দেশে তত্ত্বাবধায়ক সরকার কখনো ফিরে আসবে না বলে মন্তব্য করেছেন তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ড. হাছান মাহমুদ। তিনি বলেছেন, ২০১৪ সালের নির্বাচন, ২০১৮ সালের নির্বাচনের আগেও তারা এ আন্দোলন করেছে। ২০১৪ সালে তাদের আন্দোলনের নমুনা আমরা দেখেছি। যখন বিএনপি আন্দোলনের কথা বলে, তখন পেট্রলবোমার কথা মনে পড়ে। মানুষ পুড়িয়ে হত্যার মহোৎসবের কথা মনে পড়ে। তাদের সেই কাজ আবার বাংলাদেশের মানুষ করতে দেবে না। তত্ত্বাবধায়ক সরকারও কখনো ফিরে আসবে না। গতকাল বৃহস্পতিবার (২৩ মার্চ) সচিবালয়ে মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে সাংবাদিকদের প্রশ্নোত্তরে তিনি এমন মন্তব্য করেন। এসময় তিনি তথ্য অধিদপ্তরের গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন করেন। প্রধান তথ্য কর্মকর্তা শাহেনুর মিয়া এসময় উপস্থিত ছিলেন।
বন্ধুপ্রতিম দেশ যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাসের আমন্ত্রণে আওয়ামী লীগের প্রতিনিধি দল তার বাসায় গিয়েছে। বিএনপির মতো পদলেহন করতে গিয়ে রাত-বিরাতে বসে থাকেনি। এমন মন্তব্য করে তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের প্রতিনিধি দলকে মার্কিন রাষ্ট্রদূত আমন্ত্রণ জানিয়েছেন মধ্যাহ্নভোজের। সেখানে আমাদের সাধারণ সম্পাদকের নেতৃত্বে প্রতিনিধি দল গেছেন। আমরা বিএনপির মতো রাত-বিরাতে গিয়ে ধরণা দিই না। তাদের আমন্ত্রণে আমরা গেছি।
‘যুক্তরাষ্ট্র আমাদের বন্ধুপ্রতীম রাষ্ট্র। গত ৫১ বছরের ইতিহাসে বাংলাদেশের উন্নয়ন-অগ্রগতিতে তাদের অবদান আছে। নিরাপত্তা থেকে জঙ্গি দমনে তারা আমাদের সহযোগিতা করছে। বহুমাত্রিক সহযোগিতা তাদের সঙ্গে আছে। সেই দেশের রাষ্ট্রদূত যখন আমন্ত্রণ জানায়, সেখানে তো যেতেই হয়। সে জন্যই আমাদের প্রতিনিধি দল সেখানে গেছে। বিএনপির মতো রাত-বিরাতে গিয়ে আমাদের কেউ পদলেহন করে না।’ এ সময়ে মার্কিন মানবাধিকার নিয়ে প্রশ্ন করা হলে তিনি বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের এ প্রতিবেদন একপেশে। পক্ষপাতদুষ্ট সূত্র থেকে সেগুলো সংগ্রহ করা হয়েছে। যে কারণে এই প্রতিবেদন পক্ষপাতদুষ্ট। আওয়ামী লীগের এই যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক বলেন, ‘মির্জা ফখরুল যদি কথাটি এভাবে বলতেন, তাহলে ভালো হতো- বিএনপির মধ্যে ভয়ঙ্কর সংকট চলছে। এটিই হচ্ছে বাস্তবতা। দেশে কোনো রাজনৈতিক সংকট নেই।’
বিএনপির সংকটের ব্যাখ্যা দিয়ে তিনি বলেন, তাদের চেয়ারপারসন সাজাপ্রাপ্ত আসামি। তাদের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান পলাতক। তারপর তাদের মধ্যে অনেকে আছেন, যারা ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের নেতৃত্ব মানতে নারাজ। আবার অনেকেই আছেন, যারা মির্জা ফখরুলের নেতৃত্ব মানতে নারাজ। তো তাদের মধ্যে ভয়াবহ সংকট আছে। তিনি (ফখরুল) সেই কথা বললেই সঠিক হতো। দেশে কোনো রাজনৈতিক সংকট নেই। ‘হ্যাঁ, বিএনপির অর্জন আমরা ধ্বংস করেছি, সেটি সঠিক। তারা পাঁচবার দুর্নীতিতে চ্যাম্পিয়ন হয়েছিলেন। আমরা সেখান থেকে সরে এসেছি। বিএনপির অর্জন হচ্ছে ২১ আগস্টের গ্রেনেড হামলা, ৫০০ জায়গায় একযোগে বোমা হামলা, তাদের সৃষ্টি হচ্ছে শায়খ আবদুর রহমান। সেগুলো এখন দেশে নেই। সেই বিচারে বিএনপির সেসব অর্জন ধ্বংস হয়েছে, বলেন হাছান মাহমুদ। সম্প্রতি বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন যে দেশে ভয়াবহ রাজনৈতিক সংকট চলছে। বিএনপি সরকারের আমলের সব অর্জন সব ধ্বংস করে দিয়েছে আওয়ামী লীগ। এ বিষয়ে মন্তব্য জানতে চাইলে তিনি এসব কথা বলেন। প্রধান তথ্য কর্মকর্তা শাহেনুর মিয়া বলেন, মহান বিজয় দিবসের ২০০৯ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত ক্রোড়পত্রে প্রকাশিত প্রবন্ধ নিয়ে এ সংকলন করা হয়েছে। আজ তার মোড়ক উন্মোচন। আমরা নিয়মিত এ ধরনের সংকলন বের করে থাকি। আপনার জানেন, এ-শ্রেণির দিবস আছে তেরোটি। এসব দিবসের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ লেখকদের লেখা ক্রোড়পত্রে প্রকাশ করি।