ঢাকাই চলচ্চিত্রকে সমৃদ্ধ করতে এখন পর্যন্ত যে কজন নায়িকা গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন মৌসুমী তাদের অন্যতম। এদেশের চলচ্চিত্রপ্রেমীদের তিনি অসংখ্য সুপার হিট সিনেমা উপহার দিয়েছেন। রোম্যান্টিক, অ্যাকশন ঘরানা ও ঐতিহাসিকসহ বিভিন্ন ধরনের সিনেমায় রূপালি পর্দায় মৌসুমীর সাবলীল উপস্থিতি চলচ্চিত্র বোদ্ধাসহ সব শ্রেণির দর্শকের হৃদয় কেড়েছে। সবার ভালোবাসায় তিনি পেয়েছেন ঢাকাই চলচ্চিত্রের প্রিয়দর্শীনির তকমা। এক সময়ের তুমুল ব্যস্ততম এ নায়িকা এখন আর তেমন একটা অভিনয় করছেন না। এখন তিনি সংসার জীবনের বিভিন্ন কাজ নিয়েই দিন-রাত ব্যস্ত থাকেন। আগের মতো আর তিনি ক্যামেরার সামনে ধরা দেন না বলেই চলে। তবে তিনি কয়েকদিন আগে অভিনেতা ও উপস্থাপক শাহরিয়ার নাজিম জয়ের মুখোমুখি হয়ে একটি অনুষ্ঠানে জীবনের শেষ কিছু ইচ্ছা ও চিন্তার কথা বলেছেন।
মৌসুমী এ অনুষ্ঠানের শেষ দিকে তার এসব ইচ্ছা আর চিন্তার কথা জানাতে গিয়ে বলেন, ‘আমি যদি মরে যাই, আমার সব ভুলের জন্য ক্ষমা চাই সবার কাছে। ক্ষমা করে দেবেন আমাকে। আমার কয়েকটি ইচ্ছে আছে। আমি মারা যাবার পর, আমার লাশ যেন কাউকে দেখতে দেওয়া না হয়। অবশ্যই খুব গোপনে যেন কবর দেওয়া হয়। জানাজা হবে, কিন্তু আমি চাই না কেউ আমাকে আর দেখুক।’ চিত্রনায়িকা মৌসুমী আরও বলেন, আর মারা যাওয়ার আগে বড় হজ করার ইচ্ছে রয়েছে। আপনারা দোয়া করবেন আমার জন্য। আমার নিজের চেষ্টা তো রয়েছেই, সবার দোয়াও কাজে লাগে।’
এ অনুষ্ঠানে মৌসুমী অনুরোধ করে বলেন, আমার মৃত্যুর পর ছবিগুলো যেন সবার মুঠোফোন থেকে মুছে দেওয়া হয়। এমনকি টিভি চ্যানেলেও যেন ‘ধুমধাড়াক্কা’ কোনো ছবি দেখানো না হয়। পাশাপাশি মৌসুমী আরও অনুরোধ রাখেন, ‘আমি মারা যাওয়ার পর টিভিতে ধুমধাড়াক্কা ছবি বা জনগণ-দর্শকের কাছে আমার অনেক ছবি রয়ে গেছে, সেগুলো আপনারা যার যার মোবাইল থেকে ডিলিট করে দেবেন। ছবি যদি সংরক্ষণ করতে হয়, তাহলে অবশ্যই মৌসুমী আর্কাইভে আলাদাভাবে সংরক্ষণের ব্যবস্থা করতে হবে। ছবি থাকলে সেখানে সংরক্ষণের জন্য জমা দিয়ে দেবেন। মৌসুমী আগামী প্রজন্মের কথা উল্লেখ করে বলেন, যদি ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য আমার কোনো কাজ মনে হয় যে আর্কাইভে রাখলে ভালো হবে, গবেষণার জন্য প্রয়োজন আছে, তাহলে সে উদ্দেশ্যেই ছবিগুলো সংরক্ষিত হবে। অবশ্যই বাছাইকৃত ছবিগুলো আর্কাইভে রাখা হবে, ভালো উদ্দেশ্যে। এছাড়া অন্য সব ছবি ডিলিট করে দিলে ভালো হয়।’ অন্যদিকে মৌসুমী তার ভক্ত-অনুরাগীদের কাছে একটি বিশেষ অনুরোধ জানান। তার যে সেবামূলক প্রতিষ্ঠান রয়েছে, সেটির কাজ যেন ভক্তরা চলমান রাখেন।