১লা জুন সংসদে উত্থাপিত হয় ২০২৩-২৪ অর্থ বছরের বাজেট। সংসদে বাজেট উত্থাপনের সাথে সাথে তাৎক্ষণিক সংবাদ মাধ্যমে প্রেরিত প্রেস রিলিজের মধ্য দিয়ে তা প্রত্যাখান করে জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট (এনডিএফ)। সোমবার ঘোষিত বাজেটকে গণবিরোধী বলে সুনামগঞ্জ শহরে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেছে এনডিএফ। স্থানীয় আলফাত উদ্দিন চত্বরে সমাবেশে সংগঠনের সভাপতি রতœাংকুর দাস জহরের সভাপতিত্বে বক্তব্য রাখেন সহ সভাপতি সুখেন্দু তালুকদার মিন্টু, সাধারণ সম্পাদক সাইফুল আলম ছদরুল,সুনামগঞ্জ জেলা হোটেল রেষ্টুরেন্ট মিষ্টি বেকারি শ্রমিক ইউনিয়ন এর সভাপতি লিলু মিয়া প্রমুখ। বক্তারা বলেন, সরকার আইএমএফ ও বিশ্বব্যাংকের নীতি নির্দেশে জাতীয় ও জনস্বার্থকে উপেক্ষা করে গতানুগতিক ধারায় সংসদে উত্থাপন করে ২০২৩-২৪ অর্থ-বছরের বাজেট। বিশ^ব্যাংক ও আইএমএফের প্রেসক্রিপশন অনুযায়ি সাম্রাজ্যবাদ ও তার দালালদের স্বার্থকে অগ্রাধিকার দিতে গিয়ে বরাবরই জাতীয় ও জনস্বার্থ বিরোধী বাজেট পেশ করে। প্রতিবছর দেশের কৃষি, শিল্প, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসহ জাতীয় ও জনস্বার্থের মত গুরত্বপূর্ণ বিষয়গুলো শুধু উপেক্ষিতই হয় না সাম্রাজ্যবাদী প্রভুর স্বার্থে লগ্নিপুঁজি ও দালালপুঁজির সর্বোচ্চ মুনাফার হাতিয়ারে পরিণত হচ্ছে। আমাদের দেশের বাজেট প্রণয়ন হয়ে থাকে লুটপাটের স্বার্থে। সরকার দলীয় এমপি-মন্ত্রী, নেতা-কর্মি, আমলারা যেন লুটপাটের এক মহা উৎসবে মিলিত হন। যার ফলে জনগণের জাতীয় ও জরুরী সমস্যাগুলোর স্থান পায়না বাজেটে। সাম্রাজ্যবাদী যুদ্ধ পরিস্থিতিতে বিশ্বব্যাপি যে খাদ্যসঙ্কট ও কর্মহীনতা বৃদ্ধি পাচ্ছে তা মোকাবেলায় প্রয়োজন ছিল বাজেটে কৃষক ও কৃষি খাতকে সর্বাধিক গুরত্ব দেওয়া, মূল্যস্ফীতি রোধ করা। কিন্তু বাজেটে তার জন্য কোন দিকনির্দেশনা নেই। কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনের জন্য কৃষি ভিত্তিক শিল্প ও ব্যবসা-বাণিজ্য প্রসারেও কোন সুনির্দিষ্ট কর্মপরিকল্পনা নেই। কৃষি খাতে যে অবৈধ মজুতদারি, বিপননে কৃত্রিম সঙ্কট সৃষ্টি তা মোকাবেলায় কোন কার্যকর পদক্ষেপ নেই। বাজেটের ভর্তুকি কমাতে মধ্যবিত্ত, নি¤œ-মধ্যবিত্ত দরিদ্র জণগনের উপর জবরদস্তি করে ভ্যাট-ট্যাক্সসহ বিভিন্ন ধরনের কর আদায় করা হবে। শিক্ষা উপকরণ, গৃহস্থলির সামগ্রী, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যসামগ্রী সহ জিনিসপত্রের দাম বাড়ানো হবে, যা ধনী-দরিদ্রের বৈষম্য বৃদ্ধি পেয়ে সামাজিক অস্থিরতাকে আরো বাড়িয়ে তুলবে। শেয়ার মার্কেট, অর্থ-পাচার রোধ, শিল্প কারখানা তৈরি সহ কোনো ধরনের নির্দেশনা নেই। বর্তমানে যেখানে লাগামহীন দ্রব্যমূল্যের কষাঘাতে জনজীবন বিপর্যস্থ। সেখানে সরকারের বাজেটের আকার বৃদ্ধি করে ভ্যাট- ট্যাক্স, কর বাড়ানো জণগনের উপর “ মরার উপর খাড়ার গাঁ” হয়ে দাঁড়াবে। অথচ সরকারের উচিত ছিল মানুষের দুঃখ কষ্ট লাঘবের জন্য প্রয়োজনীয় সুনির্দিষ্ট দিকনির্দেশনা মূলক পরিকল্পনা গ্রহন করা। সামগ্রিক বিচারে এ বাজেট হচ্ছে আইএমএফ ও বিশ^ব্যাংকের শর্ত পূরণের বাজেট। উন্নয়ন, মেগা মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নের নামে সাম্রাজ্যবাদ ও তার দালালদের স্বার্থ রক্ষাকারী গণবিরোধী বাজেট। জাতীয় গণতান্ত্রিক ফ্রন্ট গণ বিরোধী বাজেট প্রত্যাখান করে ছাত্র-কৃষক,শ্রমিক-শ্রমজীবী মানুষের কল্যাণে গণমুখী বাজেট কার্যকর করার দাবি জানান।