ইউরোপের দক্ষিণা লে তীব্র তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে। স্পেন, ফ্রান্স, গ্রিস, ক্রোয়েশিয়া এবং তুরস্কের কিছু অংশে তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস (১০৪ ডিগ্রি ফারেনহাইট) ছাড়িয়ে যাবে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। ইতালিতে তাপমাত্রা ৪৮ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস (১১৯ দশমিক ৮ ফারেনহাইট) পর্যন্ত পৌঁছাতে পারে। ফ্লোরেন্স ও রোমসহ ইতালির ১০টি শহরে রেড অ্যালার্ট জারি করা হয়েছে। মঙ্গলবার ইতালির উত্তরা লে তীব্র গরমে মাটিয়ে লুটিয়ে পড়ে চল্লিশোর্ধ এক ব্যক্তির মৃত্যু হয়েছে। ইতালির গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়েছে, ৪৪ বছর বয়সী ওই ব্যক্তি একজন শ্রমিক। তিনি মিলানের কাছে লোদি শহরে জেব্রা ক্রসিং লাইনে পেইন্টিংয়ের কাজ করছিলেন। কাজ করতে করতে তিনি প্রচ- গরমে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন। পরে তাকে হাসপাতালে নেওয়া হলে সেখানে তাকে মৃত ঘোষণা করা হয়।
ইতালির রাজনীতিবিদ নিকোলা ফ্রাতোইয়ান্নি এক টুইট বার্তায় বলেন, আমরা অসহনীয় তাপপ্রবাহের মধ্যে দিন কাটাচ্ছি। তিনি ওই শ্রমিকের মৃত্যুর ঘটনার পর সবাইকে সচেতন থাকার পরামর্শ দেন। তিনি বলেন, প্রচ- গরমের এই সময়ে লোদিতে আজকে যে দুর্ঘটনা ঘটেছে এমন কিছু এড়িয়ে চলতে সব ধরনের সতর্কতা অবলম্বন করা প্রয়োজন।
দেশটিতে আসা অনেক পর্যটক তীব্র গরমের কারণে অসুস্থ হয়ে পড়েছেন। অনেকেই হিট স্ট্রোকে আক্রান্ত হয়েছেন। এর মধ্যে একজন ব্রিটিশ নাগরিকও আছেন। আগামী কয়েকদিন চরম পরিস্থিতি বিরাজ করতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। ইটালিয়ান মেটিওরোলজিক্যাল সোসাইটি এই পরিস্থিতিকে সেরবেরাস হিটওয়েভ নামকরণ করেছে। নরকের তিন মাথার একটি দানবের নামানুসারে এই নামকরণ করা হয়। আবহাওয়া অফিস জানিয়েছে, শুক্রবার থেকে তাপমাত্রা আরও বাড়বে। দক্ষিণ ইউরোপজুড়ে তাপমাত্রা ৪০ ডিগ্রি বা তার বেশি হতে পারে। এর আগে ২০২১ সালের আগস্টে সিসিলি দ্বীপে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ৪৮ দশমিক ৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস (১১৯ দশমিক ৮ ফারেনহাইট) রেকর্ড হয়।
গত বছর তীব্র তাপপ্রবাহে ইউরোপে ৬০ হাজারের বেশি মানুষ প্রাণ হারায়। চলতি গ্রীষ্মের গরমেও প্রচ- তাপপ্রবাহের কারণে আরও বহু প্রাণহানির ঘটনা ঘটতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে বিশ্বের বিভিন্ন স্থানে তাপপ্রবাহ পরিস্থিতি বেড়ে গেছে এবং এটা এখন অনেকটাই স্বাভাবিক হয়ে উঠেছে।