হাজার বছরের শ্রেষ্ট বাঙ্গালী বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বুদ্ধিমতি কন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে নারীরা আজ সফলতার পথে অনেকটা এগিয়ে গিয়েছে। পুরুষের পাশাপাশি নারীরাও বিভিন্ন ক্ষেত্রে সফলতা অর্জন করছে। এমনই একজন সফল নারী পাঁচবিবি উপজেলার বাগজানা ইউনিয়নের রেনুকা মার্ডী। রেনুকা মার্ডী ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠী পরিবারে জন্ম করলেও ছোটবেলা থেকেই অসহায়, অবহেলিত ও নির্যাতিত মানুষের পাশে দাঁড়ানোই তার একটি প্রবল ইচ্ছা। কারো বিপদ দেখলে সেখানে সহযোগীতা করতে তার ভাল লাগত। এভাবেই সীমান্তবর্তী অজপাড়া গাঁ থেতে মানুষের সুখ দুঃখের মাঝে তিনি বেরে ওঠেন। কোথাও প্রতিবেশীদের উপর নির্যাতন ও নারী নির্যাতন দেখলেই ছুটে গিয়েছেন, হয়েছেন প্রতিবাদ মুখর। তার বাবা পেশায় একজন বাঁশ জাত দ্রব্য নির্মাতা। বাঁশের ডালি-চাঙ্গারী বানিয়ে অভাব অনটনের পরিবারে সে বড় হয়েছে। যখন তার প্রতিবেশী বান্ধবীরা অভাবের কারণে পড়াশুনা চালিযে যেতে না পেড়ে বিয়ের পিড়িতে বসেছে, ঠিক সেই সময়ও রেকুনা মার্ডী তার অদম্য ইচ্ছার জোড়ে ¯œাতক পর্যন্ত পড়াশুনা শেষ করে সে কৃতকার্য হয়েছে। বিভিন্ন জায়গায় চাকুরীর আশায় আবেদন কররেও অর্থে অভাবে সেটি আর হয়ে উঠেনি। এর মধ্যে সারা বিশ্বে কোভিড-১৯ মহামারি দেখায় দেওয়ায় থমকে যাওয়ার উপক্রম হয় রেনুকার জীবন। কিন্তুু এসময় সে ব্র্যাক থেকে ২দিনের প্রশিক্ষন নিয়ে গ্রামের প্রতিটি বাড়িতে গিয়ে মানুষকে স্বাস্থ্য বিষয়ে সচেতন কাজে নেমে পড়েন। সে সময় গর্ভবতী ও দুদ্ধদানকারী মাকে সেবা দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। পাশাপাশি পাঁচবিবি উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের অধীনে স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে নিয়োজিত ছিলেন কোভিড-১৯ কিটাদান কাজেও। আর এভাবেই গ্রামের মানুষের সেবার পাশাপাশি অসহায়, অবহেলিত ও নির্যাতিত নারীদের পাশে দাঁড়িয়েছেন তিনি। গত ২০ শে আগস্ট পাঁচবিবির বাগজানার ঘোড়াপা গ্রামের পাঁচ বছরের একটি শিশু ধর্ষনের শিকার হয়। এ ঘটনায় ধর্ষনকারীর ফাঁসির দাবিতে বাগজানা বাসস্ট্যান্ডে এলাকাবাসীদের সঙ্গে নিয়ে বিশাল মানববন্ধনের আয়োজন করেন রেনুকা মার্ডী। ফলে তার পরের দিন ২১শে আগস্ট তারিখে অপরাধিকে আটক করে পাঁচবিবি থানা পুলিশ। ব্যক্তিজীবনে রেনুকা মার্ডীর একটি ৮ বছরের মেয়ে আছে। মেয়েটি বাগজানা সঃ প্রাঃ বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেণীতে পড়াশুনা করে। রেনুকার বাবা-মা ও মেয়ে নিয়ে তার পরিবার। তার স্বামী ঢাকাতে একটি বেসরকারী কোম্পানীতে চাকুরী করে। কিন্তু স্বামীর অল্প উপার্জনে তার পরিবার চালিয়ে নিয়ে যেতে হিমশিম খেতে হত। তাই নিজের পায়ে দাঁড়ানো ও পরিবারে স্বচ্ছলতার জন্য তার বাড়ির পাশে বাগজানার স্টেশন রোডে একটি ঔষধের দোকান করে। তিনি বলেন, একসময় চমম অভাব অনটনের মধ্য দিয়ে আমরা দিন পার করেছি। এখন ঔষধের দোকান করার ফলে অভাব দূর হয়েছে। মেয়েকে স্কুলে লেখাপড়া করাচ্ছি। তবে সরকার থেকে সহায্য সহযোগীতা পেলে এই ছোট্ট দোকানকে আরো বড় করতে পারব। একই সাথে রেনুকা মার্ডী স্থানীয় রাজনীতির সাথে জরিয়ে আছেন। তিনি বাগজানা ইউনিয়ন মহিলা আওয়ামীলীগ এর সভানেত্রী। তিনি গত ইউ.পি নির্বাচনে সংরক্ষিত মহিলা ইউ.পি. সদস্য পদে অংশ নিয়ে অল্প ভোটে পরাজিত হন। তবে তিনি দমে যান নি, আগামীতে তিনি জনপ্রতিনিধি হওয়ার স্বপ্ন দেখেন।