চট্টগ্রাম ও ঢাকার বিস্ফোরণের জন্য সরকারের ব্যর্থতাকে দায়ী করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। গতকাল রোববার (৫ মার্চ) দুপুরে গুলশানে বিএনপি চেয়ারপারসনের কার্যালয়ে গণতান্ত্রিক বাম ঐক্যের সাথে বৈঠকে পর সাংবাদিকদের কাছে এই মন্তব্য করেন তিনি।
এ সময় তিনি চট্টগ্রাম ও ঢাকার বিস্ফোরণে নিহতদের প্রতি শোক প্রকাশ করে তাদের আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন। মির্জা ফখরুল বলেন, ‘সরকারি সংস্থাগুলো ব্যবস্থা নিতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ হয়েছে। এবং সরকারের ব্যর্থতার কারণে এ ধরনের বিস্ফোরণ ঘটছে।’ ‘গতকাল সীতাকু-ে এবং আজকে ঢাকায় বিস্ফোরণ হয়েছে। এই বিস্ফোরণগুলো ঘটছে কেন?’, প্রশ্ন রাখেন মির্জা ফখরুল।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘পঞ্চগড়েও একটা চরম সাম্প্রদায়িক ঘটনা ঘটানো হয়েছে। দুজন নিহত হয়েছে, দোকান-পাটসহ বাড়িঘর লুটপাট, অগ্নিসংযোগ করা হয়েছে। আমাদের প্রশ্ন, এ ধরনের একটা বিতর্কিত বিষয় নিয়ে সরকার চুপ করে থাকল কেন? সেখানে সমাবেশ করার অনুমতিইবা দেয়া হলো কেন? পরবর্তী সময়ে যখন আক্রমণ হয়েছে, তখন পুলিশ দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে সেটা দেখল কেন? সেটাকে তারা প্রতিহত করতে সক্ষম হলো না কেন?’
তিনি বলেন, ‘এই যে সাম্প্রদায়িক সমস্যা সৃষ্টি করা, বিভেদ সৃষ্টি করা– এটা সরকার সৃষ্টি করছে। আমরা মনে করি, তারা অত্যন্ত অসৎ উদ্দেশ্যে এটা করছে।’
বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘দেশের মানুষ যখন গণতান্ত্রিক আন্দোলন শুরু করেছে, অধিকার আদায়ের জন্য যখন সংগ্রাম শুরু করেছে, দ্রব্যমূল্য যখন জনগণের ক্রয়ক্ষমতার বাইরে চলে গেছে, মানুষ যখন এই নিয়ে সোচ্চার হচ্ছে, মিছিল করছে; রাজনৈতিক দলগুলো যখন রাস্তায় নেমে এসেছে। তখন ডাইভারশন করানো জন্য, শুধুমাত্র জনমনে বিভ্রান্তি সৃষ্টির জন্য, জনদৃষ্টিকে অন্যদিকে প্রবাহিত করার জন্য এ ধরনের সাম্প্রদায়িক ঘটনা ঘটিয়ে গণতান্ত্রিক আন্দোলন নস্যাৎ করতে চায় তারা।’
‘এ ঘটনার জন্য সরকারকে সম্পূর্ণ দায়ী করছি আমরা। তাদেরকেই জবাবদিহি করতে হবে এবং যারা এ ঘটনার জন্য দায়ী, তাদের বের করে শাস্তির ব্যবস্থা করতে হবে,’ দাবি করেন তিনি।
গণতান্ত্রিক বাম ঐক্যের সমন্বয়ক প্রগতিশীল গণতান্ত্রিক দলের মহাসচিব হারুন আল রশীদ খান, সোশ্যাল ডেমোক্রেটিক পার্টির আহ্বায়ক আবুল কালাম আজাদ, সমাজতান্ত্রিক মজদুর পার্টির সাধারণ সম্পাদক শামসুল আলম ও বাংলাদেশের সাম্যবাদী দলের সাধারণ সম্পাদক হারুন চৌধুরী, নুরে আলম ও শাহজালাল মোল্লা উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকে বিএনপির লিয়াজোঁ কমিটির পক্ষ থেকে আরো ছিলেন দলের ভাইস চেয়ারম্যান বরকত উল্লাহ বুলু ও যুগ্ম মহাসচিব সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল।
গণতান্ত্রিক বাম ঐক্যের সমন্বয়ক হারুন আল রশীদ খান বলেন, ‘আদানি গ্রুপের সাথে সরকারের বিদ্যুৎ চুক্তির বিষয়টিকে ঘুরানোর জন্য পঞ্চগড়ে কাদিয়ানি ইস্যু তৈরি করা হয়েছে। এটা মানুষ এখন বলাবলি করছে। আপনারা দেখেছেন, কয়েকদিন আগে প্রাথমিক বৃত্তির ফলাফল সরকার কিভাবে বিতর্কিত করেছে। প্রাথমিক বিদ্যালয়ে শিশু থেকে শুরু করে শিক্ষাঙ্গনে এক অরাজক পরিস্থিতি তৈরি করেছে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা এখানে এসেছি বিএনপির সাথে আলোচনা করতে, এই আলোচনা ফলোপ্রসূ হয়েছে। সরকারের পতন না হওয়া পর্য়ন্ত আমরা রাজপথে অবস্থান করে যুগপৎ আন্দোলন চালিয়ে যাব।’