বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ০৩:২৭ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম ::
ব্যবসায়ীদের সরকারের সঙ্গে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করার আহ্বান অধ্যাপক ইউনূসের রাষ্ট্রপতির কাছে সুপ্রিম কোর্টের বার্ষিক প্রতিবেদন পেশ প্রধান বিচারপতির দেশমাতৃকার বিরুদ্ধে দেশী-বিদেশী চক্রান্ত থেমে নেই: তারেক রহমান তুর্কি রাষ্ট্রদূতের সাথে জামায়াতের সৌজন্য সাক্ষাৎ চিন্ময় সমর্থক জঙ্গীদের হামলায় আইনজীবী সাইফুল ইসলাম নিহত অভ্যন্তরীণ বিষয় হস্তক্ষেপ: চিন্ময় ইস্যুতে ভারতের উদ্যোগ শাপলা চত্বরে গণহত্যায় হাসিনাসহ ৫০ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগ আমরা চাই না ছাত্র ভাইদের কঠোর হয়ে দমন করতে : স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা রাষ্ট্রদ্রোহের ঘটনায় যুক্ত থাকলে ছাড় দেয়া হবে না : আসিফ মাহমুদ মানুষ কেন তাদের ওপর বিক্ষুব্ধ, গণমাধ্যমের তা স্পষ্ট করা উচিত : নাহিদ ইসলাম

দেশে নতুন দরিদ্র ২১ লাখ

খবরপত্র ডেস্ক:
  • আপডেট সময় রবিবার, ৫ জুন, ২০২২

দ্রব্যমূল্য বাড়ায় দেশে নতুন করে ২১ লাখ মানুষ দরিদ্র হয়েছেন। বেসরকারি সংগঠন পাওয়ার অ্যান্ড পার্টিসিপেশন রিসার্চ সেন্টার (পিপিআরসি) এবং ব্র্যাক ইনস্টিটিউট অব গভর্ন্যান্স স্টাডিজের (বিআইজিডি) গবেষণায় উঠে এসেছে এ তথ্য।
গতকাল রবিবার (৫ জুন) এক ভার্চুয়াল সভায় জরিপের ফল তুলে ধরা হয়। পিপিআরসির নির্বাহী চেয়ারম্যান হোসেন জিল্লুর রহমান বলেন, ‘করোনার পর দেশ অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়ায় আছে। তবে কাঙ্ক্ষিত কর্মসংস্থান হচ্ছে না। দরিদ্ররা টিকে থাকার চেষ্টা করছে। খাওয়া কমিয়ে। কাজ বাড়িয়েছে।’ ‘মূল্যস্ফীতি, খাপ খাওয়ানো ও পুনরুদ্ধারের প্রতিবন্ধকতা’ শীর্ষক গবেষণা-জরিপের কাজ চলে গত ১৪ থেকে ২১ মে পর্যন্ত। জরিপে অংশ নেয় গ্রাম ও শহরের ৩ হাজার ৯১০ জন।
জরিপের তথ্যানুযায়ী, মানুষের আয় এখন করোনার আগের সময়ের চেয়ে গড়ে ১৫ শতাংশ কম। শহরে এ হার ২৫ শতাংশ। গ্রামে ১ শতাংশ।
জরিপে এটা স্পষ্ট যে, শহরের মানুষেরই আয় কমেছে। আবার শুধু দ্রব্যের মূল্যবৃদ্ধির কারণে শহরের মানুষের আয় কমার হার ৮ ও গ্রামে ৩ শতাংশ।
বিআইজিডির পরিচালক ইমরান মতিন বলেন, ২০১৭ সালে দরিদ্র মানুষের মাথাপিছু আয় ছিল ১১৭ টাকা। প্রথম লকডাউনের পর তা কমে হয় ৬৫ টাকা। পরে তা বেড়ে ১০৩ টাকা হয়। চলতি বছরের জানুয়ারিতে বেড়ে হয় ১০৫ টাকা। এখন আবার নেমে ৯৯ টাকা হয়েছে। চলতি বছরের জানুয়ারি থেকে মে পর্যন্ত ৬ শতাংশ আয় কমেছে। দেখা গেছে, গ্রাম ও শহরের কৃষি ও পরিবহন খাতে জড়িতরা পরিবর্তিত পরিস্থিতির সঙ্গে খাপ খাইয়ে নিতে পেরেছেন। কিন্তু রিকশাচালক, কারখানা শ্রমিক ও গৃহকর্মীর ওপর এর প্রভাব মারাত্মক।
জরিপে উল্লেখ করা হয়, দ্রব্যমূল্যর কারণে নারীরা নতুন করে কর্মক্ষেত্রে ঢোকার চেষ্টা করছেন। তবে করোনাকালের কাজ হারানো ৩৬ শতাংশ নারী এখনও কর্মক্ষেত্রে ঢুকতে পারেননি।
জরিপের তথ্য বলছে, ২৭ শতাংশ পরিবার এখন আগের চেয়ে কম চাল কিনছে। নি¤œমানের চাল কিনছে ৩৬ শতাংশ পরিবার।
আরও দেখা গেছে, ৪৭ শতাংশ মানুষ দুধ কেনা কমিয়েছে। একেবারে বাদ দিয়েছে ২০ শতাংশ পরিবার। ৭৩ শতাংশ কমিয়েছে মাছ কেনার পরিমাণ।
জরিপে দেখা যায়, মাসে অন্তত একদিন শহরের বস্তিবাসীর ৫ শতাংশ সারাদিন অভুক্ত কাটিয়েছে। গ্রামে এ অবস্থা ৩ শতাংশ। অন্তত একবেলা কম খেয়েছে, এমন পরিবারের সংখ্যা শহরে ২১ এবং গ্রামে ১৩ শতাংশ।
জিনিসপত্রের দাম বাড়ার পেছনে নানা কারণ তুলে ধরেছে মানুষ। এর মধ্যে সর্বোচ্চ ৬২ শতাংশ মনে করছে দুর্বল ব্যবস্থাপনার জন্যই এমনটা ঘটছে।
পাশাপাশি সরবরাহের ঘাটতি ও জনসংখ্যা বৃদ্ধিকেও দায়ী করেছেন অনেকে। পরিস্থিতি থেকে উত্তরণের ব্যবস্থা হিসেবে ৬৯ ভাগ মনে করেন, সুশাসন ফিরিয়ে আনতে হবে। সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচির বিস্তারের কথা বলেছে ৩৬ শতাংশ। আর্থিক অনটনের বিরুদ্ধে লড়তে মানুষ কী উপায় বেছে নিচ্ছে, তার চিত্রও উঠে এসেছে জরিপে। এতে গত বছরের আগস্টের সঙ্গে সাম্প্রতিক জরিপের তুলনা করা হয়। দেখা যায়, আগস্টে ৯১ ভাগ মানুষ নিজের আয়ের ওপর নির্ভর করে চলতো। এখন তা বেড়ে হয়েছে ৯৩ শতাংশ। আগে দোকানে বাকি রেখে বা ঋণ নেওয়ার সুযোগ থাকলেও এখন তা কমেছে।
আগস্টে ১৭ শতাংশ মানুষ ঋণ নিয়ে চলতে পারতো। এখন তা নেমে দাঁড়িয়েছে ৭ শতাংশ। মানুষ এখন ঋণ নিতেও চায় না। কারণ হিসেবে বলেছে পরিশোধের অনিশ্চয়তার কথা। বিশেষ করে বস্তিবাসীর ৩১ শতাংশের ঋণ দরকার হলেও তারা তা নিতে পারছে না। ৫১ শতাংশ বলেছে, তারা ঋণ করতে চায় না।খাদ্যবহির্ভূত নানা খাতেও মানুষ ব্যয় কমিয়ে দিচ্ছে। ১৫ শতাংশ মানুষ সন্তানদের পেছনে ব্যয় কমিয়েছে। বিশেষ করে টিউশনি পড়ানো বন্ধ করেছে ১০ শতাংশ। ওষুধ কেনা কমিয়েছে ১১ শতাংশ।
ইমরান মতিন বলেন, ‘সন্তানের পড়াশোনার ব্যয় কমানো এবং ওষুধ না কেনার মতো উদ্যোগের বড় ধরনের নেতিবাচক প্রভাব আছে।’
দেখা গেছে, গত বছরের আগস্টে দারিদ্র্যসীমার ওপরে থাকা ১৮ শতাংশ মানুষ ন্যায্যমূল্যের চাল কিনতো। এখন ২৪ শতাংশে দাঁড়িয়েছে এ সংখ্যা। এই গোষ্ঠীর মানুষের মধ্যে গ্রামে ১০ টাকার চাল কেনার মানুষের সংখ্যা আগস্টে ছিল ৪ শতাংশ। এটি মে মাসে এসে দাঁড়িয়েছে ১০ শতাংশে। আগস্টে ১৫ শতাংশ মানুষ টিসিবির পণ্য কিনতো। মে মাসে এ হার দাঁড়িয়েছে ৩১ শতাংশে।জরিপে আরও দেখা গেছে, করোনার আগে শহরের ৬ শতাংশ মানুষ কর্মহীন ছিল। এখন ১০ শতাংশ। গ্রামে করোনার আগে কর্মহীন ছিল ৮ শতাংশ। এখন ৯ শতাংশ।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com