সময়ের সাথে সাথে সাকিব আল হাসান নিজেকে এমন এক স্থানে নিয়ে গেছেন, এখন আর তাকে শুধু পরিসংখ্যানের মাপকাঠিতে মাপা যথার্থ নয়। তবুও কত কত কীর্তি চলে আসে সামনে। কত পরিসংখ্যান তার শ্রেষ্ঠত্ব বর্ণনা করে- যার সংখ্যাও কম নয়। লোকমুখে প্রচলিত আছে, সাকিব আল হাসান মাঠে নামলেই কোনো না কোনো রেকর্ডে তার নাম ওঠে। গত মঙ্গলবারের (১১ জুলাই) চট্টগ্রামে অনুষ্ঠিত আফগানিস্তান-বাংলাদেশ সিরিজের শেষ ম্যাচটিও ব্যতিক্রম নয়। সাকিব রেকর্ড গড়লেন বেশ কয়েকটাই। যার একটা ছাপিয়ে গেল সবাইকে।
এদিন আফগানিস্তানের বিপক্ষে ৩৯ বলে ৩৯ রানের একটা ইনিংস খেলেন সাকিব। তাতে তৃতীয় বাংলাদেশী হিসেবে ১৪ হাজার আন্তর্জাতিক রানের রেকর্ডে নাম লেখান তিনি। তামিম ইকবাল ও মুশফিকুর রহিমের পর এই মাইলফলক স্পর্শ করলেন বিশ্বের অন্যতম সেরা এই অলরাউন্ডার।
নতুন মাইলফলক স্পর্শ করতে শেষ ওয়ানডেতে সাকিবের দরকার ছিল ২৯ রান। এই মুহূর্তে মোট ৪১৬টি ম্যাচে সাকিবের রান সংখ্যা ১৪ হাজার ১০। ১৪ হাজারি ক্লাবে নাম লেখাতেই সাকিব দিনের সবচেয়ে বড় রেকর্ডটা গড়েন। ইতিহাসের প্রথম ক্রিকেটার হিসেবে ১৪ হাজার রান ও ছয় শতাধিক উইকেটের মালিক বনে যান। যেই কীর্তি সাকিব ছাড়া নেই আর কারো। ১৪ হাজার ১০ রানের সাথে সাকিবের মোট উইকেট সংখ্যা ৬৭৪। একই দিনে আরো একটি মাইলফলক স্পর্শ করেন সাকিব। নাজিবউল্লাহ জাদরানকে ফিরিয়ে দেখা পান ওয়ানডে ক্রিকেটে ৩০৫ নম্বর উইকেটের। যা বাঁহাতি স্পিনার হিসেবে উইকেট শিকারির তালিকায় তাকে তুলে দিয়েছে দুই নম্বরে। ছুঁয়েছেন সাবেক কিউই স্পিনার ড্যানিয়েল ভেট্টরিকে। তবে এই রেকর্ড গড়তে ভেট্টরির চেয়ে ৬০ ম্যাচ কম খেলেছেন সাকিব।
কথা বলা যায়, আরো একটা রেকর্ড নিয়েও। এদিন পুরো ১০ ওভার বল করে সাকিব দেন মোটে ১৩ রান। সবচেয়ে বড় ব্যাপার, পুরো ইনিংসে হজম করেননি একটা বাউন্ডারিও। দিয়েছেন ৪৮টি ডট বল। ইকোনমি ১.৩। তার বোলিং ফিগার ছিল অবিশ্বাস্য, ১০-১-১৩-১।
যা যৌথভাবে বাংলাদেশের দ্বিতীয় কম খরুচে স্পেল। তবে প্রথম আর যৌথটাও সাকিবের দখলেই। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ২০০৯ সালে ১০ ওভারে দিয়েছিলেন ১১ রান, ২০০৬ সালে ১০ ওভারে স্কটল্যান্ডের বিপক্ষে দিয়েছিলেন আজকের সমান, মোটে ১৩ রান।
এই নিয়ে ক্যারিয়ারে তিনবার পূর্ণ ১০ ওভার বল করে ইনিংসে ১৫ এর কম রান দিয়েছেন সাকিব। তাতেই এক রেকর্ড গড়েন তিনি। ওয়ানডে ক্রিকেট ইতিহাসে এর আগে একমাত্র দক্ষিণ আফ্রিকার শন পোলকই পেরেছিলেন এমন কীর্তি গড়তে।