উত্তরাঞ্চলের শস্য ভান্ডার হিসেবে খ্যাত সিরাজগঞ্জ জেলার তাড়াশ উপজেলার কৃষকের ধান কেটে নিজেদের খোরাকের ধান নিয়ে বাড়ি ফিরতে দেখা গেছে মৌসুমি কৃষি শ্রমিকদের। বিশেষ করে, এ কাজের বিনিময়ে তাদের পরিবারের প্রায় সারা বছরের খাওয়ার জোগাড় হয়ে গেছে বলে জানিয়েছেন শ্রমিকরা। ফলে যাবার বেলায় তাদের মুখে ছিল তৃপ্তির হাসি। এদিকে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর জানিয়েছেন, আবহাওয়া অনুকূলে ছিলো, শ্রমিক সংকট নাই। এজন্য তুলনামূলক আগেই ধান কাটা শেষ হয়ে যাচ্ছে। পাবনা জেলার সাঁথিয়া উপজেলার পৌর এলাকার সাঁথিয়া গ্রামের শ্রমিক হাবু মিঞা, লিটন, মাইদুল, বাতেন আলী, এদেল, আলিম ও আছাদ বলেন, তারা একদলে ১৯ জন শ্রমিক এসেছিলেন। প্রতিবছর বোরো মৌসুমে তাড়াশের কৃষকের ধান কাটতে আসেন। ২০ দিন ধান কেটে ১৫ মণ করে ধান সংগ্রহ করেছেন একেকজন শ্রমিক। এ কাজ করে অধিকাংশ শ্রমিক পরিবারের সারা বছরের খাওয়ার চালের ব্যবস্থা হয়ে গেছে। তারা খুব খুশি। শ্রমিকরা আরও বলেন, সাঁথিয়া উপজেলার নাগডেমড়া ইউনিয়ন, ধুলাউড়ি, ভুলবাড়িয়া, ধোপাদহ, করমজা, কাশিনাথপুর, গৌরীগ্রাম, নন্দনপুর, ক্ষেতুপাড়া ও আতাইকুলা ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রাম থেকে অসংখ্য শ্রমিক ধান কাটতে আসেন তাড়াশ উপজেলাতে। তাড়াশ পৌর এলাকার আসানবাড়ি গ্রামের কৃষক ছাত্তার প্রামানিক, এনছাব প্রামানিক, জিল্লুর রহমান ও কামরুল ইসলাম বলেন, বোরো মৌসুমের ধান কেটে ঘরে তোলার জন্য আমরা মৌসুমি শ্রমিকের উপর নির্ভরশীল। সাঁথিয়া উপজেলার শ্রমিক দলগুলো প্রায় ২০ থেকে ২৫ বছর ধরে আমাদের বিস্তীর্ণ মাঠের জমির ধান কেটে দিচ্ছেন। তারা যথেষ্ট পরিশ্রমী। সরেজমিনে দেখা গেছে, পৌর এলাকার আসানবাড়ি গ্রাম থেকে একদল শ্রমিক চুক্তি মতো কৃষকের ধান কাটা শেষ করে নিজেদের বাড়ি ফিরবেন। সাধারণত তারা খোরাকের ধান ট্রাকে নিয়ে বাড়ি চলে যায়। যাওয়ার সময় তারা মাথায় গামছা বেধে আনন্দে মেতে রয়েছেন। জানা গেছে, কৃষকের বাড়িতে কাজের সুবাদে মাত্র কয়েক দিনের মধ্যে মায়ার বন্ধন গড়ে ওঠে শ্রমিকদের। তাইতো শ্রমিকরা বাড়ি ফিরে যাওয়ার সময় বিদায় জানাতে দাড়িয়ে থাকেন কৃষক পরিবারের লোকজন। এ প্রসঙ্গে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা মো. আব্দুল্লাহ আল মামুন দৈনিক খবরপত্রকে বলেন, চলতি বোরো মৌসুমে ২২ হাজার ৩ শ ৬০ হেক্টর জমিতে বোরো ধানের আবাদ করেছিলেন কৃষকরা। এরই মধ্যে ৮১ ভাগ ধান কাটা হয়ে গেছে।