নীলফামারী চেম্বর অব কমার্স ইন্ডাস্ট্রির বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার (১৮ মার্চ) জেলা শহরের সরকারি শিশু পরিবার চত্ত্বরে বার্ষিক সাধারণ সভায় অনুষ্ঠিত হয়। সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন সাবেক মন্ত্রী ও নীলফামারী সদর আসনের সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা আসাদুজ্জামান নূর। নীলফামারী চেম্বার অব কমার্স ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি প্রকৌশলী এস.এম সফিকুল আলম ডাবলুর সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন জেলা প্রশাসক পঙ্কজ ঘোষ, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মোস্তাফিজুর রহমান পিপিএম, নীলফামারী পৌরসভার মেয়র ও জেলা আওয়ামীলীগের সভাপতি কৃষিবিদ দেওয়ান কামাল আহমেদ, জেলা আওয়ামীলীগের সাধারণ সম্পাদক এ্যাড. মমতাজুল হক, ও সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান শাহিদ মাহমুদ।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে আসাদুজ্জামান নূর বলেন, ‘২০০১ সালের জুন মাসে ১টি কারখানা দিয়ে যাত্রা শুরু করে উত্তরা ইপিজেড। ডিসেম্বরে বিএনপি জামায়াতরা ক্ষমতায় এসে সেটিও বন্ধ করে দেয়। তারা সেখানে একটি বেনারসি পল্লী তৈরি করার কথা বলেছিল। কিন্তু শেষ পর্যন্ত তারা সেটাও করে নি। আওয়ামী লীগ সরকার ইপিজেড প্রতিষ্ঠা করেছে দেখে বন্ধ করে দিয়েছিল তারা এই উত্তরা ইপিজেড। তাদের সময়ে সদর আসনে আওয়ামী লীগ জয় লাভ করে। বিএনপি’র সময় আমাদের মঙ্গা কবলিত এলাকায় কোনো উন্নয়ন হয়নি। শুধুমাত্র আওয়ামী লীগের এমপি হওয়ায় তখন আমি এক ছটাক গম বা চালের মুখও দেখি নি। পুনরায় আওয়ামী লীগ সরকার এসে উত্তরা ইপিজেড চালু করে। যার ফলে এই এলাকার মঙ্গা এখন শুধুমাত্র ইতিহাস হয়ে রয়েছে। এখন দেখেন আমাদের ইপিজিডে কত কারখানা। ৪০-৪৫ হাজার মানুষ এখানে কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করছে। ব্যবসায়ীদের উদ্দেশ্যে আসাদুজ্জামান নূর বলেন, আপনারা নীলফামারীকে শিল্পন্নত করেন। অন্যান্য জেলার চেয়ে নীলফামারীকে শিল্পের দিক থেকে এগিয়ে নিয়ে যান। বেশি বেশি শিল্প কারখানা প্রতিষ্ঠা করেন। এতে করে নিজের লাভ হবে, এলাকার মানুষের লাভ হবে ও দেশের লাভ হবে। যারা ব্যবসা করেন তারা যে দলই করুক না কেনো স্বাধীনভাবে ব্যবসা পরিচালনা করুন। আমরা ও প্রশাসন সব সময় আপনাদের সর্বাত্তক সহযোগীতা করবো। এসময় প্রধান অতিথি ও অন্যান্য অতিথিদের সম্মাননা স্বারক ও ক্রেষ্ট প্রদান করা হয়। সাধারণ সভায় অভিজাত গ্রুপের পক্ষ থেকে ছয় জন ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীকে ব্যবসায় উদ্বুদ্ধ করণের জন্য ১০ হাজার টাকা অনুদান প্রদান করা হয়। এছাড়াও শিল্প রপ্তানী ও বানিজ্যে বিশেষ অবদান রাখায় ১২জনকে সম্মাননা স্বারক প্রদান করা হয়। সম্মাননা প্রাপ্তরা হলেন- রপ্তানী বানিজ্যে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখায় রানু এগ্রো ইন্ডাস্ট্রির সুশীল কুমার দাস, নিয়মিত রপ্তানীকারক মেসার্স এম.আর ইন্টারন্যাশনালের মতিয়ার রহমান দুলু, রংপুর বিভাগীয় সর্বোচ্চ করদাতা ও রপ্তানী বানিজ্যে বিশেষ অবদান রাখায় অভিজাত গ্রুপের মোঃ সামসুল হক, সর্বোচ্চ করদাতা নির্বাচিত হওয়ায় মোস্তাফিজুর রহমান ডাবলু, সর্বোচ্চ ভ্যাট প্রদানকারী সংস্থা ও শিল্প উদ্যোগে বিশেষ অবদান রাখায় সানিটা সিরামিকসের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সামিউল ইসলাম শাওন, রপ্তানী বানিজ্যে বিশেষ অবদান রাখায় মেসার্স আফজাল ফাইবার প্রসেসিং এর নেয়াজ খান, মেসার্স জাহিদ গার্মেন্টসের জাহিদ হাসান, রপ্তানী ও দেশীয় বানিজ্যে অবদান রাখায় মেসার্স সৈয়দপুর এ্যালুমিনিয়াম ওয়ার্কসের রাজু কুমার পোদ্দার, মেসার্স ইকু জুট মিলের সিদ্দিকুল আলম, প্রবীণ শিল্প উদ্যোক্তা মুক্তা হিমাগারের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব সৈয়দ আলী, প্রাণচঞ্চল নীলফামারীর অর্থনীতির অন্যতম অগ্রদূত অজস্র মানুষের কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে অবদান রাখায় নীলসাগর গ্রুপের চেয়ারম্যান প্রকৌশলী আহসান হাবীব লেলিন ও চেম্বার অব কমার্স ইন্ডাস্ট্রির একমাত্র নারী পরিচালক হিসেবে বিশেষ অবদান রাখায় মিসেস আফসানা আফরোজ সম্মাননা পান এছাড়াও ব্যবসায়ীরা উপস্থিত ছিলেন। এর আগে সকালে সভার শুরুতে নীলফামারী চেম্বারের সভাপতি প্রকৌশলী এসএম সফিকুল আলম ডাবলু স্বাগত বক্তব্য শেষে বার্ষিক প্রতিবেদন উপস্থাপন করেন।