ভোলা পৌরসভার কর্মচারী শমশের আলীর বিরুদ্ধে ব্যাপক চাঁদাবাজী,ঘুষ বাণিজ্য ও প্রতারনার অভিযোগে সংবাদ সম্মেলন করেছেন আবু সুফিয়ান নামের এক ভুক্তভোগী। বুধবার (২৪ মে) ভূক্তভোগী আবু সুফিয়ান নামক এক ব্যবসায়ী তার ভোলা শহরের ওয়েষ্টার্ন পাড়াস্থ্ ব্যক্তিগত অফিস কার্যালয়ে শমশের আলীর প্রতারনা ও ঘুষ বাণিজ্যসহ চাঞ্চল্যকর কাহিনী তুলেধরে এ সংবাদ সম্মেলন করেন। জনাকীর্ণ সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, আমি ভোলা শহরের একজন ক্ষুদ্র ঠিকাদার। সামান্য পুঁজি নিয়ে দীর্ঘদিন ভোলা পৌরসভাসহ বিভিন্ন দপ্তরে ছোট-খাটো কাজ ক্রয় করে তা সম্পন্ন করে থাকি। সামাণ্য এই কাজের আয় দিয়েই আমি পরিবারের ভরণ-পোষন চালাই। আমার সাথে সু-সম্পর্ক ও পরিচয় থাকার সু-বাদে ভোলা পৌরসভায় মাষ্টাররোলে চাকুরীরত কর্মচারী মোঃ শমশের আলীসহ আমরা দু’জন পার্টনারশিপে ঠিকাদারি ব্যবসা করতাম। তার প্রতি আমার অঘাধ সম্মান ও বিশ্বাস ছিলো, আর এই বিশ্বাস এবং আমার সরলতার সুযোগ নিয়ে শমশের আলী ভোলা পৌরসভা হতে জলবায়ু প্রকল্পের আওতাধীন একটি ড্রেনেজ স্থাপনের কাজ এককভাবে আমাকে পাইয়ে দেয়ার কথা বলেন। এজন্য মন্ত্রণালয় হতে কাজটি অনুমোদন করতে ১০ লাখ টাকা খরচ হবে বলে আমাকে জানান এবং ওই টাকা মেয়র মনিরুজ্জামানকে দিয়েই কাজটি অনুমোদন করাবেন বলে শমশের আলী আমাকে প্রতিশ্রুতি দেন। যেহেতু শমশের আলী আমার একজন ব্যবসায়ীক পার্টনার এবং পৌরসভার টুকটাক কাজগুলো তার মাধ্যমেই আমি করাতাম, সেহেতু আমি অতি স্বাভাবিক ও সরলমনে তাকে বিশ্বাস করে বিগত ২০১৬ইং সালের মার্চ মাস থেকে আগষ্ট/১৬ইং পর্যন্ত সর্বমোট ৯ লাখ ৫ হাজার টাকা প্রদান করি। টাকা প্রদানের পূর্বে আমি তাকেসহ মেয়র মহোদয়ের সাথে বিষয়টি নিয়ে খোলামেলা কথা বলার চেষ্টা করি। ওই প্রকল্পের কাজটি মন্ত্রণালয় থেকে সম্পন্ন করতে খরচের টাকাটি আমি নিজেই মেয়র মহোদয়ের হাতে দিতে চাইলে শমশের বিভিন্ন সমস্যা ও নেগেটিভ কারন দেখিয়ে তার কাছে আমাকে যেতে দেয়নি। তবুও আমি শমশেরকে বিশ্বাস করেছি। কিন্তু পরবর্তীতে জানতে পারি,অত্যন্ত ধূরন্ধাজ শমশের আমার সাথে প্রতারণা করে মেয়রের নাম ভাঙ্গিয়ে উক্ত টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন এবং প্রকল্পের ওই কাজেরও কোনো অস্তিত্ব নেই। বিষয়টি আমি মেয়র মহোদয়কে অবহিত করার পর তিনি আমাকে ওই টাকা তার কর্মচারী শমশের আলীর কাছ থেকে উদ্ধার করে দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিলেও আদৌ আমি কোনোপ্রকার সুরাহা পাইনি। আমি আমার পাওনা টাকা ফিরে পেতে শমশের আলীর পেছনে ঘুরতে ঘুরতে এখন ক্লান্ত-শ্রান্ত হয়ে পড়েছি। বিষয়টি নিয়ে আমি শমশের আলীর বাসস্থল শহরের হোমিও কলেজপাড়া’র পৌর ৫নং ওয়ার্ড কাউন্সিলর এরফানুর রহমান মিথুন মেল্লাসহ বিভিন্নজনের কাছে শতবার ধর্ণা দিয়েও কোনো ফল মেলেনি। আমি শমশের আলীর কাছে আমার পাওনা টাকা চাইতে গেলে সে আমার সাথে চরম অশোভন আচরনসহ আমাকে খুন, গুম ও ভয়াবহ ক্ষতি করবে বলে নানাধরনের ভয়ভীতি ও হুমকি দিচ্ছেন। টাকা চাওয়ার কারনে শমশের আলীর নেতৃত্বে তার গুন্ডাবাহিনী আমাকে বহুবার লাঞ্চিত করেছে। আবু সুফিয়ান আরো বলেন যে,আমি বিভিন্নভাবে খোঁজ নিয়ে জানতে পারি পৌরসভায় চাকুরী নেয়ার সুবাদে এই শমশের আলী মেয়র মনিরুজ্জামানের নাম ভাঙ্গিয়ে ঠিকাদারী কাজ ও চাকুরী পাইয়ে দেয়ার কথা বলে আমার মতো বহু নিরীহ মানুষের কাছ থেকে কয়েক কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে তাদেরকে নি:স্ব করে দিয়েছেন। তাই আবু সুফিয়ান শমশের আলীর কাছ থেকে পাওনা টাকা ফেরৎ পেতে প্রশাসন এবং পৌর মেয়রের হস্তক্ষেপ কামনা করছেন। শমশের আলীর সাথে কথা হলে তিনি গণমাধ্যমকে বলেন, সুফিয়ানের সাথে আমার ব্যবসায়িক লেন-দেন রয়েছে। তবে মেয়রের নাম করে সুফিয়ানের কাছ থেকে নেয়া ৯ লক্ষাধিক টাকা আতœসাতের বিষয়ে তিনি কোনো সদূত্তর দিতে পারেননি।