিসির একটি স্থায়ী হাট রয়েছে। ঈদে সেখানেও বসবে পশুর হাট। ডিএসসিসির সম্পত্তি বিভাগ সূত্র জানায়, গত ১১ মে প্রথম পর্যায়ে দরপত্র বিক্রির শেষ দিন ছিল। পরদিন ১২ মে দরপত্র জমা দেওয়া এবং দরপত্র বাক্স খোলা হয়। এর মধ্যে ছয়টি হাট সরকারি নির্ধারিত দরের চেয়ে বেশি মূল্য দিতে সক্ষম হয়েছে। বাকি হাটগুলোর জন্য আবার ২৫ মে দরপত্র বিক্রি হবে। এ বিষয়ে জানতে সোমবার (১৬ মে) ডিএসসিসির প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা রাসেল সাবরিনের মুঠোফোনে একাধিকবার কল দিলেও তিনি রিসিভ করেনি। গত ১৩ এপ্রিল ডিএনসিসি এলাকায় সাতটি পশুর হাট ইজারায় দরপত্র আহ্বান করে সংস্থাটির প্রধান সম্পত্তি কর্মকর্তা মো. মোজাম্মেল হক। দরপত্র অনুযায়ী সরকারি মূল্য ১০ কোটি ২৪ লাখ ৬ হাজার ৬৬৭ টাকায় ভাটারা (সাইদনগর) পশুর হাট, ১৯ লাখ ৫২ হাজার ৫২০ টাকায় কাওলা শিয়ালডাঙ্গা সংলগ্ন খালি জায়গা, এক কোটি ৪৯ লাখ ৩৯ হাজার ৯৪৪ টাকায় মিরপুর সেকশন ৬ ইস্টার্ন হাউজিংয়ের খালি জায়গা, ২৬ লাখ ৬০ হাজার ৬০০ টাকায় মোহাম্মদপুর বছিলায় ৪০ ফুট রাস্তা সংলগ্ন খালি জায়গা, ৪৬ লাখ ৬৬ হাজার ১২০ টাকায় উত্তরা ১৭ নম্বর সেক্টর এলাকায় অবস্থিত বৃন্দাবন থেকে উত্তর দিকে বিজিএমইএ পর্যন্ত খালি জায়গা, এক কোটি ৪৭ লাখ ৮৭ হাজার টাকায় বাড্ডা ইস্টার্ন হাউজিং ব্লক-ই থেকে এইচ পর্যন্ত এলাকার খালি জায়গা এবং দুই কোটি ১২ হাজার টাকায় তিনশ ফিট সড়ক সংলগ্ন উত্তর পাশের সালাম স্টিল-যমুনা হাউজিং কোম্পানির খালি জায়গায় দরপত্র চাওয়া হয়।
এর বাইরে গাবতলীতে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের একটি স্থায়ী হাট রয়েছে। এই হাটেও বছরের অন্য সময় পশু বিক্রি হবে। ডিএনসিসি সূত্র জানায়, গত ২৩ এপ্রিল এই দরপত্রের প্রথম দফায় সিডিউল বিক্রি শেষ হয়। ২৪ এপ্রিল শেষ হয় দরপত্র জমা দেওয়ার সময়। ওই দিনই খোলা হয় দরপত্র বাক্স। কিন্তু কয়টি হাট সরকার নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে বেশি দরে জমা হয়েছে বা হয়নি তা এখনো প্রকাশ করেনি হাট ব্যবস্থাপনা কমিটি। তবে যেসব হাট নির্ধারিত মূল্যের কম হয়েছে, সেগুলোতে আগামী ৮ জুন দ্বিতীয় দফায় সিডিউল বিক্রি হবে।
জানতে চাইলে ডিএনসিসির জনসংযোগ কর্মকর্তা মকবুল হোসাইন জাগো নিউজকে বলেন, ডিএনসিসির সাতটি হাটেই পর্যাপ্ত দরপত্র জমা পরেছে। কিন্তু কোনো ইজারাদারকেই হাটের কার্যাদেশ দেওয়া হয়নি। গাবতলী হাটে নিয়মিতভাবেই পশু বেচাকেনা চলবে।