দক্ষিণ এশিয়ার অন্যতম মৎস্য প্রজনন ক্ষেত্র বঙ্গবন্ধু মৎস্য হ্যারিটেজ চট্টগ্রামের হালদা নদীতে ডিম ছেড়েছে কার্প জাতীয় মা মাছ। মঙ্গলবার মধ্য রাত ১২ টা থেকে হালদা নদীর ভাটার শেষ ও জোয়ারের মধ্য থেকে পর্যন্ত নদীর নয়াহাট, মাছুয়াঘোনাবাঁক, নাপিতের ঘাটা, আমতুয়া, রামদাশ হাট অংশে ডিম পাওয়া গেছে ডিম সংগ্রহকারীদের জালে। সরেজমিনে দেখা গেছে, হালদা নদী জুড়ে শত শত ডিমসংগ্রহকারী ডিম ধরার নৌকা, বাঁশের ভোরকা, বালতিসহ বিভিন্ন সরঞ্জাম নিয়ে ডিম সংগ্রহে ব্যস্ত। সংগ্রহকারীরা তা বালতি, বাঁশের ছাঙ্কসহ সুবিধামত পাত্রে ডিম সংরক্ষণ করছেন। নৌকা প্রতি গড়ে ৪-৫ বালতি ডিম সংগ্রহ করেছে। তবে এবারো আশানুরুপ ডিম না পাওয়ায় ডিম সংগ্রহকারীরা হতাশ। পুরোদমে ডিম না ছেড়ে এভাবে দফায় দফায় ছাড়লে ডিম সংগ্রহকারীরা লোকসানের শিকার হন। নৌকাসহ বিভিন্ন সরঞ্জামের ভাড়া দ্বিগুন হয়। পর্যাপ্ত বৃষ্টি, পাহাড়ি ঢল না আসায় মা মাছ পুরোদমে ডিম ছাড়ছেন না। তবে এই দফায় সংগৃহিত ডিম হ্যাচারীতে সংরক্ষণ করার আশা ব্যক্ত করেন অধিকাংশ ডিম সংগ্রহকারী। ডিম সংগ্রহকারী মোঃ শফি, মোঃ হোসেন,কামাল সওদাগর, মোঃ ইসমাইল, তৈয়্যব, নুরুল আলম বলেন, আশানুরুপ ডিম পাওয়া যায়নি। মৎস্য সম্প্রসারণ কর্মকর্তা মেহেরুন্নেছা জানান, সরকারি হ্যাচারীর কুয়ায় অনেকে ডিম সংরক্ষণ করছেন তবে পরিমানে অনেক কম। সিনিয়র উপজেলা মৎস্য কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) পীযুষ প্রভাকর বলেন হালদা নদীতে এইবার যে পরিমাণ ডিম পাওয়ার আশা করেছি সেই পরিমাণ ডিম পাওয়ার যায় নি।কারণ এই বার বজ্রসহ বৃষ্টি না হওয়ায় নদীর পরিবেশ অনুকূলে না থাকায় মা মাছ ডিম দিয়েছে অনেক কম। সরকারি হ্যাচারী ব্যব¯’াপনা কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ শাহিদুল আলম বলেন,এইবার আমরা যা আশা করেছি সেই পরিমাণ ডিম পাওয়া যায়নি কারণ বজ্রসহ বৃষ্টি হয়নি,সামনে পূর্নিমায় হয়তো আশাকরা যায়। ডিম ধরার মৌসুম শুরু হওয়ার পর থেকেই নদীতে অবস্থান করছি।এদিকে প্রতিদিনই হালদা পাড়ের কয়েকশত ডিম সংগ্রহকারী শত শত নৌকা, বাঁশের ভোরকাসহ ডিম সংগ্রহের সরঞ্জাম নিয়ে নদীতে অবস্থান করেছেন।সোমবার দুপুরে অনেককেই ডিম সংগ্রহকালে নৌকা, বাঁশের ভোরকায় দুপুরের খাবার খেতে দেখা গেছে। পিএইচডি ডিগ্রীধারী হালদা গবেষক ড. মো. শফিকুল ইসলাম বলেন হালদা নদীতে বর্তমানে যে পরিমাণ ডিম পাওয়া গেছে তা আশানুরূপ অনেক কম, যেহেতু এখনো বজ্রপাতসহ বৃষ্টি ও পাহাড়ি ঢল হয়নি তাই মা মাছ ডিম ছাড়ার অনুকুল পরিবেশ পায়নি। তবে পরিবেশ অনুকুলে থাকলে এখনো পর্যন্ত ডিম ছাড়ার সময় রয়েছে। তা না হলে পরবর্তী (২৮-৩১) মে অথবা (১৩-৩) জুন ডিম দেওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। বর্তমানে হালদা নদীর পানির গুনগত মান স্বাভাবিক অর্থাৎ পানির বিভিন্ন ভৌত ও রাসায়নিক প্যারামিটারের মান আদর্শ মানের মধ্যে রয়েছে। এবং হালদা নদীর পানিতে লবনাক্ততার উপ¯িহতি পাওয়া যায়নি। সুতরাং হালদার পানি মা মাছের ডিম ছাড়ার অনুকুলে।