দেশের কোনো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে সহাবস্থান নেই দাবি করে গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক সিনিয়র অ্যাডভোকেট সুব্রত চৌধুরী বলেছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে আবাসিক থাকতে হলে সরকারি ছাত্র সংগঠনের মিটিং-মিছিলে জোর করে নেওয়া হয়। চর দখলের মতো লাঠিয়াল বাহিনী তৈরি করে সব শিক্ষাঙ্গনে শিক্ষার পরিবেশ ব্যাহত করেছে সরকার।
বৃহস্পতিবার (২ জুন) বিকেলে গণফোরাম সম্পাদক পরিষদের জরুরি সভায় তিনি এসব কথা বলেন। সভায় সুব্রত চৌধুরী বলেন, বিরোধী মতের ওপর হামলা-মামলা, অত্যাচার-নিপীড়ন, মিছিল-মিটিং ও সভা-সমাবেশে বাধা দিয়ে বর্তমান সরকার অতীতের সব স্বৈরাচার ফ্যাসিস্টদের হার মানিয়েছে। বিচার বিভাগ ও প্রশাসনকে নিয়ন্ত্রণ করে বিরোধী মতকে কোণঠাসা করে যে নোংরা রাজনীতি করছেন তার হিসাব জনগণকে দিতে হবে। কেউ অপকর্ম করে রক্ষা পায়নি, আপনারাও পাবেন না। জনতার আদালতে বিচার হবে। গণফোরাম সম্পাদক পরিষদের জরুরি সভায় দলটির সভাপতি মোস্তফা মোহসীন মন্টু বলেন, বর্তমান সরকারের ব্যর্থতা পুরোপুরিভাবে প্রমাণিত হয় ডলারের দাম নিয়ন্ত্রণের বিষয়ে। এক্ষেত্রে যে সরকার দিশেহারা তা অর্থমন্ত্রীর দিশাহীন বক্তব্যে স্পষ্ট। তিনি বলেন, হঠাৎ করে চালের অস্বাভাবিক মূল্য বৃদ্ধিসহ নিত্য প্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতির ফলে জনজীবন বিপর্যস্ত, যা আমরা বারবার বলে আসছি। এই সরকার বাজার নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না। শুধু বাজার নিয়ন্ত্রণে নয় সব সেক্টরে ব্যর্থতার ষোলকলা পূর্ণ করেছে। রাতের ভোটের সরকারের সফলতা শুধু চুরি, দুর্নীতি ও লুটপাটে।
এশিয়ার ২৫০ বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকায় আমাদের কোনো বিশ্ববিদ্যালয় নেই জানিয়ে গণফোরাম সভাপতি বলেন, শিক্ষাঙ্গন অসাধু শিক্ষকদের তত্ত্বাবধানে। তারা অনৈতিক অর্থ লেনদেনে ব্যস্ত, চাঁদপুরের ঘটনা তার অন্যতম উদাহরণ। সংস্কৃতি, চিকিৎসা ও অর্থনীতি সহ রাষ্ট্রের শক্তিশালী ব্যবস্থা ধ্বংসের দ্বারপ্রান্তে রয়েছে। উন্নয়নের নামে অসহনীয় ঋণের বোঝা জনগণের কাঁধে চাপিয়ে দিচ্ছে। একটা বাসযোগ্য কল্যাণমুখী বাংলাদেশ গড়ার পরিকল্পনার পরিবর্তে অবৈধভাবে ক্ষমতা দখল রাখার নীল নকশায় ব্যস্ত সরকার।
তিনি বলেন, মুক্তিযুদ্ধের অঙ্গীকার- সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক সুবিচার বর্তমানে পুরোপুরিভাবে অনুপস্থিত। এগুলো ফিরিয়ে আনতে গণফোরাম সমমনা রাজনৈতিক দল ও জনতার ঐক্য গড়ে তুলবে। একইসঙ্গে সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে এই সরকারকে বিদায় করে জনগণের শাসন প্রতিষ্ঠায় সংগ্রাম অব্যাহত রাখবে গণফোরাম। বৈঠকে আরও উপস্থিত ছিলেন- গণফোরামের নির্বাহী সভাপতি মহিউদ্দিন আব্দুল কাদের, সিনিয়র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আইয়ুব খান ফারুক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক লতিফুল বারী হামিম, ঢাকা বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক রওশন ইয়াজদানী, তথ্য ও গণমাধ্যম সম্পাদক মুহাম্মদ উল্লাহ মধু, আইন সম্পাদক অ্যাডভোকেট বিশ্বজিৎ গাঙ্গুলী, যুব ও ক্রীড়া সম্পাদক তাজুল ইসলাম, মহিলা সম্পাদক নিলুফার ইয়াসমিন শাপলা, ছাত্র সম্পাদক সানজিদ রহমান শুভ প্রমুখ।