ইন্টারনেট আধুনিক জীবনের একটি অবিচ্ছেদ্য অংশ। চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের যুগে ইন্টারনেটের ব্যবহার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ, তাতেও কোন সন্দেহ নেই। বিভিন্ন উদ্দেশ্যেই বিশ্বের অধিকাংশ মানুষ দিনরাত ইন্টারনেট ব্যবহার করছে। কিন্ত আমরা হয়তোবা বুঝতেই পারি না যে, ইন্টারনেট ব্যবহার করা কেবল আমাদের অভ্যাস নয়, একটি আসক্তিতে পরিণত হয়েছে। এই আসক্তির কারণেই আমরা সারা বিশ্বের মানুষের মধ্যে মানসিক ব্যাধির অত্যাধিক বৃদ্ধি লক্ষ্য করি। এটি একটি মনস্তাত্ত্বিক নির্ভরতা, যা জীবনের বিভিন্ন ক্রিয়াকলাপের প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করে। শুধু ইন্টারনেট আসক্তি নয়, ইন্টারনেট গেমিং ডিসঅর্ডার (আইজিডি) আমাদের মনস্তাত্ত্বিক ক্রিয়াকলাপের উপরও নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। অত্যধিক ইন্টারনেট ব্যবহার অনেক মানসিক এবং মনোসামাজিক ব্যাধির সাথে সম্পর্কিত। এতে আমাদের শিক্ষার্থী সমাজ বেশি আক্রান্ত হচ্ছে। সম্প্রতি একটি সমীক্ষায় দেখা গেছে, মানসিকভাবে অসুস্থ শিক্ষার্থীদের ৮৬ শতাংশই শুধু অনিয়ন্ত্রিত ইন্টারনেট ব্যবহারের কারণে মানসিক স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে পড়ছে এবং ৭২.২ শতাংশ জীবনের কোনো না কোনো সময়ে মানসিক সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছে।
সম্প্রতি আঁচল ফাউন্ডেশন আয়োজিত ‘শিক্ষার্থীদের মানসিক স্বাস্থ্যের ওপর ইন্টারনেট ব্যবহারের প্রভাব: সতর্ক হওয়া জরুরি’ শীর্ষক সমীক্ষায় ১৭৭৩ জন অংশগ্রহণকারীর মধ্যে একটি সূক্ষ্ম জরিপ চালানো হয়, যাদের মধ্যে ছিলো ৪৯.৫ শতাংশ নারী, ৪৯.৭ শতাংশ পুরুষ এবং ০.৮ শতাংশ তৃতীয় লিঙ্গের শিক্ষার্থী। এদের মধ্যে ১৬ থেকে ১৯ বছরের শিক্ষার্থী ১৩.২ শতাংশ, ২০ থেকে ২৫ বছরের শিক্ষার্থী ৭৬.৩ শতাংশ এবং ২৬ থেকে ৩০ বছরের শিক্ষার্থী ছিলো ১০.৫ শতাংশ। সমীক্ষায় অংশ নেওয়া শিক্ষার্থীদের মধ্যে ১৮.৬ শতাংশ কলেজ পড়ুয়া, ৬৪.৩ শতাংশ স্নাতক পর্যায়ের শিক্ষার্থী, ৮.৪ শতাংশ স্নাতকোত্তর পর্যায়ের শিক্ষার্থী এবং ৮.৭ শতাংশ চাকরি প্রত্যাশী।
উক্ত সমীক্ষায় এটিও দেখা যায়, ৩৮.২ শতাংশ শিক্ষার্থী পড়াশোনার বিষয়ে ইন্টারনেট ব্যবহার করে। ৬৭.৫ শতাংশ অবসর সময় কাটাতে, ৪২.৯ শতাংশ যোগাযোগের প্রয়োজনে, ২৪.৯ শতাংশ অনলাইন গেম খেলতে বা ভিডিও দেখতে, ১২.৬ শতাংশ অনলাইনে কেনাকাটা করতে এবং ৮ শতাংশ অর্থনৈতিক প্রয়োজনে ইন্টারনেট ব্যবহার করে থাকে। সমীক্ষা মোতাবেক, আমাদের তরুণ শিক্ষার্থীদের বড় অংশই অফলপ্রসূ কাজে ইন্টারনেটে বেশি সময় ব্যয় করে। দিনে ১১ ঘণ্টার ওপরে অনলাইনে থাকে ৬.২ শতাংশ শিক্ষার্থী। ১৯.৫ শতাংশ শিক্ষার্থী ৮ থেকে ১০ ঘণ্টার মতো ইন্টারনেট ব্যবহার করে। ৫ থেকে ৭ ঘণ্টা ইন্টারনেটে থাকে ৩৬.৬ শতাংশ শিক্ষার্থী এবং ৩২.৩ শতাংশ ব্যবহার করে ২ থেকে ৪ ঘণ্টার মতো।
সুতরাং এটি খুবই স্পষ্ট যে, ইন্টারনেট আসক্তিতে শিক্ষার্থীরা এত বেশি বিপদাপন্ন হয়ে পড়েছে যে, তাদের অধিকাংশই এখন নানাবিধ মানসিক সমস্যার সম্মুখীন হচ্ছে। সম্প্রতি আরেকটি জরিপে অংশ নেয়া শিক্ষার্থীদের মধ্যে ৭২.২ শতাংশ শিক্ষার্থী জানিয়েছে, তারা তাদের জীবনে কখনো না কখনো মানসিক সমস্যার মুখোমুখি হয়েছে। এই মানসিক সমস্যার জন্য ৮৫.৯ শতাংশ শিক্ষার্থী ইন্টারনেটকে দায়ী করেছে। উক্ত জরিপে জানা যায়, ইন্টারনেটের কারণে ৫৭.২ শতাংশ শিক্ষার্থীর স্বাভাবিক জীবনে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে। তাদের মধ্যে ৫৯.৬ শতাংশ মনে করে ইন্টারনেটে সময় ব্যয় তাদের পড়াশোনার ক্ষতি করছে। ১৭.৮ শতাংশ শিক্ষার্থী ইন্টারনেটে পর্ন দেখা, সাইবার ক্রাইম, বাজি ধরা ও বুলিংসহ অপ্রীতিকর কাজে যুক্ত হয়ে পড়েছে। ২৩ শতাংশ অন্তর্মুখী হয়ে পড়েছে, ৩৫.৬ শতাংশ ডিপ্রেশনসহ বিভিন্ন ধরনের মানসিক চাপ অনুভব করেছে এবং ২০.৩ শতাংশ সামাজিকভাবে বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। জরিপে অংশগ্রহণকারীদের ২৩.৬ শতাংশ শিক্ষার্থী জানিয়েছে, তাদের বাস্তব জীবনের পাশাপাশি আরেকটি ভার্চুয়াল জগত তৈরি হয়েছে। ১৯.৫ শতাংশ জানিয়েছে মন খুলে কথা বলার মত মানুষ পাচ্ছে না। এছাড়াও ৯.৯ শতাংশ জানায়, তারা এর প্রভাবে সামাজিকভাবে মিশতে পারছে না।
সোশ্যাল মিডিয়া ঘাঁটতে ঘাঁটতে আমাদের শিক্ষার্থীরা মনের অজান্তে কীভাবে ইন্টারনেট আসক্তিতে পড়ছে, তা আমরা বুঝতেই পারছি না। ইন্টারনেট আসক্তিতে মানসিক ব্যাধি সৃষ্টির অনেক কারণ রয়েছে। যখন কারোর ইন্টারনেট আসক্তি থাকে, তখন তার মস্তিষ্ক এমনভাবে কাজ শুরু করে যেন একজন আসক্তের মস্তিষ্ক কাজ করছে। ইন্টারনেট নির্ভরতা অ্যালকোহল বা নেশাজাতীয় ড্রাগ নির্ভরতার থেকেও মারাত্মক। এটি শিক্ষার্থীদের মস্তিষ্কের প্রিফ্রন্টাল অঞ্চলকে প্রভাবিত করে। ফলে তাদের জন্য বিশদ মনে রাখা, পড়ালেখায় মনোযোগ দেওয়া, গুরুত্বপূর্ণ বিষয়ে ফোকাস করা এবং অগ্রাধিকার ভিত্তিতে কোন কাজ করা কঠিন হয়ে পড়ে। আসক্তিমূলক আচরণ ডোপামাইন নিঃসরণকে এমনভাবে ট্রিগার করে যেন তারা একরকম আনন্দ পেতে এর থেকে আরও বেশি ইন্টারনেটের প্রতি আসক্ত হয়ে পড়ে।
ইন্টারনেট আসক্তিতে শিক্ষার্থীদের পরিবর্তনশীল আচরণের শক্তি বৃদ্ধি পায়। ফলে তারা ইন্টারনেট ভিত্তিক গেম, কেনাকাটা বা জুয়া খেলায় মত্ত হয়ে উঠছে এবং এক পর্যায়ে তারা এ থেকে ভারচুয়াল পুরস্কারও জিতে নিচ্ছে। এ আসক্তির কারণে তারা এতটাই সোশ্যাল মিডিয়াতে সময় ব্যয় করছে যে, তারা সর্বক্ষণই বন্ধুদের সাথে আড্ডায় লিপ্ত থাকছে।
ইন্টারনেট নির্ভরতায় শিক্ষার্থীদের জৈবিক প্রবণতা আরো শক্তিশালী হয়। এতে তাদের ডোপামিন এবং সেরোটোনিনের নি¤œ মাত্রার প্রভাব থাকে, যার জন্য তাদেরকে আরো আনন্দ পেতে শক্তি জোগায় এবং আচরণিক পরিবর্তন সৃষ্টি করে। যদি কোন শিক্ষার্থী উদবিঘœতা ও বিষণ্ণতায় জীবনযাপন করে, তাহলে তার মধ্যে যথেষ্ট অসামাজিক আচরণের সম্ভাবনা থাকে, তার একাকিত্ব ভালো লাগে কিংবা তার মধ্যে ঔদাসন্য প্রকাশ পায়। ফলে সে তার একাকিত্ব ও উদাসীনতা কাটাতে ইন্টারনেটনির্ভর কাজে যুক্ত থাকতে বেশি পছন্দ করে।
বিষয়টি বিস্ময়কর মনে হলেও সত্য যে, আমরা যদি আমাদের চারপাশে তাকাই তাহলে দেখতে পাবো যে, প্রায় সকল শিক্ষার্থীই তাদের ফোনের স্ক্রিনে তাকিয়ে আছে বা সেটি নিয়েই তারা বেশি ব্যস্ত থাকছে। এতে বুঝা যায় যে, তাদের অধিকাংশই ইন্টারনেট অ্যাডিকশন ডিসঅর্ডারে ভুগছে। এটি এমন একটি ব্যাধি, যা প্রথমে শনাক্ত করা একটু কঠিন হলেও, কতিপয় লক্ষণ দেখে বুঝা যায় যে, তারা ইন্টারনেট আসক্ত। বিশেষ কয়েকটি লক্ষণের মধ্যে নি¤েœাক্তগুলি অন্যতম; ক। উদ্বেগ ও বিষণœতা; খ। অপরাধবোধ; গ। অগ্রাধিকার দিতে বা সময়সূচির ট্র্যাক রাখতে অক্ষমতা; ঘ। বিচ্ছিন্নতার প্রবণতা এবং মিথষ্ক্রিয়ার অভাব; ঙ। সময়বোধ হারানো; চ। কাজে বিলম্ব করা বা কাজ এড়িয়ে চলা; ছ। সকল ব্যাপারে ক্ষিপ্রতা প্রদর্শন; জ। ঘন ঘন মেজাজ পরিবর্তন; ঝ। ভয় ভয় অনুভব করা; ট। দৈনন্দিন কাজে একঘেয়েমি ভাব থাকা এবং ঠ। কর্মক্ষমতা কমে যাওয়া ইত্যাদি।
এছাড়াও ইন্টারনেট আসক্তির কারণে যেমন মানসিক স্বাস্থ্যের ঝুঁকি রয়েছে, তেমনি শারীরিক স্বাস্থ্যেরও অনেক ঝুঁকি রয়েছে। নি¤েœর কয়েকটি লক্ষণ দেখে তা সহজে বুঝা যাবে; ক। পিঠে ও ঘাড়ে ব্যথা; খ। কারপাল টানেল সিন্ড্রোম; গ। হাত ও বাহুতে অসাড়তা এবং দুর্বলতা; ঘ। ঘন ঘন মাথাব্যাথা; ঙ। অনিদ্রা ও ঝিমুনি; চ। পুষ্টির অভাব; ছ। স্ক্রিন টাইম বাড়ানোর কারণে চোখ শুষ্ক এবং অন্যান্য দৃষ্টি সমস্যা; জ। ওজন বৃদ্ধি বা হ্রাস এবং ঝ। শারীরিক অক্ষমতা ও দুর্বলতা সৃষ্টি হওয়া। ইন্টারনেট নির্ভর লেখাপড়ার অজুহাতে শিক্ষার্থীদের বড় একটা অংশ চিত্তবিনোদনের উদ্দেশ্যে ইন্টারনেট ব্যবহার করছে। দেশে বিনোদনের ক্ষেত্রগুলো সঙ্কীর্ণ থাকায় পর্নো দেখা, অনলাইনে গেম খেলা, অনলাইনে জুয়া ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভিডিও দেখার কাজে শিক্ষার্থীদের একটা অংশ যুক্ত থাকছে। এর ফলে পড়াশোনায় যেমন নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে, তেমনি সামাজিক সম্পর্কেও পিছিয়ে পড়ছে তারা।
তথ্য প্রযুক্তি বিশ্লেষকগণ মনে করেন যে, আমাদের দেশে ইন্টারনেট ভিত্তিক প্রডাক্টগুলো মানুষকে আসক্ত করতেই তৈরি হয়। ফেসবুক চায় সারাক্ষণ এটা মানুষ ব্যবহার করুক। কারণ, এটা তাদের ব্যবসা। ইন্সটাগ্রাম চায়, সারাক্ষণ মানুষ ছবি ও ভিডিও আপলোড করুক। লিংকড-ইন চায়, শিক্ষিতরা সারাদিন ক্যারিয়ারের সন্ধানে সময় ব্যয় করুক। তাহলে তাদের ব্যবসা বাড়বে এবং মানুষকে আসক্ত করতে তারা এতোদ্দেশ্যে অর্থ বিনিয়োগ করে গবেষণা করে।
ইন্টারনেট আসক্তির মারাত্মক প্রভাব আমাদের শিক্ষার্থীদের মানসিকভাবে যে ক্ষতি সাধন করছে, তাতে এর প্রতিকার নাহলে অচিরেই আমাদের ভবিষ্যত প্রজন্ম মেধাশূন্য হয়ে পড়বে। এজন্য চাই সঠিক সময়ে সঠিক চিকিৎসা ও সমাধান। শারীরিক ব্যাধি নিরাময়ে যেমন এর ব্যবহারযোগ্য ট্যাবলেট বা সিরাপ রয়েছে, ইন্টারনেট আসক্তিতে সৃষ্ট মানসিক ব্যাধি উপশমে কিন্তু ভক্ষণযোগ্য দৃশ্যমান কোন মেডিসিন নেই। এ ব্যাধি নিরাময়ে প্রয়োজন শিক্ষার্থীদের অবিচল বিশ্বাস যে, তারা যেন ইন্টারনেটের অপব্যবহার না করে। প্রয়োজনের অতিরিক্ত সময় যেন তারা ইন্টারনেট ভিত্তিক ডিভাইসে সময় না কাটায়। ইতিবাচক উপায়ে তাদের আচরণে একটি উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন আনতে হবে। এজন্য কিছু কিছু ওয়েবসাইটে তাদের অ্যাক্সেস সীমিত করতে তারা উপকারী সফটওয়্যার ব্যবহার করতে পারে। শারীরিক কার্যকলাপ ইন্টারনেট আসক্তির চিকিৎসার ক্ষেত্রেও একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এজন্য অবশ্যই ধ্যান-জ্ঞান করে রুটিন মাফিক বিষয়ভিত্তিক বই-পুস্তক পড়াশোনা করতে হবে, লাইব্রেরিতে বই পড়ার কাজে সময় দিতে হবে, বন্ধু-বান্ধব ও পরিবারের সাথে বেশি সময় কাটাতে হবে, ইনডোর বা আউটডোর ক্রীড়াঙ্গনে নিয়মিত খেলা করতে হবে এবং শ্রেণি কার্যক্রমসহ অন্যান্য সহপাঠ্যক্রমিক কাজে অংশগ্রহণ করতে হবে। এছাড়া ইন্টারনেটের বিকল্প হিসেবে বিনোদনধর্মী কিছু গল্প বা উপন্যাস পড়লেও ইন্টারনেট আসক্তি রোধ করা সম্ভব হতে পারে। তথ্য-প্রযুক্তিবীদগণ পরামর্শ দিয়েছেন এভাবে, ‘ইন্টারনেট ছাড়া যেহেতু প্রযুক্তিগত শিক্ষার উন্নয়ন সম্ভব নয়, সেহেতু ইন্টারনেট ব্যবহার করার শুরুতেই শিক্ষার্থীদের এর সকল দিক সম্পর্কে সচেতন হতে হবে। কারণ, ইন্টারনেট ছাড়াতো আমরা চলতে পারব না। তাই এর ভালো ও খারাপ দিক সম্পর্কে খোলাখুলি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলাপ করতে হবে।’ আমাদের মনে রাখতে হবে, ইন্টারনেট ব্যবহার করলেই যে শিক্ষার্থীরা খারাপ হয়ে যাবে তা কিন্তু নয়। এটা আমাদের প্রয়োজন। তাই দরকার ইন্টারনেট লিটারেসি। এটা পরিবার, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, রাষ্ট্র সবার কাজ। আরেকটি বিষয় আমাদেরকে খেয়াল রাখতে হবে যে, আমরা ডিজিটাল যুগে বাস করছি এবং আমরা প্রযুক্তি দ্বারা বেষ্টিত। এক্ষেত্রে শিক্ষার্থীরা প্রলোভনে পড়বে, এটা স্বাভাবিক। আজকাল খাবার অর্ডার করা হোক বা জামাকাপড় কেনা, সব কিছু মাত্র এক ক্লিক দূরে! অতএব, ইন্টারনেটের ব্যবহার এবং অত্যধিক ব্যবহারের মধ্যে একটি পাতলা রেখা রয়েছে এবং শিক্ষার্থীদেরকে খুব সাবধানে তাদের সীমানা আঁকতে হবে। প্রয়োজনের অতিরিক্ত একটু সময়ও যেন ইন্টারনেট ব্যবহার করতে না হয়, সেদিকে দৃষ্টি দিতে হবে। শিক্ষার্থীদের ইন্টারনেট আসক্তি থেকে মুক্ত রাখতে বা এর অতি ব্যবহার রোধ করতে অভিভাবক ও শিক্ষকদের গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা হয়েছে। ইন্টারনেট আসক্তি শিক্ষার্থীদের শারীরিক, সামাজিক এবং মানসিক ব্যাধি সৃষ্টি করতে পারে, এটি মাথায় রেখেই আমাদের উচিত তাদেরকে সার্বক্ষণিক কাউন্সেলিং করা এবং উপদেশের মাধ্যমে ইন্টারনেটের অতিরিক্ত ব্যবহারের ক্ষতি সম্পর্কে অবহিত করে ইন্টারনেট নির্ভরতা কমানো। লেখক: প্রিন্সিপাল, ড্যাফোডিল ইন্টারন্যাশনাল স্কুল, ঢাকা ও প্রেসিডেন্ট, বাংলাদেশ স্মার্ট এডুকেশন নেটওয়ার্ক