শুক্রবার, ১৭ মে ২০২৪, ০৭:৫৪ পূর্বাহ্ন

শিক্ষার হার বেশি থাকা সত্বেও মাস্টপ্লানের অভাবে পিছিয়ে পড়ে আছে বরিশাল

শামীম আহমেদ বরিশাল :
  • আপডেট সময় রবিবার, ২৩ জুলাই, ২০২৩

স্বপ্নের পদ্মা সেতু, পায়রা বন্দর, পর্যটন আর শিল্পায়নসহ উল্লেখযোগ্য অবকাঠামোর উন্নয়ন হয়েছে বরিশাল সহ দক্ষিণাঞ্চলে। সরকারের পক্ষ থেকে বলা হচ্ছে দক্ষিণাঞ্চলে উন্নয়নের ছোঁয়া লেগেছে, বদলে যাচ্ছে বরিশাল বিভাগ। তা হলে দারিদ্র্যের হার কেন বাড়ছে বরিশালে? শিক্ষার হার বেশি নিয়েও কী কারণে অর্থনৈতিক উন্নতিতে সবার পিছনে পড়ে আছে বরিশাল এনিয়ে ব্যাপক প্রশ্ন উঠেছে। এবিষয়ে বিশেষ অনুসন্ধানে উন্নয়ন বিশ্লেষকরা জানিয়েছেন, অঞ্চলভিত্তিক মাস্টারপ্লান না থাকা, উন্নয়ন পরিকল্পনার সমবণ্টন ও রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের সমন্বয়হীনতার কারণেই দেশের অন্যান্য অঞ্চলের চেয়ে বরিশাল অনেকটা পিছিয়ে রয়েছে। বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের চেয়ারম্যান ও অর্থনীতিবিদ রিফাত ফেরদৌস বলেন, যেকোনো অঞ্চলের উন্নয়নের জন্য একটি মাস্টারপ্লান জরুরি। বাংলাদেশেও অনুরূপ যে পরিকল্পনা হয় সেখানে অঞ্চলভিত্তিক পরিকল্পনায় আমরা পিছিয়ে রয়েছি। তিনি আরও বলেন, সরকার দক্ষিণাঞ্চলের উন্নয়নে পদ্মা সেতু, পায়রা সমুদ্র বন্দরসহ ব্যাপক কাজ করেছেন। ভবিষ্যতে আরও উন্নয়নে আগ্রহী। তবে রাজনৈতিক সিদ্ধান্তের সমন্বয়হীনতায় কোনো কাজের মাস্টারপ্লান নেই। তাই আমি আশা করছি পরবর্তী অর্থবছরে বরিশাল বিভাগের উন্নয়নে মাস্টারপ্লান প্রণয়ন করা হবে। যেহেতু বরিশাল অঞ্চলে দারিদ্র্যের অবস্থা এতটা খারাপ ছিলো না, এখন কেন এতটা নিচে নেমে যাচ্ছে তা বদলাতে সরকারের অবশ্যই অ্যাকশন প্লান গ্রহণ করা উচিত। অন্যথায় বরিশাল বিভাগের দারিদ্র্যের হার আরও বাড়তে পারে বলেও তিনি উল্লেখ করেছেন। সূত্রমতে, রংপুরকে এক সময় বলা হতো মঙ্গা এলাকা কিন্তু আশার কথা হচ্ছে মাত্র ছয় বছরের ব্যবধানে রংপুরে দারিদ্র্য কমেছে ২২ দশমিক ৪ শতাংশ। বিপরীতে একই সময়ে ০.৪ শতাংশ দারিদ্র্য বেড়েছে শস্যভা-ার খ্যাত বরিশাল বিভাগে। শুধু তাই নয়; জাতীয়ভাবে দারিদ্র্যের চেয়ে ৮ দশমিক ২ শতাংশ হার বেশি বরিশালে। শিক্ষার দিক দিয়ে ৭৭ দশমিক ৫৭ শতাংশ স্কোর নিয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে বরিশাল। আর রংপুর ৭০ দশমিক ৭৫ শতাংশ নিয়ে রয়েছে সপ্তম অবস্থানে। পরিসংখ্যান ব্যুরোর জরিপ অনুযায়ী, ২০১৬ সালে রংপুরে দারিদ্র্যের হার ছিল ৪৭ দশমিক ২ শতাংশ। ২০২২ সালে তা কমে দাঁড়িয়েছে ২৪ দশমিক ৮ শতাংশ। অপরদিকে ২০১০ সালে বরিশাল বিভাগে দারিদ্র্যের হার ছিল ৩৯ দশমিক ৪ শতাংশ। যা এখন থেকে ৬ বছর আগে রংপুরে দারিদ্র্য হারেরও কম। আর ২০১৬ সালে বরিশালে দারিদ্র্যের হার কমে দাঁড়ায় ২৬ দশমিক ৫ শতাংশ। ২০২২ সালে কমে যাওয়ার বদলে বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৬ দশমিক ৯ শতাংশ। একই বছরের তথ্য বলছে, জাতীয় দারিদ্র্যের হার ১৮ দশমিক ৭ শতাংশ। বরিশালের আগৈলঝাড়া উপজেলার কাঠিরা গ্রামের নৌকা তৈরির কারিগর স্বপন কুমার বলেন, পাঁচ বছর আগে একটি নৌকা নির্মাণ করে যেদামে বিক্রি করেছি, এখনো সেই প্রায় একই দামে বিক্রি করছি। অথচ সকল উপকরণের দাম বৃদ্ধির পাশাপাশি বাজারে নিত্যপণ্যের অনেক দাম বেড়েছে। সবমিলিয়ে দিন দিন আরও গরিব হয়ে যাচ্ছি। জেলার হিজলা উপজেলার বাউশিয়া গ্রামের বাসিন্দা হারুন-অর রশিদ(৬০) বলেন, তিনবার বাড়ি করেছি। তিনবারই মেঘনা নদী তা গ্রাস করে নিয়েছে। এখন আর উপার্জনের সামর্থ্য নেই যে নতুন করে বাড়ি বানাব। এ জন্য আরেকজনের জমিতে ছাপরা ঘর বানিয়ে থাকছি। তিনি আরও বলেন, নদী ভাঙন রোধে যদি ভালো পরিকল্পনা হতো তাহলে হয়তো দিনে দিনে আমাদের নিঃস্ব হতে হতো না। বরিশাল নগরীর পলাশপুর এলাকার বাসিন্দা রিক্সাচালক ইউনুস আলী বলেন, দিনে সাতশ’ টাকা আয় করলে রিকশার ভাড়া বাবদ মহাজনকে দিতে হয় তিনশ’ টাকা। তারপর যা থাকে তা দিয়ে দিনের বাজার, মাসের বাসা ভাড়া, বিদ্যুৎ বিল, পানির বিল দিতেই হিমশিম খেতে হয়। অথচ যখন পায়ে চালানো (প্যাডেল) রিকশা চালাতাম তখন ৫০ টাকা ছিল ভাড়া। যা পেতাম তাতেই ভালোভাবে সংসার চলে যেত। কিন্তু এখন বেশি আয় করেও কোনো টাকা জমা রাখতে পারছি না। মনে হচ্ছে আগেই ভালো ছিলাম। পটুয়াখালী সরকারি কলেজের অর্থনীতি বিভাগের চেয়ারম্যান ও অর্থনীতিবিদ অধ্যাপক আক্তারুজ্জামান বলেন, বরিশাল বিভাগের একটি বড় অঞ্চল উপকূলীয় জনপদ। দক্ষিণাঞ্চলবাসীর জন্য স্বপ্নের পদ্মা সেতু ও পায়রা বন্দরের মতো অবকাঠামো গড়ে উঠলেও শিল্পায়ন ও কৃষিতে এর টেকসই প্রভাব পরেনি। দক্ষিণাঞ্চলে কোনো অর্থনৈতিক জোন নেই। ভোলায় গ্যাস আছে কিন্তু তা দক্ষিণাঞ্চলের মানুষ পাচ্ছে না। ফলে অর্থনৈতিক উৎপাদনমুখী প্রতিষ্ঠান গড়ে উঠছে না। এ ছাড়া জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে প্রতিবছর বন্যা, ঝড়, জলোচ্ছ্বাস আর পানির লবণাক্ততা কৃষি অর্থনীতিকে মারাত্মকভাবে ক্ষতি করছে। তিনি আরও বলেন, প্রতিবছর বাড়ছে নদীভাঙন। মানুষ প্রাকৃতিক কারণেই উদ্বাস্থ হচ্ছে। সৃষ্টি করা হচ্ছে না তেমন কোনো কর্মসংস্থান। যে কারণে এমন পরিণতি হয়েছে। দক্ষিণাঞ্চলে গ্যাস সংযোগের দাবিতে আন্দোলনের ডাক দেওয়া কমিটি ও বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দলের (বাসদ) বরিশাল জেলার সদস্য সচিব ডা. মনীষা চক্রবর্তী বলেন, কয়েকটি রাস্তা বা সেতু নির্মাণের মধ্য দিয়ে একটি অঞ্চলের উন্নয়ন করা সম্ভব নয়। অঞ্চলের উন্নয়ন করার জন্য মানুষের জীবনমানের পরিবর্তন দরকার। শিল্পায়ন ও অর্থনৈতিক কর্মকান্ডে সক্রিয়তা নিয়ে আসা দরকার। তিনি আরও বলেন, বরিশালে গ্যাস সংযোগ নেই, রেল সংযোগ নেই। অর্থনৈতিক প্রণোদনার অভাবে দক্ষিণাঞ্চলে শিল্পায়ন বঞ্চিত অনুন্নত অঞ্চল হিসেবে পরিণত হয়েছে। দক্ষিণাঞ্চলে কৃষিভিত্তিক বহুমুখী শিল্প, মৎস্য শিল্পের বড় সম্ভাবনা রয়েছে। কিন্তু আজ পর্যন্ত এই অঞ্চলে কোনো ইপিজেড তৈরি হয়নি। ভোলায় গ্যাস থাকলেও বরিশালে তার সংযোগ আনা হচ্ছে না। আমি মনে করি রাজনৈতিক সদিচ্ছা ও সরকারের মাস্টারপ্লানের অভাবে বরিশালের এই পরিণতি হয়েছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষক ও বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক সোহেল রানা বলেন, রাজনৈতিক সিদ্ধান্তগুলো দেশের উন্নয়নে ভূমিকা রাখে। বর্ধিত শিক্ষার হার, শস্য উৎপাদনে অগ্রসরতা, যোগাযোগ ব্যবস্থার বিস্ময়কর উন্নয়ন কিংবা পাওয়ার সেক্টরের উন্নতি যা-ই বলি না কেন, দারিদ্র্যের হার এগুলোর সাথে ইতিবাচকভাবে এগিয়ে যাবে তখনই, যখন রাজনৈতিক সিদ্ধান্তে এগুলোর সুসমন্বয় হবে। উন্নয়নের সাথে সংশ্লিষ্ট সকল উপাদানের সমন্বিত ব্যবস্থাপনা এবং উন্নয়ন টার্গেট নির্দিষ্ট করতে পারলে উন্নয়ন সম্ভব। সম্ভব দারিদ্র্যের হার হ্রাসকরণ। তিনি আরও বলেন, পদ্মা সেতুর উদ্বোধনের আগে এই অঞ্চলের সম্ভাব্য উন্নয়ন কর্মকান্ডের নানা কথা শোনা যাচ্ছিল। কিন্তু স্বপ্নের সেতু হলেও, কাঙ্খিত উন্নয়ন হচ্ছে না উন্নয়নের সঙ্গে দারিদ্র্যমোচন, কর্মসংস্থান ও উচ্চতর জীবনমানের প্রশ্নগুলো প্রত্যক্ষভাবে জড়িত থাকায় এই ইনডেক্সগুলোকেই বিবেচনায় নিতে হচ্ছে। সম্ভাবনাময় ক্ষেত্রগুলোকে আলাদাভাবে বিবেচনায় নিয়ে এগিয়ে যাওয়ার বিকল্প দেখছি না। সোহেল রানা আরও বলেন, দক্ষিণাঞ্চলের উন্নয়নক্ষেত্রগুলোকে চিহ্নিত করে প্রাপ্ত গবেষণাগুলোর ফলাফল সমন্বয়পূর্বক উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণ করতে হবে। পায়রা বন্দর তার পূর্ণাঙ্গ রূপ পেলে, ব্যবহারযোগ্য উন্নত যোগাযোগ (ভাঙা থেকে কুয়াকাটা পর্যন্ত ফোরলেন সড়ক) ব্যবস্থা ও মানবসম্পদের সমন্বয়ে নতুন আর্থিক খাতের উন্মেষ ঘটতে পারে। বরিশাল পরিসংখ্যান ব্যুরো বিভাগের যুগ্ম-পরিচালক শফিকুল ইসলাম বলেন, বরিশাল সিটি করপোরেশন এলাকার পলাশপুর, রসুলপুর, কেডিসি, বঙ্গবন্ধু কলোনিসহ বেশ কয়েকটি এলাকা রয়েছে যা অত্যন্ত দারিদ্র্য এলাকা হিসেবে সবার কাছে পরিচিত। তিনি আরও বলেন, বরিশাল বিভাগের মানুষের জীবনমান কমে যাওয়ার অনেকগুলো কারণ রয়েছে। যারমধ্যে মূল কারণ হচ্ছে এই অঞ্চলের মানুষের আয় বাড়েনি। কারণ আয় বাড়ানোর উৎস নেই। বাজারে দ্রব্যমূল্যের প্রভাব পরলেও বিপরীতে আয় বাড়েনি। আগেও যে কয় টাকা আয় করতেন এখনো সেই টাকা আয় করেন। দেখা যাচ্ছে, যিনি রিকসা চালাচ্ছেন তিনি দিনে সর্বোচ্চ পাঁচ থেকে ছয়শ’ টাকা আয় করছেন। অপরদিকে বাজারে গরুর মাংসের কেজি ৭৫০ টাকা। ইচ্ছে থাকলেও তিনি এক কেজি গরুর মাংস ক্রয় করতে পারছেন। তুলনামূলক আলোচনায় শফিকুল ইসলাম বলেন, রংপুর, কুড়িগ্রাম ও গাইবান্ধায় বিভিন্ন উন্নয়নমূলক প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। বরিশালে যেহেতু দারিদ্র্যের হার উচ্চমুখী, এখন পরিকল্পনা প্রণয়নকারী প্রতিষ্ঠান এই অঞ্চলটিকে কীভাবে উন্নয়ন করা যায় তা নিয়ে বিস্তার উদ্যোগ গ্রহণ করবে বলে আমি শতভাগ বিশ্বাস করছি। সচেতন নাগরিক কমিটির বরিশাল জেলার সাবেক সভাপতি প্রফেসর শাহ্ সাজেদা বলেন, দীর্ঘদিন পরে হলেও দেশের অন্যান্য অঞ্চলের তুলনায় উন্নয়নের দিক থেকে পিঠিয়ে পড়া বরিশালকে ঢেলে সাজাতে মহাপরিকল্পনা গ্রহণ করেছেন বরিশাল সিটি করপোরেশনের নবনির্বাচিত মেয়র বঙ্গবন্ধুর ভাগ্নে আবুল খায়ের আব্দুল্লাহ খোকন সেরনিয়াবাত। তিনি (মেয়র) শপথগ্রহণ করে এখনও দায়িত্বগ্রহন না করলেও তিনি তার নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী নতুন বরিশাল নগরী গড়তে বিশেষজ্ঞ প্রকৌশলীদের নিয়ে নগরের একপ্রান্ত থেকে অপরপ্রান্ত পর্যন্ত চষে বেড়াচ্ছেন। এ থেকে অনুমান করা যায় আগামীতে একটি পরিকল্পিত নগরী পেতে যাচ্ছে বরিশালবাসী। বরিশাল মহানগর যুবলীগের যুগ্ম আহ্বায়ক মাহমুদুল হক খান মামুন বলেন, জনগনের চাহিদা অনুযায়ী পরিকল্পিত মাস্টারপ্লানের মাধ্যমে আধুনিক ও উন্নত স্মার্ট নতুন বরিশাল নগরী গড়ারই হচ্ছে নতুন সিটি মেয়রের নির্বাচনী ওয়াদা। যারই ধারাবাহিকতায় গত ১৫ জুলাই সিটি মেয়র খোকন সেরনিয়াবাত খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের আর্কিটেকচার ডিপার্টমেন্টের সহযোগী অধ্যাপক স্থপতি এসএম নাজিমুদ্দিন পায়েল এবং বরিশাল সিটি করপোরেশনের চীফ ইঞ্জিনিয়ার আবুল বাসারকে সঙ্গে নিয়ে নগরীর বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করেছেন। বরিশাল সিটি করপোরেশনের নবনির্বাচিত মেয়র আবুল খায়ের আব্দুল্লাহ খোকন সেরনিয়াবাত বলেন, বাংলাদেশের উন্নয়নের নেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সহযোগিতায় নতুন স্মার্ট বরিশাল নগরীকে উন্নত এবং আধুনিকায়ন করার লক্ষ্যে সবাইকে সাথে নিয়ে মাস্টারপ্লান তৈরির মাধ্যমে পরিকল্পিত স্ট্রাকচার ও ড্রেনেজ ব্যবস্থার দৃশ্যমান পরিবর্তনের জন্য বিশেষজ্ঞ প্রকৌশলীদের সহায়তা চাওয়া হয়েছে। যে কারণে খুলনা প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশলী ও অধ্যাপকবৃন্দ তাকে সহায়তা দিতে বরিশালের অবস্থা সরেজমিনে প্রত্যক্ষ করেছেন। তিনি আরও বলেন, যতো দ্রুত সম্ভব বিভাগীয় শহর বরিশাল সিটি করপোরেশন এলাকায় দৃশ্যমান উন্নয়ন করা হবে।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com