১১ বছর বয়স পর্যন্ত তিনি কথা বলতে পারতেন না। ১৮ বছর বয়সে এসে পড়তে এবং লিখতে শিখেছিলেন। সেই তিনিই এখন কেমব্রিজ বিশ্ববিদ্যালয়ের সর্বকনিষ্ঠ কৃষ্ণাঙ্গ অধ্যাপক। ৩৭ বছরের জেসন আরডে আগামী মাসে বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাজবিজ্ঞানের অধ্যাপক হিসেবে কাজ শুরু করবেন। অটিজম স্পেকট্রাম ডিজঅর্ডারে আক্রান্ত হওয়ার পর আরডে তার জীবনের প্রথম দিকে বেশ কিছু চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হন। তার থেরাপিস্টরা ভবিষ্যদ্বাণী করেছিলেন যে, আরডেকে সারাজীবন বাড়িতে থাকতে হবে। জীবনে চলার পথে তার সহায়তার প্রয়োজন হবে। তিনি ইউনিভার্সিটি অফ কেমব্রিজের সর্বকনিষ্ঠ ব্ল্যাক প্রফেসর এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচজনের একজন হয়ে সবাইকে ভুল প্রমাণ করেছেন। প্রতিবেদন অনুসারে, যুক্তরাজ্যে ২৩,০০০ জনের মধ্যে মাত্র ১৫৫ জন কৃষ্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক রয়েছেন। তার থেরাপিস্ট এবং ডাক্তারদের ভুল প্রমাণ করার জন্য তিনি তার মায়ের বেডরুমের দেয়ালে লিখে রাখতেন- একদিন আমি অক্সফোর্ড বা কেমব্রিজে কাজ করব।
এটাই ছিলো তার লক্ষ্য।
তিনি অবশেষে তার কিশোর বয়সে পড়তে এবং লিখতে শিখেছিলেন এবং সারে বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়ন করার পরে একজন পিই শিক্ষক হয়েছিলেন। তিনি দুঃখ করে বলেন, উচ্চ শিক্ষা শুরু করার সময় তাকে বিশ্রীভাবে প্রত্যাখ্যান করা হয়েছিল। কিন্তু কঠোর অধ্যাবসায়ের পর, তিনি এখন বিশ্বের দ্বিতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন অধ্যাপক। আর্ডে যোগাযোগের জন্য সাইন ল্যাঙ্গুয়েজ ব্যবহার করা সত্ত্বেও, দুটি মাস্টার্স ডিগ্রি অর্জন করেছেন। পিই শিক্ষক হওয়ার জন্য শিক্ষায় স্নাতকোত্তর সার্টিফিকেট এবং লিভারপুল জন মুরস ইউনিভার্সিটি থেকে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জন করেছেন । টাইমসের একটি প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, একাডেমিক্সে ক্যারিয়ার গড়ার জন্য প্রয়োজনীয় সহায়তা এবং উৎসাহ তার বন্ধু এবং পরামর্শদাতা স্যান্ড্রো স্যান্ডির কাছ থেকে পেয়েছিলেন । আরডে ২০১৮ সালে তার প্রথম গবেষণাপত্র প্রকাশ করেন। ইউনিভার্সিটি অফ গ্লাসগো স্কুল অফ এডুকেশনে চাকরি পাওয়ার পর তিনি যুক্তরাজ্যের সর্বকনিষ্ঠ অধ্যাপকদের একজন হয়ে ওঠেন। মাই লন্ডনের সাথে তার ভবিষ্যত লক্ষ্য সম্পর্কে কথা বলতে গিয়ে, আর্ডে বলেন, প্রাথমিকভাবে সুবিধাবঞ্চিত ব্যাকগ্রাউন্ড থেকে আসা মানুষের সামনে কিভাবে শিক্ষার দরজা খুলে যেতে পারে আমি সেই উদাহরণ তুলে ধরতে চাই। উচ্চ শিক্ষাকে সত্যিকার অর্থে যাতে গণতান্ত্রিক করতে পারি তার উপর ফোকাস করতে চাই আমি । আশা করি কেমব্রিজের মতো জায়গায় থাকা আমাকে জাতীয় এবং বিশ্বব্যাপী সেই এজেন্ডাকে নেতৃত্ব দেয়ার সুবিধা প্রদান করবে।
সূত্র : টাইমস নাও