মসজিদভর্তি মুসল্লি। সবাই পবিত্র ঈদুল ফিতরের শুভেচ্ছাবিনিময়ে ব্যস্ত। স্বজনদের সাথে কোলাকুলি করছেন তারা। ঈদ উৎসবের এমন দৃশ্য স্বাভাবিকই বটে। তবে অস্ট্রেলিয়ার মতো দেশে সেই দিন দেখা যায় অন্যরকম দৃশ্য।
সেদিন ঈদের শোরগোল নিয়ে অভিযোগ দিতে এসেছেন ব্রেইন নামের এক অস্ট্রেলিয়ান। বয়সে বৃদ্ধ। কিন্তু মসজিদের আনন্দমুখর দৃশ্য দেখে মুগ্ধতা হন তিনি। প্রশান্তিতে ভরে ওঠে তার অন্তর। সবার আনন্দে অংশ নিয়ে তিনিও পাঠ করেন কালেমা শাহাদাহ। শুরু করেন জীবনের নতুন পথচলা।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত এক ভিডিওতে সেই বৃদ্ধকে আরবি ও ইংরেজিতে কালেমা পাঠ করতে দেখা যায়। তখন মসজিদ কর্তৃপক্ষ ও উপস্থিত মুসল্লিদের শুভেচ্ছা পেয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন তিনি। গত ২২ এপ্রিল অস্ট্রেলিয়ার কুইন্সল্যান্ড রাজ্যের উপকূলীয় গোল্ড কোস্ট শহরে এই দৃশ্য দেখা যায়। মুসলিম হওয়ার পর শুক্রবার তিনি জীবনের প্রথমবার জুমার নামাজ পড়েন। এ সময় তাকে বেশ উৎফুল্ল দেখা যায়। অস্ট্রেলিয়ার প্রসিদ্ধ ইসলাম প্রচারক ও দাঈ শায়খ হাসান গোস ফেসবুকে সেই দৃশ্য শেয়ার করে লিখেছেন, ‘ঈদের দিনে আমাদের প্রিয় ভাইকে ইসলামের পথে স্বাগতম। সকালে তিনি শোরগোলের অভিযোগ নিয়ে এসেছিলেন। আর মুসলিম হয়ে ঘরে ফিরে গেলেন। সত্যিই আল্লাহ মহান।’
তিনি আরো জানান, ব্রেইন নামের এই লোক মসজিদের কাছেই এক বৃদ্ধাশ্রমে বসবাস করেন। ঈদের দিন নামাজের পর মানুষের চেঁচামেচি নিয়ে অভিযোগ করতে আসেন তিনি। এরপর প্রায় ৫০ মিনিট পর্যন্ত অবস্থান করে সব কিছু শোনেন। ইসলাম সম্পর্কে ধারণা লাভ করে মুসলিম হওয়ার আগ্রহ প্রকাশ করেন তিনি। এরপর শায়খ হাসান তাকে কালেমা শাহাদাত পাঠ করান।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বৃদ্ধের ইসলাম গ্রহণের ভিডিও দেখে মুগ্ধতার কথা জানান অনেকে। জীবনের শেষ মুহূর্তে ইসলামের ছায়াতলে আশ্রয় নেয়ায় তাকে অভিবাদন জানান মুসলিমরা। অনেকে তার কাছে ইসলামের সঠিক চিত্র উপস্থাপনের বিষয়টির প্রশংসা করেন। কারণ তা শোনার পরই বৃদ্ধের ক্রোধ মিশে যায় এবং অন্তর ইসলামের জন্য প্রস্তুত হয়। এদিকে অস্ট্রেলিয়ার অনেক প্রবাসী মুসলিম শায়খ হাসানের ভূমিকার কথা তুলে ধরেন। ইসলাম প্রসারে তিনি মেধা ও অর্থ-সম্পদ ব্যয় করে যাচ্ছেন। তাছাড়া ঈদের দিন তার কাছে ওই বৃদ্ধের সাথে এক নারীও ইসলাম গ্রহণ করেন। সূত্র : আলজাজিরা