কাতার বিশ্বকাপের পর মরক্কোর কাছে প্রীতি ম্যাচে লজ্জার হার দেখেছিল ব্রাজিল। তার পর জয়ের দেখা পেয়েছে সর্বশেষ প্রীতি ম্যাচে গিনির বিপক্ষে। তাদের ৪-১ গোলে হারিয়ে আফ্রিকান চ্যাম্পিয়ন সেনেগালের মুখোমুখি হয় ৫ বারের বিশ্বচ্যাম্পিয়নরা। কিন্তু সাদিও মানে-কুলিবালিদের নিয়ে গড়া সোনালি প্রজন্মের দলটি বুঝিয়ে দিয়েছে কেন তারা আফ্রিকার সবচেয়ে সেরা দল। প্রীতি ম্যাচে ব্রাজিলকে তারা ৪-২ গোলে হারিয়ে দিয়েছে। তাতে সর্বশেষ ৪ ম্যাচের ৩টিতেই হার দেখলো ব্রাজিল।
২০১৫ সালের পর এই প্রথম দুই গোলের ব্যবধান রেখে ব্রাজিল হেরেছে। ২০১৫ সালে সর্বশেষ চিলির কাছে তারা ২-০ গোলে হেরেছিল। তাছাড়া ২০১৪ সালে বিশ্বকাপ সেমিফাইনালে জার্মানির কাছে ৭-১ গোলে বিধ্বস্ত হওয়ার পর চার গোল বা তার বেশি হজম করেনি কোনও ম্যাচেই। যে রাতে ব্রাজিল গিনিকে ৪-১ গোলে বিধ্বস্ত করে প্রস্তুতি সেরেছে। একই রাতে আফ্রিকান নেশনস কাপের (আফকন) বাছাইয়ে বেনিনের সঙ্গে ১-১ ড্র করেছে সেনেগাল। এই ম্যাচটি তাদের জন্য ছিল পরীক্ষার। লিসবনে প্রথমার্ধে দুই দলই সমান তালে লড়েছে। তবে ছন্দময় ফুটবলে ম্যাচের ১১ মিনিটে এগিয়ে যায় ব্রাজিল। বামপ্রান্ত থেকে ক্রস দেন ভিনিসিয়ুস জুনিয়র। রিয়াল মাদ্রিদ তারকার দারুণ সেই ক্রস থেকে হেড করে জাল কাঁপিয়েছেন লুকাস পাকেতা। ২৫ মিনিটে সমতা ফেরায় সেনেগালও। জ্যাকবের কাছ থেকে আসা ক্রস ঠিকমতো সামলাতে পারেনি ব্রাজিলের রক্ষণ। সুযোগ পেয়ে গোল মুখের সামনে থেকে দারুণ ভলিতে ব্রাজিলকে স্তব্ধ করে দেন দিয়ালো। যা রুখে দেওয়ার কোনও সুযোগ পাননি ব্রাজিল গোলকিপার এদেরসন। অবশ্য সেনেগালের সমতা ফেরানোর আগে পেনাল্টি পেয়েছিল ব্রাজিল। কিন্তু ভার রিভিউ দেখে রেফারি গুস্তাভো কোরেইয়া বাতিল করে দেন তা। এর দুই মিনিট আগে গোলের সুযোগ নষ্ট করেন রিচার্লিসন।
বিরতির পর ফিরতেই তালগোল পাকিয়ে ফেলে সেলেসাওরা। ৫০ মিনিটে আত্মঘাতী গোলে পিছিয়ে যায় ২-১ ব্যবধানে। মানের ক্রস খুঁজে নেয় দিয়ালোকে। যার হেড করা বল বিপদমুক্ত করতে গিয়ে নিজের জালে পাঠান মার্কুইনহোস। ৫৫ মিনিটে স্কোর ৩-১ করে দেন মানে। শুরুতে গোল মুখে এগিয়ে আসা গুয়েকে রুখে দেন এদেরসন। ফিরতি বল পড়ে দিয়ালোর কাছে। তিনি আবার বল দেন মানেকে। সুযোগ পেয়ে কোনাকুনি শটে জাল কাঁপান বায়ার্ন মিউনিখ তারকা। অবশ্য ৫৮ মিনিটে ব্যবধান ৩-২ এ নামিয়ে এনে নিজের ভুলের প্রায়শ্চিত্ত করেন মার্কুইনহোস। কর্নার থেকে পাওয়া বুক দিয়ে নামিয়ে শুরুতে নিয়ন্ত্রণে নেন ব্রাজিলের এই সেন্টার ব্যাক। তার পর দারুণ শটে ক্রসবারের নিচ দিয়ে লক্ষ্যভেদ করেছেন। তাতে অবশ্য হার এড়াতে পারেনি ব্রাজিল। শেষ দিকে ফাউলকে কেন্দ্র করে উত্তেজনা ছড়ায় দুই শিবিরে। হলুদ কার্ড দেখেন দুই দলের খেলোয়াড়রা। যোগ হওয়া সময়ে বক্সের মধ্যে সেনেগালের খেলোয়াড়কে ফেলে দেন এদেরসন। তাতে পেনাল্টি পায় সেনেগাল। ৯০+৭ মিনিটে স্পট কিক থেকে জোড়া গোল আদায় করে নেন সাদিও মানে।