ঝিনাইদহের কালীগঞ্জে ভুর্তকি মূল্যে ভুট্রা ভাঙ্গা মেশিন বিতরণে অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে। ভুট্রা ভাঙ্গা এ মেশিনের বাজার মূল্য এক লাখ থেকে এক লাখ ১০ হাজার টাকা বলে জানা গেছে। চলতি মৌসুমে উপজেলা কৃষি অফিসের অধিনে দ্্ুইজন কৃষককে এ ভুর্তকি মূল্যের ভুট্রা ভাঙ্গা মেশিন প্রদান করা হয়। তারা হলেন উপজেলার নিয়ামতপুর ইউনিয়নের বলরামপুর বাজারের কৃষক শামছুল ইসলাম ও জামাল ইউনিয়নের উল্লা গ্রামের মৃত শফি উদ্দীনের ছেলে আবু সাঈদ। প্রদানকৃত ভুট্রা ভাঙ্গা মেশিনের ভুর্তকি মূল্যে বাবদ শামছুল ইসলামের কাছ থেকে ৯০ হাজার ও আবু সাঈদের কাছ থেকে ৫৭ হাজার ৫০০ টাকা নেওয়া হয়েছে। এসব টাকা উপজেলা কৃষি অফিসার মাহবুব আলম রনি মেশিন উৎপাদনকারী ইঞ্জিনিয়ারিং প্রতিষ্ঠানের কাছে দিতে পরামর্শ দেন বলে জানান ওই দুই কৃষক। যদিও উপজেলা কৃষি অফিসার টাকা দেওয়া নেওয়ার বিষয়টি তার জানা নেই বলে জানিয়েছেন। তবে, উপজেলা কৃষি অফিস বা মেশিন উৎপাদনকারী ইঞ্জিনিয়ারিং প্রতিষ্ঠান থেকে কৃষকদের কোন টাকা জমার কোন রশিদ দেওয়া হয়নি। পরবর্তিতে টাকা জমার রশিদ চাইলে কৃষি অফিসার মাহবুব আলম রনি মেশিন উৎপাদনকারী জনতা ইঞ্জিনিয়ারিং এর নামে একটি প্যাডে স্বাক্ষর করে চালান ধরিয়ে দেওয়া হয়। তবে সেখানে কোন টাকার পরিমাণ উল্লেখ না থাকলেও কৃষকের নাম ঠিকানা উল্লেখ করা হয়। এরকম চালান কৃষক শামছুল ইসলামকে দেওয়া হলেও আবু সাঈদকে দেওয়া হয়নি। কৃষক শামছুল ইসলাম (০১৭৯২৫৭৬৭৬৬) জানান, মেশিনের দুইটি অংশ রয়েছে। একটি ডিজেল চালিত ইঞ্জিন ও হলার। এরমধ্যে হলারের বাজার মূল্য ৪০ থেকে ৪৫ হাজার এবং চাইনা সিফাং ব্রান্ড্রের ১৬ হর্স পাওয়ারের ডিজেল ইঞ্জিনের মূল্য ৫৫ হাজার টাকা। সব মিলিয়ে মূল্য ১ লাখ থেকে ১ লাখ ১০ হাাজার টাকা বাজার মূল্য হলেও কৌশলে আমার কাছ থেকে ৯০ হাজার টাকা আদায় করা হয়েছে। যদিও মেশিনের গায়ে লেখা রয়েছে এটি বিক্রয়ের জন্য নয়। বাজার মূল্য জানার পর টাকার রশিদের জন্য কৃষি অফিসে গেলেও কোন ডকুমেন্টস বা ক্রয় রষিশদ দিতে চাইনি। তবে অনেক চাপাচাপির পর কৃষি অফিস থেকে দেওয়া ৩০ জানুয়ারি একটি চালানপত্র দেওয়া হয়। ওই চালানে দেখা যায় শুধু কৃষকের নাম ঠিকানা ও মেশিনের ইঞ্জিন নম্বর ছাড়া আর কোন কিছুই উল্লেখ করা হয়নি। এর কিছুদিন পূর্বে জেলা শহরের জনতা ইঞ্জিনিয়ারিং এর কারখানা থেকে তার হাতে ওই ভুট্টা ভাঙ্গা মেশিন তুলে দেওয়া হয় বলে যোগ করেন। কৃষক আবু সাঈদ জানান, আমার কাছ থেকে একটি কাগজে স্বাক্ষর করিয়ে নেন। যেখানে মেশিনটির মূল্য এক লাখ টাকা এবং ৫০ শতাংশ ভুতর্কির কথা উল্লেখ ছিল। কিন্তু আমি ঝিনাইদহ শহরের ওইইঞ্জিনিয়ারিং শোরুমে মেশিন নিতে গেলে আমার কাছ থেকে ৫৭ হাাজার ৫০০ টাকা নেওয়া হয়। তবে কোন রশিদ দেওয়া হয়নি। জনতা ইঞ্জিনিয়ারিং এর মার্কেটিং অফিসার হারুনর রশিদ (০১৯৭৩২৪৩৪৮৪) জানান, আমাদের এখানে ৬০ হাজার থেকে এক লাখ ৩০ হাজার টাকা মূল্যের মেশিন রয়েছে। তবে সরকারের ভুতর্কি মূল্যের যে মেশিনগুলো দেওয়া হয় তার মূল্য এক লাখ ২০ হাজার টাকা বলে উল্লেখ করেন। উপজেলা কৃষি অফিসার মাহবুব আলম রনি (০১৭০১২৩৯৩০৬) জানান, ভুতর্কি মূল্যের মেশিন বিতরণের বিষয়টি আমরা কৃষক নির্বাচন করে উৎপাদনকারী ইঞ্জিনিয়ারিং প্রতিষ্ঠান দেখিয়ে দেওয়া হয়। এরপর সেই কৃষক সেখান থেকে ভুর্তকি মূল্য পরিশোধ করে মেশিন সংগ্রহ করেন। সেখানে কৃষকরা কত টাকা দিয়েছেন এটা আমার জানা নেই।