যে দেশে গণতন্ত্র নাই, সে দেশে মানবাধিকার থাকতে পারে না বলে মন্তব্য করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. মোশাররফ হোসেন বলেছেন, এই দেশে গণতন্ত্র নেই, এ দেশ হাইব্রিড সরকার দ্বারা পরিচালিত। শুধু আমরা বলছি না, আজকে সারা বিশ্ব বলছে। গতকাল মঙ্গলবার দুপুরে এক আলোচনা সভায় তিনি এ কথা বলেন। মহান স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে জাতীয় প্রেসক্লাবের আব্দুস সালাম হলে ‘স্বাধীনতার ৫২ বছর ও বিপর্যস্ত স্বাস্থ্য ব্যবস্থা’ শীর্ষক এ আলোচনা সভার আয়োজন করে ডক্টরস অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (ড্যাব)। ড. মোশাররফ হোসেন বলেন, স্বাস্থ্য ব্যবস্থার ভয়াবহ বিপর্যয় হয়েছে গত ১৪ বছরে। এই মন্ত্রণালয়ে পাঁচ বছর মন্ত্রী থাকার কারণে আমি দেখেছি, এই সেক্টরে কী ছিল, কী হয়েছে।
তিনি বলেন, সরকারি হাসপাতালগুলোতে সাধারণ মানুষ চিকিৎসা পাচ্ছে না। কিসের জন্য স্বাস্থ্য ব্যবস্থা পরিকল্পিতভাবে ধ্বংস করা হয়েছে? সবকিছু দলীয়করণ করার কারণে। দক্ষ, মেধাবি চিকিৎসককে ভালো জায়গায় অবস্থান দেয় না। আর যাদের তেমন কোনো দক্ষতা নেই, তাদের ভালো জায়গায় দায়িত্ব দেয়া হয়েছে। শুধুমাত্র একটি দলের কর্মী হওয়ার কারণে তাদের গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় দায়িত্ব দিয়ে স্বাস্থ্য ব্যবস্থাকে পুরোপুরি ধ্বংস করে দেয়া হয়েছে। তিনি বলেন, এই সরকারের হাত থেকে দেশের মানুষকে যত দ্রুত মুক্ত করা যায়, ততই মঙ্গল। গণ-অভ্যুত্থানের মাধ্যমে এই সরকারকে ক্ষমতা থেকে সরাতে হবে। কোনো অভ্যুত্থান তখনই সফল হয়, যখন সকল পেশাজীবী সংগঠন, জনগণ ঐক্যবদ্ধভাবে শরিক হয়। ইনশাল্লাহ সেই গণ-অভ্যুত্থান হবে। ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমান বলেন, এই সরকারের পায়ের নিচে মাটি নেই। দেশের মানুষ রাস্তায় নেমে এসেছে তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবিতে। তারা কোনোভাবেই এই সরকারের অধীনে নির্বাচন হতে দেবে না। আন্দোলনের মধ্য দিয়ে এই সরকারের বিদায় হবে। রাজপথে ফয়সালা হবে, এর কোনো বিকল্প নেই।
সভাপতির বক্তব্যে ড্যাবের সভাপতি অধ্যাপক ডা: হারুন আল রশিদ বলেন, আগামী দুই-তিন মাসের মধ্যে স্পেশালিস্ট যে চিকিৎসা সেগুলো বন্ধ হয়ে যাবে। ওষুধের দাম বেড়ে যাবে। এই ফ্যাসিস্ট সরকারকে যদি আমরা হটাতে না পারি, আমাদের আরো দুর্দশার মুখে পড়তে হবে। ড্যাবের মহাসচিব আব্দুস সালাম বলেন, আজকে দুঃখ লাগে। আমি একজন সার্জন, আমাকে যন্ত্রপাতি দেয় না। যদি বলি যন্ত্রপাতি দেন, বলে এলসি করতে পারছি না। অনেক রোগী এখন চিকিৎসার অভাবে মারা যাবে। হাসপাতালে বসে ডাক্তাররা প্রাইভেটভাবে ভিজিট নেয়ার প্রথার চালুর তীব্র প্রতিবাদ জানিয়ে অবিলম্বে তা বাতিল করার দাবি জানান তিনি।
ড্যাবের সভাপতি অধ্যাপক ডা: হারুন আল রশিদের সভাপতিত্বে ও মহাসচিব ডা: মো: আব্দুস সালামের স ালনায় সভায় আরো বক্তব্য দেন বিএনপির ঢাকা মহানগর উত্তরের আহ্বায়ক আমান উল্লাহ আমান, পেশাজীবী পরিষদের সদস্য সচিব কাদের গণি চৌধুরী, ড্যাবের সিনিয়র সহ-সভাপতি ডা: এম এ সেলিম, কোষাধ্যক্ষ ডা: জহিরুল ইসলাম শাকিল, সহ-সভাপতি মোস্তাক রহিম স্বপন, অধ্যাপক ডা: মো: মোসাদ্দেক হোসেন বিশ্বাস ডাম্বেল, সেলিম ভূঁইয়া, ড্যাবের সহ-সভাপতি ডা: শহীদ হাসান, ডা: মো: সিরাজুল ইসলাম, কেন্দ্রীয় নেতা ডা: পারভেজ রেজা কাকন, ডা: মো: মেহেদী হাসান, ডা: সরকার মাহবুব আহমেদ শামীম, ডা: সায়ীদ মেহবুব উল কাদির, ডা: আদনান হাসান মাসুদ প্রমুখ।