জীবনের সৌন্দর্য ও সম্পদ মহান আল্লাহ তাআলার মহা অনুগ্রহ। এমন অনেক মানুষ আছে, যাদের সম্পদ আছে জীবনের সৌন্দর্য ও সুখ-শান্তি নেই। আবার সম্পদহীন জীবন-যাপন করেন অনেকে। দুনিয়া ও পরকালে জীবনে উত্তম অবস্থান ও সম্পদশালী হওয়ার জন্য আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনাকারী অনুগত বান্দা হওয়ার বিকল্প নেই।
আল্লাহর কাছে ক্ষমা প্রার্থনাকারী ব্যক্তিই সবচেয়ে বেশি মর্যাদাবান। যে ব্যক্তি আল্লাহর কাছে ক্ষমা চায়, আল্লাহ তাআলা ওই বান্দাকে দুনিয়ায় প্রাচুর্য দান করেন। অর্থ-সম্পদের অভাব, সন্তান-সন্তুতির অভাব, রিজিকের অভাব দূর করে দেন। পরকালের সুন্দর জীবন লাভে দুনিয়ার সব গোনাহও ক্ষমা করে দেন। কুরআনের নির্দেশনা ও হাদিসের বর্ণনায় তা সুস্পষ্টভাবে ওঠে এসেছে। আল্লাহ তাআলা বলেন-
‘অতপর আমি বললাম, তোমরা তোমাদের প্রভুর কাছে ক্ষমা চাও, নিশ্চয়ই তিনি অতিশয় ক্ষমাকারী। তিনি তোমাদের (উত্তম রিজিকের) জন্য প্রচুর বৃষ্টিপাত করাবেন। তিনি তোমাদের ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি দিয়ে সমৃদ্ধ করবেন আর তোমাদের জন্য স্থাপন করবেন জান্নাত ও তোমাদের জন্য প্রবাহিত করবেন নহরসমূহ।’ (সুরা নুহ : আয়াত ১০-১২) সুতরাং মুমিন মুসলমানের উচিত, দয়াময় মহান মালিকের কাছে বেশি বেশি ক্ষমা প্রার্থনা করা। গোনাহের কাজ ছেড়ে দেয়া। আর তাতে জীবন ও সম্পদে প্রাচুর্য ফিরে আসবে। ফলে দয়াময় রবের কাছে তাঁরই শেখানো ভাষায় ক্ষমা প্রার্থনা করবে মুমিন- উচ্চারণ : ‘রাব্বিগফির ওয়ারহাম ওয়া আংতা খায়রুর রাহিমিন।’ অর্থ : হে আমার প্রভু! আমাকে ক্ষমা করুন ও দয়া করুন। দয়াশীলদের মধ্যে আপনি শ্রেষ্ট দয়াশীল।’ (সুরা মুমিনুন : আয়াত ১১৮) রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামও উম্মতে মুহাম্মাদির জন্য নিয়মিত ক্ষমা প্রার্থনা করার মাধ্যমে নেয়ামত লাভের সুসংবাদ দেন। হাদিসে এসেছে-
হজরত আনাস রাদিয়াল্লাহু আনহু বলেন, আমি রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামকে বলতে শুনেছি, মহান আল্লাহ বলেন- হে আদম সন্তান! তুমি যতদিন পর্যন্ত আমার কাছে দোয়া করতে থাকবে এবং ক্ষমা প্রার্থনা করতে থাকবে, আমি ততদিন তোমার গোনাহ মাফ করতে থাকব। তুমি যা-ই করতে থাক না কেন, আমি সেদিকে ভ্রুক্ষেপ করব না।
– হে আদম সন্তান! তোমার গোনাহ যদি আকাশের উচ্চতা পর্যন্তও পৌঁছে যায়, তারপর তুমি আমার কাছে ক্ষমা চাও তবুও আমি তোমাকে ক্ষমা করে দেব। তুমি যা-ই করতে থাক না কেন, আমি সেদিকে ভ্রুক্ষেপ করব না।
– হে আদম সন্তান! তুমি যদি পৃথিবী পরিমাণ গোনাহসহ আমার কাছে আস আর আমার সঙ্গে কোনো কিছুকে শরিক না করে থাক, তবে আমিও সমপরিমাণ ক্ষমাসহ তোমার কাছে আসব।’ (তিরমিজি)
মহান আল্লাহ তাআলা ক্ষমা প্রার্থনাকারী মুমিন মুসলমানকে মানসিক গ্লানি থেকে মুক্ত রাখেন। দুনিয়ায় জীবন ও সম্পদের অভাব মুছে দেন। দান করেন উত্তম রিজিক। এর জন্য শুধু প্রয়োজন আল্লাহর কাছে বেশি বেশি ক্ষমা প্রার্থনা করা। তাওবাহ-ইসতেগফার করা। আল্লাহ তাআলা মুসলিম উম্মাহকে গোনাহের অন্ধকার থেকে মুক্ত হয়ে কল্যাণময় সঠিক পথের দিকে ধাবিত হওয়ার তাওফিক দান করুন। আল্লাহর কাছে বেশি বেশি ক্ষমা প্রার্থনার তাওফিক দান করুন। ক্ষমা প্রার্থনার মাধ্যমে জীবন ও সম্পদে বরকত লাভের তাওফিক দান করুন। আমিন।