চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংকে স্বৈরশাসক আখ্যা দিয়ে করা নিজের মন্তব্যে অটল রয়েছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন। বৃহস্পতিবার (২২ জুন) যুক্তরাষ্ট্র সফররত ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর সঙ্গে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে কথা বলেন বাইডেন। সেসময় তিনি বলেন, চীন সম্পর্কে তার ওই বক্তব্য এমন কিছু নয় ও তাতে কোনো পরিবর্তন আসবে না।
বাইডেন আরও বলেন, আমি আশা করি, সামনের কোনো না কোনো দিন শি জিনপিংয়ের সঙ্গে আমার দেখা হবে ও আমি মনে করি, তাকে নিয়ে করা আমার মন্তব্যের কোনো বাস্তব পরিণতি থাকবে না।
গতকাল শুক্রবার (২৩ জুন) কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার প্রতিবেদনে বলা হয়, কয়েকদিন আগেই চীনা প্রেসিডেন্টকে স্বৈরশাসক বা একনায়ক হিসেবে আখ্যা দিয়েছিলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট। তা নিয়ে ব্যাপক সমালোচনাও করেছিল চীন। এরপরও নিজের বক্তব্যে অটল রয়েছেন বাইডেন। গত সোমবার (২২ জুন) ক্যালিফোর্নিয়ায় তহবিল সংগ্রহের এক অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে বাইডেন বলেন, চলতি বছরের শুরুর দিকে যুক্তরাষ্ট্রের আকাশে সন্দেহজনক চীনা গুপ্তচর বেলুন শনাক্ত হওয়ার পর অত্যন্ত বিব্রতকর পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছিলেন শি। এ বিষয়ে বাইডেন বলেন, গুপ্তচর সরঞ্জামে ভরা বেলুনটিকে ভূপাতিত করায় শি অত্যন্ত বিরক্ত হয়েছিলেন। সেসময় তিনি আসলে জানতেন না, বেলুনটি যুক্তরাষ্ট্রের আকাশে পৌঁছেছে। ‘স্বৈরশাসকদের’ জন্য বিষয়টি বেশ বিব্রতকর ছিল।
বেইজিংয়ে চীনা প্রেসিডেন্ট শি জিনপিংয়ের সঙ্গে মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিংকেন দেখা করার একদিন পরই এমন মন্তব্য করেছিলেন জো বাইডেন। দুই দেশের মধ্যে উত্তেজনা কমাতে উচ্চ পর্যায়ের বৈঠকের মধ্যে এমন মন্তব্য অনাকাঙ্ক্ষিত বলে দাবি করে চীন।
এদিকে, বৃহস্পতিবার ওয়াশিংটনে নিযুক্ত চীনের দূতাবাস বলেছে, প্রেসিডেন্ট বাইডেনের মন্তব্যের বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক প্রতিবাদ জানিয়েছে তারা। এক বিবৃতিতে দূতাবাস বলে, চীনের রাজনৈতিক ব্যবস্থা ও শীর্ষ নেতা সম্পর্কে বাইডেনের এমন দায়িত্বজ্ঞানহীন মন্তব্যের কারণে সম্পর্ক উন্নয়নের ক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রের আন্তরিকতা নিয়ে প্রশ্ন ওঠা স্বাভাবিক। চীনা সরকার ও জনগণ নিজেদের শীর্ষ নেতার বিরুদ্ধে কোনো ধরনের রাজনৈতিক উস্কানি মেনে নেবে না। এর আগে চীনা রাষ্ট্রদূত জি ফেং বুধবার মার্কিন ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে করে বলেছিলেন, প্রেসিডেন্ট বাইডেন যা বলেছেন তার নেতিবাচক প্রভাব পড়ার আগেই আন্তরিক পদক্ষেপ নেওয়া উচিত। তা না হলে যুক্তরাষ্ট্রকে এর সব পরিণতি ভোগ করতে হবে। এর জবাবে বাইডেন প্রশাসন বলে, আমাদের প্রেসিডেন্ট বিশ্বের গণতন্ত্র ও স্বৈর শাসনের মধ্যে পার্থক্য বোঝাতে একটি দিক তুলে ধরেছেন। তাদের দাবি, বেইজিং আমাদের কাছ থেকে ক্ষমা প্রার্থনা আশা করছে কি না বা কেমন পরিণতি হতে পারে, তা স্পষ্ট নয়। বৃহস্পতিবার একটি পৃথক সংবাদ সম্মেলনে মার্কিন অর্থমন্ত্রী জ্যানেট ইয়েলেন বলেন, প্রেসিডেন্টের বক্তব্যের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে বলতে চাই, আমরা দুজনেই বিশ্বাস করি, চীনের সঙ্গে যোগাযোগ বজায় রাখা গুরুত্বপূর্ণ। যতটা সম্ভব আমাদের একসঙ্গে কাজ করতে হবে। সূত্র: আল জাজিরা