চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জে ব্যাপক শিলাবৃষ্টি হয়েছে। বুধবার বিকেল পৌণে ৪টার দিকে ঝড়ো হাওয়াসহ শিলাবৃষ্টি শুরু হয়। টানা চলে প্রায় ১৫ মিনিট ধরে। বৃষ্টির সঙ্গে শিলা পড়ায় ধানসহ অন্যান্য ফসলের ব্যাপক ক্ষতির আশঙ্কা করছেন কৃষকরা। স্থানীয় কৃষকরা জানায়, জমিতে পাকা ইরি ধান রয়েছে। তাই শিলাবৃষ্টি দেখে অনেক ভয়ে ছিলাম। তুলনামূলক কয়েকটি ইউনিয়নে শিলাবৃষ্টির আকার ছোট। তবে এখন ধান কাটার মৌসুম। এ সময়ে ধানের ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। উপজেলার পাঁকা ইউনিয়নের বাসিন্দা এসএম আল আমিন জুয়েল জানান, বিকেলে হঠাৎ চরাঞ্চলে শিলাবৃষ্টি শুরু হয়। বর্তমানে মাঠজুড়ে শুধু ইরি ধানের আবাদ। নারায়ণপুর ও পাঁকা ইউনিয়নের কৃষকের ধানের ক্ষতি হয়েছে। কৃষকদের ক্ষতি পুষিয়ে নিতে প্রণোদনার দাবি জানান তিনি। এদিকে তীব্র তাপপ্রবাহের প্রায় দুই মাস পর বৃষ্টি হওয়ায় স্বস্তিতে আমচাষীর। কৃষি বিভাগ বলছে, আমের জন্য আশীর্বাদ এই বৃষ্টি। স্থানীয় আম চাষী শামসুল হক বলেন, আমের যখন মুকুল ছিল তখন বৃষ্টি হয়েছিল এ অঞ্চলে। তারপর আর বৃষ্টির দেখা মিলেনি। এতে আমের গুটি দ্রুত বড় হচ্ছিল না। তাই ঘনঘন আমবাগানে সেচ দিচ্ছিলাম। কিন্তু সেচ দিয়ে তেমন উপকার হয়নি। এই বৃষ্টিতে খুব দ্রুত আম বড় হবে। কানসাট এলাকার আম চাষি সুজা আলী বলেন, আমার এ বছর ক্ষিরসাপাত, লক্ষণভোগ, ল্যাংড়া, আ¤্রপালি ও আশ্বিনাসহ কয়েক জাতের আমগাছ রয়েছে। গাছগুলোতে প্রচুর মুকুল এসেছিল। তবে যে পরিমাণ মুকুল এসেছিল, সে পরিমাণ আমের গুটি হয়নি। এতে ফলন নিয়ে শঙ্কায় আছি। তিনি আরো বলেন, এমনি তো আমের গাছে গুটি কম এসেছে। তবুও দুই মাস থেকে বৃষ্টি হয়নি। এতে আম নিয়ে দুশ্চিন্তায় দিন কাটছিল। তবে বৃষ্টি এখন স্বস্তি ফিরেছে। শিবগঞ্জ ম্যাংগো প্রডিউসার কো-অপারেটিভ সোসাইটির সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল হোসেন শামীম খাঁন বলেন, আমের গুটি পর আর বৃষ্টি হয়নি। বেশ কিছুদিন ধরেই চলছিল তীব্র তাপদাহ। এতে আমের গুটি বড় হচ্ছিল না। ফলে চাষীদের দুশ্চিন্তায় দিন কাটছিল। হঠাৎ বৃষ্টিতে স্বস্তি এসেছে। এখন দুশ্চিন্তামুক্ত। এ বিষয়ে চাঁপাইনবাবগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক পলাশ সরকার বলেন, অনাবৃষ্টির কারণে বাগানে যে আমের বোঁটা শুকিয়ে গেছিল, সেগুলো ঝরে পড়তে পারে। এছাড়া যদি কোনো এলাকায় শিলাবৃষ্টি হয়, তাহলে শিলার আঘাতে ক্ষতি হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এই বৃষ্টি আমে জন্য আশীর্বাদ। এখন থেকে যত ঘনঘন বৃষ্টি হবে। আমের জন্য অনেক ভালো। অন্যদিকে শিলাবৃষ্টিতে ফসলের কি পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে, তা এখনই বলা সম্ভব নয়। রিপোর্ট পেলে ক্ষতির পরিমাণ জানা যাবে।