সমাজের সবচেয়ে সুবিধাবঞ্চিত জনগোষ্ঠী হিজড়াদের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে ২৩ ফেব্রুয়ারি উন্নয়ন সংঘের এসডিএইচসি প্রকল্পের উদ্যোগে অংশীজনদের নিয়ে শিখন বিনিময় কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। উন্নয়ন সংঘের প্রশিক্ষণ কেন্দ্র ডিটিআরসিতে অনুষ্ঠিত সভায় সভাপতিত্ব করেন উন্নয়ন সংঘের মানবসম্পদ উন্নয়ন পরিচালক জাহাঙ্গীর সেলিম।সভায় অন্যান্যের মাঝে বক্তব্য রাখেন সাংবাদিক ও সংস্কৃতি কর্মী সাযযাদ আনসারী, জামালপুর পৌরসভার মহিলা কাউন্সিলর সাইদা আক্তার, নাসরিন বেগম, জেলা কাজী সমিতির সভাপতি মো. হাবিবুল্লাহ, শিক্ষিকা শামীমা বেগম, সাবিরা ইয়াসমিন, ১১নং ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. আলমগীর, সদর উপজেলা মডেল মসজিদের ইমাম জাকির হোসাইন, নারীনেত্রী শেফালী আক্তার, তরঙ্গ মহিলা কল্যাণ সংস্থার প্রকল্প কর্মকর্তা রাসেল মিয়া, বন্ধু সোসাল ওয়েলফেয়ার সোসাইটির ব্যবস্থাপক বিল্লাল হোসেন, হিজড়া জনগোষ্ঠীর প্রতিনিধি আঞ্জু প্রমুখ। সভা সঞ্চালনা করেন উন্নয়ন সংঘের হিজড়া জনগোষ্ঠীর আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন প্রকল্পের ব্যবস্থাপক লিটন সরকার। সভায় জনপ্রতিনিধি, নারী প্রতিনিধি, ধর্মীয় নেতা, শিক্ষক, সাংবাদিক, মাতাব্বর, হিজড়া জনগোষ্ঠীর সদস্যসহ ৩০জন প্রতিনিধি অংশ নেন।উল্লেখ দেশের অন্যতম বৃহৎ স্টিল কোম্পানি বিএসআরএম এর আর্থিক সহায়তায় জামালপুরে হিজড়া জনগোষ্ঠীর আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে গত দেড় বছর যাবৎ উন্নয়ন সংঘ বহুমাত্রিক কার্যক্রম নিয়ে প্রকল্প বাস্তবায়ন করে আসছে।হিজড়াদের আচরণগত পরিবর্তন, ক্ষমতায়ন, আত্মকর্মসংস্থান সৃষ্টির মাধ্যমে তাদের মর্যাদা বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে প্রকল্পটি গ্রহণ করা হয়। সবাইকে একসাথে নিয়ে উন্নয়নের মহাসড়কে পথচলার বর্তমান সরকারের অঙ্গীকার বাস্তবায়নের অংশ হিসেবে জামালপুরে উন্নয়ন সংঘ প্রাথমিকভাবে ২৮০ জন হিজড়া সদস্যদের নিয়ে কাজ শুরু করেছে। পর্যায়ক্রমে জামালপুরে সকল হিজড়া সদস্যদের এ প্রকল্পের আওতায় আনা হবে।উন্নয়ন সংঘের মানবসম্পদ উন্নয়ন পরিচালক ও সহকারী পরিচালক কর্মসূচি বলেন, আমরা সরকারের উন্নয়ন সহযোগী প্রতিষ্ঠান হিসেবে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার হিজড়াদের সমাজে পুনর্বাসন ও মর্যাদা দেওয়ার অঙ্গীকার বাস্তবায়নের জন্য কাজ করছি। আমরা মানবিক, সামাজিক, নেতৃত্ব বিকাশ, আচরণগত পরিবর্তন করার প্রশিক্ষণের পাশাপাশি বিভিন্ন কারিগরি প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করছি। ইতিমধ্যে শতাধিক হিজড়া সদস্যদের প্রতিজনকে বিনাসুদে ৯০জন হিজরা সদস্যকে বিনাসুদে প্রতিজনকে ২৫ হাজার টাকা ঋণ দেওয়া হয়েছে। তারা আয়মূলক বিভিন্ন কাজে অংশ নিয়ে লাভবান হচ্ছে। তারা নিয়মিত ঋণের কিস্তিও পরিশোধ করছে। অন্যান্যরা বলেন বিএসআরএম এবং উন্নয়ন সংঘ এমন একটি চ্যালেঞ্জিং কাজ হাতে নিয়ে মহত্তের পরিচয় দিয়েছে। সবাই এ কাজে সর্বাত্মক সহায়তা করার আশ্বাস দেন। কর্মশালায় বক্তারা আরো বলেন পরিবার, সমাজ ও রাষ্ট্রকে তাদের পুনর্বাসন, উন্নয়ন এবং মর্যদা বৃদ্ধির জন্য ব্যপকভিত্তিক কার্যক্রম হাতে নিতে হবে। সবাইকে দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টিয়ে ওদের মানুষ হিসেব গন্য করতে হবে।