মঙ্গলবার, ০৫ নভেম্বর ২০২৪, ০৭:৪০ অপরাহ্ন
শিরোনাম ::
বিশেষ সিএসআর তহবিলের আওতায় বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়কে গবেষণা খাতে আর্থিক সহায়তা প্রদান করলো সাউথইস্ট ব্যাংক ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী ব্যাংকের ব্যবসায় উন্নয়ন সম্মেলন ইসলামী ব্যাংকের বোর্ড সভা  ডেঙ্গুতে আরো ৬ জনের মৃত্যু, হাসপাতালে ভর্তি ১২৯৭ জাতীয় গ্রিডে যুক্ত হলো ৮ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস প্রধান উপদেষ্টাকে সংস্কার বিষয়ে অগ্রগতি জানালেন কমিশনপ্রধানেরা বৃটেনে অল পার্টি পার্লামেন্টারি গ্রুপের চেয়ারম্যান নির্বাচিত হলেন আপসানা হত্যা-গণহত্যাসহ গুমের অভিযোগে ট্রাইব্যুনালে ৮০টিরও বেশি অভিযোগ ৪ মহানগর ও ৬ জেলায় কমিটি অনুমোদন বিএনপির মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ফল জানা যাবে কখন?

ড. ইউনূস কোনো প্রতিষ্ঠান থেকেই বেতন বা পারিশ্রমিক নেন না: গ্রামীণ টেলিকম

খবরপত্র ডেস্ক:
  • আপডেট সময় বুধবার, ৫ জুলাই, ২০২৩

গ্রামীণ টেলিকম বা অন্য কোনো প্রতিষ্ঠান থেকে বেতন, পারিশ্রমিক বা ফি গ্রহণ করেন না নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ড. মুহাম্মদ ইউনূস। কোনো প্রতিষ্ঠানে তার মালিকানাও নেই। তাই কোনো প্রতিষ্ঠান থেকে তিনি লভ্যাংশও গ্রহণ করেন না। গ্রামীণ টেলিকম এর পক্ষ থেকে এক প্রতিবাদপত্রে এসব কথা বলা হয়েছে।
একটি দৈনিক পত্রিকায় গত ২৫শে জুন প্রকাশিত ‘ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে দন্ডনীয় অপরাধের অভিযোগ’ শিরোনামে প্রকাশিত সংবাদের প্রতিবাদে প্রতিষ্ঠানের ব্যবস্থাপনা পরিচালক নাজমুল ইসলাম প্রেরিত প্রতিবাদপত্রে বলা হয়, গ্রামীণ টেলিকম কোম্পানী আইনের ২৮ ধারায় নিবন্ধিত প্রতিষ্ঠান। এর লভ্যাংশ বিতরণযোগ্য নয়। তাই এ পর্যন্ত কোনো লভ্যাংশ গ্রামীণ টেলিকম বিতরণ করে নাই। সেজন্য লাইসেন্সের মর্যাদা হারানোর প্রশ্নই উঠে না। প্রতিবেদনে গ্রামীণ টেলিকম কর্তৃক জঔঝঈ-তে বার্ষিক রিটার্ন বিবৃতিতে অসত্য তথ্য দেয়ার যে অভিযোগ আনা হয়েছে তা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। গ্রামীণ পরিবারের অলাভজনক দুটি প্রতিষ্ঠান, গ্রামীণ কল্যাণ ও গ্রামীণ টেলিকম এর সমস্ত লেনদেন বছরভিত্তিক স্বনামধন্য সার্টিফাইড বহিঃনিরীক্ষা ফার্ম দ্বারা নিরীক্ষিত হয়ে থাকে।
গ্রামীণ টেলিকম গ্রামীণফোনের ইক্যুয়িটি বিনিয়োগের জন্য গ্রামীণ কল্যাণ থেকে অর্থ গ্রহণ করে। অর্থগ্রহণের চুক্তি অনুযায়ী গ্রামীণ ফোন থেকে লভ্যাংশ বাবদ যে অর্থ পাওয়া যায় তা আনুপাতিক হারে গ্রামীণ কল্যাণকে প্রদান করা হয়েছে। যা জঔঝঈ-তে বার্ষিক রিটার্ন আকারে দাখিল করা হয়েছে, কোনো অসত্য রিটার্ন দাখিল করা হয়নি।
এ কারণে কোম্পানী আইনের ৩৯৭ ধারায় অসত্য বিবৃতি দেয়ার জন্য শাস্তির কোনো প্রশ্নই আসে না। আদালতে বিচারাধীন মামলার রায় নিজের পক্ষে নেয়ার জন্য ঘুষ দেয়ার যে অভিযোগ করা হয়েছে তা অমূলক ও ভিত্তিহীন। এ ধরনের অভিযোগের মাধ্যমে মহামান্য আদালতকে হেয় প্রতিপন্ন করা হয়েছে।
ড. ইউনূসের বিরুদ্ধে শ্রমিক অধিকার ও মানবাধিকারসহ নানা ধরনের নিপীড়নমূলক কর্মকান্ড চালানোর অভিযোগ আনা হয়েছে। উল্লেখ্য যে, গ্রামীণ এর প্রতিষ্ঠান সমূহ তার নিজস্ব নীতিমালা প্রণয়নের মাধ্যমে ব্যবসায়িক কার্যক্রম পরিচালনা করে । এই নীতিমালা শ্রম আইন অনুসারে অনুমোদনের জন্য সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের দপ্তরে দাখিল করা আছে। গ্রামীণ গ্রুপের প্রত্যেকের সার্ভিস রুল আছে এবং সে সমস্ত সার্ভিস রুল অনুযায়ী তারা পরিচালিত হয়ে থাকে। শ্রমিকদের বেতনভাতাসহ অন্যান্য সুবিধাদি গ্রামীণ গ্রুপের নিজস্ব সার্ভিস রুলের আলোকে নিয়মিত প্রদান করা হয় যা শ্রম আইনে প্রদত্ত সুবিধাদি থেকে বেশি। এখানে কোনোক্রমেই অত্যাচার বা নিপীড়নের কোনো বিষয় গ্রামীণ প্রতিষ্ঠানে ঘটে নাই।
দেশে ড. ইউনূস প্রতিষ্ঠিত যে সকল প্রতিষ্ঠানসমূহ আছে, তারা নিয়মিত সরকারকে আয়কর প্রদান ও ভ্যাট জমা করে। এদের মধ্যে গ্রামীণ ফোনকে বাদ দিয়ে প্রথম সারির ১০টি প্রতিষ্ঠান এ পর্যন্ত পাঁচ হাজার কোটি টাকার বেশি আয়কর প্রদান ও ভ্যাট জমা করেছে। প্রতিবাদপত্রে বলা হয়, ড. ইউনূস কোনো প্রতিষ্ঠান থেকেই কোনো বেতন বা পারিশ্রমিক বা ফি বা আর্থিক সুবিধা গ্রহণ করেন না। যেহেতু কোনো প্রতিষ্ঠানে তার কোনো মালিকানা নাই তাই কোনো লভ্যাংশ এদের কাছ থেকে তিনি পান না।
ড. ইউনূস বহুবার বলেছেন তিনি কোনো কিছুরই মালিক হতে চান না। তিনি মালিকানামুক্ত ব্যক্তি হিসেবে জীবন কাটাতে চান। তার মালিকানায় দেশে বা বিদেশে কোনো বাড়ি, গাড়ী, জমি বা শেয়ার নাই। অথচ প্রতিবেদনে বলা হয়েছে তার পাচার করা হাজার হাজার কোটি টাকা দিয়ে নিজের ব্যক্তিগত নামে বিভিন্ন দেশে সম্পত্তি কেনা সহ নানা রমরমা ব্যবসা করছেন। প্রতিবেদক যদি অন্তত দুই একটা ব্যবসা বা সম্পত্তির নাম উল্লেখ করতেন তাহলে ড. ইউনূসের বক্তব্য প্রশ্নের সম্মুখীন হতো।
প্রতিবেদক বলেছেন এর (তার পাচার করা হাজার হাজার কোটি টাকার) কিছু অংশ বিদেশে বাংলাদেশের জাতীয় স্বার্থবিরোধী কাজে লবিস্ট এর পেছনে ঢেলেছেন। কত টাকা দিয়েছেন সেটার কথা না হয় বাদই দিলাম, তবে কিছু কষ্ট করে যদি তিনি অন্তত দু-একটা লবিস্ট এর নাম উল্লেখ করতেন আমরা ধরে নিতাম যে প্রতিবেদক তথ্য সংগ্রহের জন্য কিছুটা হলেও চেষ্টা করেছেন। বিভিন্ন দেশে ড. ইউনূসের কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে তার নামে বহু প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠেছে। আরো বহু প্রতিষ্ঠান ক্রমাগতভাবে জন্ম নিচ্ছে। বলাবাহুল্য এসব কোনো প্রতিষ্ঠানে তার কোনো মালিকানা নেই। এসব প্রতিষ্ঠানে সময় দেওয়ার জন্য এদের কাছ থেকে তিনি কোনো বেতন বা পারিশ্রমিক নেন না। সব প্রতিষ্ঠান থেকে তার নাম ব্যবহার করার জন্য প্রতি বছর সামান্য ফি ইউনূস সেন্টারকে পাঠিয়ে থাকে। এর ফলে দেশের সামান্য হলেও বৈদেশিক মুদ্রা অর্জন হয়। মোট কথা হলো ড. ইউনূস বাংলাদেশের কোনো অর্থ বিদেশে পাচার করছেন না বরং বিদেশ থেকে অর্জিত টাকা বৈধ ভাবে আয় করে নিয়ে আসেন।
প্রকাশিত সংবাদে বলা হয়েছে, হাজার হাজার কোটি পাচার করেছেন ড. ইউনূস। কার টাকা পাচার করলেন ড. ইউনূস? নিজের অর্জন করা সব টাকা তিনি দেশে এনেছেন ব্যাংকিং চ্যানেলের মাধ্যমে। সরকারের কাছে সব তথ্য জানা আছে। নিজের টাকা দেশে এনে আবার পাচার করার কোনো প্রশ্ন উঠছে না। তিনি যদি গ্রামীণ ব্যাংকের হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাঠিয়ে থাকেন তাহলে সেটা বের করা তো এখন খুব সোজা। বর্তমানে গ্রামীণ ব্যাংক সরাসরি সরকারের তত্ত্বাবধানে চলে। কাজেই সেই সমস্ত তথ্য গ্রামীণ ব্যাংক থেকে এখন সহজে পাওয়া যাবার কথা। গ্রামীণ ব্যাংক এ পর্যন্ত সেরকম তথ্য জনসম্মুখে প্রকাশ করে নাই। তারা প্রকাশ করে দিলেই সব পরিষ্কার হয়ে যেত। গ্রামীণ ব্যাংক থেকে টাকা কোথায় পাচার করা হলো সেটাও জানা যেতো। পরবর্তীতে ড. ইউনূসের প্রতিষ্ঠিত অন্যান্য প্রতিষ্ঠান থেকে যদি টাকা পাচার করে থাকেন তাহলে সেসব প্রতিষ্ঠানের হিসাব থেকে এই টাকা উধাও হয়ে যাওয়ার কথা। এই প্রতিষ্ঠানসমূহের হিসাব বিবরণী অডিট ফামের্র অডিট রিপোর্টসহ বার্ষিক হিসাব বিবরণী পরীক্ষা করলেই প্রকৃত তথ্য পাওয়া যাবে।
কোম্পানী আইনে ৩৯৭ ধারায় অপরাধ সংঘটনের কারণে গ্রামীণ টেলিকমের চেয়ারম্যান কিংবা এ প্রতিষ্ঠানের কোনো দায়িত্বশীল ব্যক্তির বিরুদ্ধে কোনো মামলা হয়নি। অথচ প্রতিবেদক মামলা হয়েছে বলে দাবি করেছেন। এ বিষয়ে মামলা হলে তাদের অপরাধ দালিলিকভাবে প্রমাণিত হবে। গ্রামীণ গ্রুপের সকল প্রতিষ্ঠানই দেশের প্রচলিত আইনে পরিচালিত হচ্ছে। এখানে আইনের কোনো প্রকার ব্যত্যয় ঘটেনি। প্রতিবেদক তার নিজস্ব মতামত দিয়ে একটি মনগড়া রিপোর্ট তৈরি করে জনমনে বিভ্রান্তি ছড়ানোর অপচেষ্টা করেছেন। প্রতিবেদক মহোদয় কোন আইন ভঙ্গের জন্য ড. ইউনূস এর কত বছর সাজা হবে সেগুলো সবিস্তারে বর্ণনা করেছেন। আদালতকে বিচার করার সুযোগ দেওয়ার জন্য তিনি মোটেই অপেক্ষা করতে চান না।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com