রবিবার, ১৯ জানুয়ারী ২০২৫, ১০:১২ অপরাহ্ন
শিরোনাম ::
দেশের উন্নয়ন ও মানুষের কল্যাণে বিএনপির নেতা কর্মীদের কাজ করতে হবে বনশ্রী আফতাব নগর প্রেসক্লাবের নবনির্বাচিত সভাপতি বাবলু পন্ডিত, সম্পাদক জহুরুল ইসলাম ইউনিয়ন ব্যাংক পিএলসি. এর নবগঠিত পরিচালনা পর্ষদের ১৫তম সভা মহানগরী জোন আন্তঃকলেজ ক্রীড়া প্রতিযোগিতায় মাইলস্টোন কলেজের কৃতিত্ব স্বাধীনতার ঘোষক শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের আজ ৮৯তম জন্মবার্ষিকী নগরকান্দায় দু’গ্রামবাসীর মধ্যে সংঘর্ষ, ওসি, সাংবাদিকসহ আহত- ৩০ কালীগঞ্জে নানা সংকটে গ্রাম আদালত সুফল পেতে প্রয়োজন কার্যকরী উদ্যোগ কটিয়াদীতে তারুণ্যের উৎসব উদযাপন, ফুটবল টুর্নামেন্টের ফাইনাল ম্যাচ মুন্সীগঞ্জে লুন্ঠিত মালামালসহ ৭ ডাকাত গ্রেফতার লক্ষ্মীপুর ন্যাশনাল আইডিয়াল স্কুল এন্ড কলেজে বর্ণিল পিঠা উৎসব

দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করুন

খবরপত্র ডেস্ক :
  • আপডেট সময় শুক্রবার, ১৬ জুন, ২০২৩

বিদ্যুৎ, পানি, গ্যাস সংকটসহ নিত্যপণ্যের ঊর্ধ্বগতিতে সাধারণ মানুষ দিশাহারা হয়ে পড়েছে। এ পরিস্থিতি থেকে তারা কবে পরিত্রাণ পাবে, তার নিশ্চয়তা নেই। এই মহাসংকটের মূল কারণ ডলার ক্রাইসিস। দেশে বহুদিন ধরে ডলার সংকট চলছে। এ কারণে আমদানি-রফতানি কমে গেছে। যে বিদ্যুত উৎপাদনের জন্য কয়লার প্রয়োজন, ডলার সংকটের কারণে তা আমদানি করতে পারছে না। শুধু কয়লা নয়, প্রয়োজনীয় অনেক পণ্য আমদানি করা যাচ্ছে না। আমদানির জন্য বৈদেশিক মুদ্রার যে রিজার্ভ থাকা প্রয়োজন তাতে এখন টান ধরেছে। সর্বত্রই এখন ডলার সংকট। অর্থনীতিবিদরা বলছেন, ডলার সংকটের কারণ বাংলাদেশ ব্যাংক তথা গর্ভনর এবং অর্থমন্ত্রণালয়ের ব্যাংকিং বিভাগের সচিবের অদূরদর্শিতা অনেকাংশে দায়ী। তারা সময়মতো কার্যকর পদক্ষেপ নিতে ব্যর্থ হয়েছেন। ডলার সংকটের আশঙ্কার কথা বহু আগে থেকে বলা হলেও তারা তা সামাল দেয়ার প্রয়োজনীয় পরিকল্পনা ও পদক্ষেপ নিতে পারেনি। পর্যবেক্ষকদের মতে, এই ব্যর্থতার তাদের জন্য জবাবদিহির আওতায় আনা জরুরি। প্রয়োজনে বিষয়টি জাতীয় সংসদে উত্থাপন করা যেতে পারে। তারা বলেছেন, যেখানে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আশঙ্কা প্রকাশ করে বলেছেন, আগামীতে পরিস্থিতি আরও খারাপ হতে পারে, সেখানে বাংলাদেশ ব্যাংকের গর্ভনর ও অর্থমন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট সচিবের দূরদর্শী হওয়া উচিৎ ছিল। বিশ্ব পরিস্থিতি বিবেচনায় নিয়ে আগামীতে কিভাবে সংকট সামাল দেয়া যায়, এ নিয়ে তারা আগাম পদক্ষেপ ও পরিকল্পনা নিতে পারতেন। তারা এ কাজ করতে চরম গাফিলতি করেছেন। প্রধানমন্ত্রী যখন আশঙ্কা করেন, পরিস্থিতি আরও খারাপের দিকে যেতে পারে, তখন তা উপেক্ষা করার সুযোগ থাকে না। এর অর্থ হচ্ছে, দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ সাধারণ মানুষের সামনে আরও বেশি দুর্দিন আসছে। কারণ, তিনি তথ্য-উপাত্ত নিয়েই কথা বলেন। গ্যাস, বিদ্যুৎ, পানি সংকটের কথা বাদ দিয়েও বলা যায়, জিনিসপত্রের ঊর্ধ্বগতির কারণে এখন তাদের দুবেলা খাবার জোগাড় করতে হিমশিম খেতে হচ্ছে। বাজারে গেলে তাদের মলিন মুখ ও হতাশার চিত্র দেখা যায়। যে অর্থ নিয়ে বাজারে যায়, তা দিয়ে ন্যূনতম প্রয়োজন মেটাতে পারছে না। স্ত্রী-সন্তান নিয়ে কিভাবে জীবনযাপন করবে, এ চিন্তায় তাদের পেরেশানির মধ্যে দিন কাটাতে হচ্ছে। অদূর ভবিষ্যতে যে তারা স্বস্তিতে দিনযাপন করতে পারবে, এ নিশ্চয়তা নেই। সরকার সংকট সামাল দেয়ার জন্য অনেক আগে থেকেই কৃচ্ছ্র সাধনের কথা বলে আসছে। তবে তা কতটা প্রতিপালিত হচ্ছে, তা নিয়ে সন্দেহের অবকাশ রয়েছে। প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীসহ অন্যান্য ক্ষেত্রে ব্যয় বেড়েই চলেছে। তাদের সমস্যার সমাধান ও চাহিদা মেটানোর ক্ষেত্রে সরকার খুব একটা কার্পণ্য করছে না। সাধারণ মানুষ যে চরম দুর্ভোগের মধ্যে দিনাতিপাত করছে, তা দূর করার কার্যকর কোনো পদক্ষেপ নেই। বরং এ কথা স্বীকার করে দায় সারছে, সাধারণ মানুষ দুর্ভোগে আছে, কষ্টে আছে। সমাধানের কোনো আশ্বাস দেয়া হচ্ছে না। এতে মানুষ আরও হতাশ হয়ে পড়ছে। তারা ঘোর অন্ধকার ছাড়া সামনে কিছু দেখতে পাচ্ছে না। এ পরিস্থিতিতে সরকারের উচিৎ গ্যাস, বিদ্যুৎ, পানি ও নিত্যপণ্যের ঊর্ধ্বগতি নিতান্ত সহনীয় পর্যায়ে রাখার জন্য বিশেষ পরিকল্পনা নেয়া। সকল সমস্যার মূলে যে ডলার সংকট তা কাটাতে উদ্যোগী হওয়া। এ ব্যাপারে দায়িত্বপ্রাপ্তদের অধিকতর দায়িত্বশীল হওয়ার বিকল্প নেই।
রাজধানীতে পানি, বিদ্যুৎ ও গ্যাস সংকট তীব্র আকার ধারন করেছে। মানুষ এক অসহনীয় পরিস্থিতির মধ্যে পড়ে হাঁসফাঁস করছে। কোনো প্রতিকার পাচ্ছে না। শুধু রাজধানীতেই নয়, দেশের অন্যান্য বিভাগ ও জেলার পরিস্থিতি আরও খারাপ হয়ে পড়েছে। তীব্র গরমে বিদ্যুতের লোডশেডিং এমন পর্যায়ে গেছে যে, যাদের জেনারেটরের ব্যবস্থা রয়েছে, তারাও তা দিয়ে সামাল দিতে পারছে না। ঘন্টার পর ঘন্টা বিদ্যুৎ না থাকায় জেনারেটর চালাতে গিয়ে জ্বালানি তেল কেনা তাদের জন্য ব্যয়বহুল হয়ে পড়েছে। বাসা-বাড়ি বাদ দিলেও লোডশেডিংয়ের কারণে অফিস-আদলতের কাজ বিঘিœত হচ্ছে। শিল্প-কারখানার উৎপাদন হ্রাস পেয়েছে। অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠানগুলোতে কাজের গতি কমে গেছে। এতে অর্থনৈতিক ক্ষতি যেমন হচ্ছে, তেমনি কর্মরতদের কাজের স্পৃহাও কমে যাচ্ছে। সাধারণত গ্রীস্মে পানির চাহিদা বৃদ্ধি পায়। প্রচ- গরমের কারণে পানির চাহিদা যেমন বেড়েছে, তেমনি সংকট দেখা দিয়েছে। পরিসংখ্যান অনুযায়ী, রাজধানীর শতকরা ৮২ ভাগ পানি প্রায় ৫৭৭টি পাম্পের মাধ্যমে মাটির নিচ থেকে উত্তোলন করা হয়। বাকি ১৮ ভাগ পানি ৪টি শোধনাগারের মাধ্যমে সরবরাহ করা হয়। ওয়াসার পানি সরবরাহের সক্ষমতা প্রতিদিন প্রায় ২৪২০ মিলিয়ন লিটার। সমস্যা দেখা দিয়েছে, এ পানি ওয়াসা সরবরাহ করতে পারছে না। ওয়াসা জানিয়েছে, ঘন ঘন লোডশেডিং এবং পর্যাপ্ত বিদ্যুতের অভাবে পাম্প চালাতে বিঘœ ঘটায় পানি সরবরাহে ব্যাঘাত ঘটছে। একদিকে বিদ্যুৎ সংকট, আরেক দিকে পানি ও গ্যাসের সংকটে রাজধানীসহ বিভিন্ন জেলার মানুষ চরম দুর্ভোগের মধ্যে পড়েছে। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের বাইরে যাওয়ার আগেই সঙ্কট সমাধানের উদ্যোগ নিতে হবে। আশা করি বিষয়টি সংশ্লিষ্টরা ভেবে দেখবেন এবং দ্রুত কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com