মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:৩৬ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম ::
ভোলার বিভিন্ন চরাঞ্চল অতিথি পাখির কলকাকলিতে মুখরিত লালমোহনে ডা. আজাহার উদ্দিন ডিগ্রি কলেজের সভাপতিকে সংবর্ধনা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহিদ ও আহতদের স্মরণে স্মরণসভা সিংড়ায় পরিবেশ রক্ষার্থে ৫৩৬টি ডাস্টবিন বিতরণ কাজী আজিম উদ্দিন কলেজে শিক্ষার্থীদের সাথে ছাত্রদলের ৩১ দফা নিয়ে মতবিনিময় সভা পটুয়াখালীতে শিক্ষক দম্পতি হত্যাকান্ডের মূল রহস্য উদঘাটনের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন টুঙ্গিপাড়ায় ভিক্ষুক ও হতদরিদ্রদের আত্মকর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করলো সমাজসেবা অফিস জুডিসিয়াল সার্ভিস কমিশনের আওতায় এনে সহায়ক কর্মচারী অন্তর্ভুক্ত ও বিচার বিভাগের আলাদা সচিবালয় গঠনের নিমিত্তে দাবি পেশ দাউদকান্দিতে সড়কের মাটি ধসে পড়ল খালে, দুর্ঘটনার আশংকা সীতাকুন্ডে বিতর্কিত মাদ্রাসা পরিচালকের করা মিথ্যা মামলার বিরুদ্ধে মানববন্ধন

ঘটনার নাটকীয় মোড়: অঞ্জু এখন ফাতেমা

খবরপত্র ডেস্ক:
  • আপডেট সময় বৃহস্পতিবার, ২৭ জুলাই, ২০২৩

পাকিস্তানি যুবক নাসরুল্লাহর সাথে ফেসবুকে বন্ধুত্ব। সেই সুবাদে পাকিস্তানে বেড়াতে যান ভারতের উত্তরপ্রদেশের তরুণী অঞ্জু। পাকিস্তানে প্রবেশ করতেই তাদের মধ্যে প্রেম নিয়ে গুঞ্জন উঠে। তবে তা উড়িয়ে দিয়েছিলেন পাকিস্তানি যুবক। কিন্তু নাটকীয় মোড় নিলো ওই ঘটনা। সবশেষ জানা গেলো- ধর্ম বদলে নাসরুল্লাহকে বিয়ে করেছেন অঞ্জু। গত মঙ্গলবার জিও নিউজ ও ভারতীয় একটি সংবাদমাধ্যম জানায়, খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশের প্রত্যন্ত গ্রামে নাসরুল্লাহ-অঞ্জুর বিবাহ হয়েছে। বিয়ের আগে নিজের ধর্ম পরিবর্তন করেছেন অঞ্জু। নতুন নাম দেন ফাতিমা। জেলা আদালতের অনুমোদনে নাসরুল্লাহ-ফাতিমার আইনি বিবাহও সম্পন্ন হয়েছে বলে জানা গেছে।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ সংক্রান্ত একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে, সেখানে দেখা যাচ্ছে- নবদম্পতি স্থানীয় একটি পাহাড়ি এলাকায় প্রমোদভ্রমণে বেরিয়েছেন। স্থানীয় ডেপুটি ইন্সপেক্টর জেনারেল নাসির মেহমুদ সাট্টি সি নাসরুল্লাহ-ফাতিমার বিয়ের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
সূত্র জানাচ্ছে, রীতিমতো পুলিশি পাহারায় নাসরুল্লাহর পরিবারের সদস্যদের উপস্থিতিতেই এই বিয়ে সম্পন্ন হয়েছে। প্রসঙ্গত, অঞ্জুর জন্ম ভারতের উত্তরপ্রদেশে। বিয়ের পর তিনি রাজস্থানের অলওয়রে থাকছিলেন। নাসরুল্লাহ (২৯) আর অঞ্জু (৩৪) ২০১৯ সাল থেকে ফেসবুকে বন্ধু। বন্ধুত্ব থেকেই প্রেম এবং পাকিস্তানে পাড়ি। এক মাসের ভিসা নিয়ে সেদেশে প্রবেশ করেন অঞ্জু।
অঞ্জু পাকিস্তান যাওয়ার পর নাসরুল্লাহ দাবি করেছিলেন, ‘অঞ্জু এখানে এসেছেন বটে। তবে আমাদের বিয়ে করার পরিকল্পনা নেই। ও আমাদের বাড়ির মেয়েদের সাথে আলাদা ঘরে থাকছে। ২০ আগস্ট তার ভিসার মেয়াদ ফুরিয়ে গেলে ভারতে ফিরেও যাবে।’ কিন্তু নাটকীয় মোড় নিল কাহিনি। সম্পন্ন হলো ইন্দো-পাক বিবাহ। অঞ্জু হয়ে গেলেন ফাতিমা।
মেয়ে যে এরকম কাজ করতে পারেন, সেটা এখনো বিশ্বাস করতে পারছেন না। স্বামীকে ডিভোর্স না দিয়েই দুই সন্তানকে রেখে পাকিস্তানে গিয়ে ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে স্থানীয় যুবক নাসরুল্লাহকে বিয়ে করায় মেয়ের প্রতি তীব্র বিতৃষ্ণা প্রকাশ করলেন ভারতীয় ‘বধূ’ অঞ্জুর (নাম পাল্টে এখন ফাতিমা) বাবা গয়াপ্রসাদ থমাস। মধ্যপ্রদেশের গোয়ালিয়র জেলার বৌনা গ্রামে সাংবাদমাধ্যমের প্রতিনিধিদের সামনে ক্ষোভ উগরে দিয়ে তিনি জানান, মেয়ে যে কাজ করেছেন, তাতে তাদের কাছে এখন অঞ্জু ‘মরে গেছে’। মেয়েকে দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য ভারত সরকারের কাছেও আবেদন করবেন না বলে জানিয়েছেন গয়াপ্রসাদ। বরং তিনি বলেছেন, ‘আমি প্রার্থনা করিৃযে ও ওখানেই (পাকিস্তানে) মরে যাক।’
অঞ্জু অবশ্য জানিয়েছেন, তিনি ভারতে ফিরে আসছেন। যিনি পাকিস্তানের খাইবার পাখতুনখাওয়া প্রদেশের আপার দির জেলার ছেলে নাসরুল্লাহর (২৯) সাথে বিয়ে করেছেন। সংবাদসংস্থা পিটিআইয়ের প্রতিবেদন অনুযায়ী, আপার দির জেলার পুলিশ কর্তারা নিশ্চিত করেছেন যে প্রথমে ধর্মান্তরিত হন অঞ্জু (৩৪)। ইসলাম ধর্ম গ্রহণ করে নিজের নাম রাখেন ফাতিমা। তারপর ইসলামের রীতনীতি মেনে নাসরুল্লাহর সাথে নিকাহ সারেন। যে নাসরুল্লাহর সাথে ২০১৯ সালে ফেসবুকের মাধ্যমে আলাপ হয়েছিল অঞ্জুর। তারপর দু’জনের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে বলে একাধিক রিপোর্টে দাবি করা হয়েছে।
আর পাকিস্তানে গিয়ে মেয়ের সেই নিকাহের খবর জানার পর মধ্যপ্রদেশের গ্রামে দাঁড়িয়ে অঞ্জুর বাবা বলেন, ‘ও নিজের দুই সন্তান এবং স্বামীকে ফেলে যেভাবে পালিয়ে গিয়েছে…। ও নিজের সন্তানদের কথাও ভাবল না। ও যদি এটাই করতে চাইত (নাসরুল্লাহকে নিকাহ), তাহলে নিজের স্বামীকে (রাজস্থানের আলওয়ারে স্বামী ও দুই সন্তানের সাথে থাকতেন অঞ্জু) আগে ডিভোর্স দিতে পারত। ও আমাদের কাছে আর বেঁচে নেই।’ সেইসাথে তিনি বলেন, ‘ওর সন্তানদের কী হবে? ওর স্বামীর কী হবে? ওর ১৩ বছরের মেয়ে এবং পাঁচ বছরের ছেলের দেখভাল করবে কে? ও নিজের সন্তান এবং স্বামীর ভবিষ্যৎ নষ্ট করে দিয়েছে। কে ওর সন্তানদের দেখভাল করবে? আমাদেরই করতে হবে।’
অঞ্জু যে পাকিস্তানে যাচ্ছেন, সে বিষয়ে স্বামীরও বিন্দুমাত্র ধারণা ছিল না বলে একাধিক রিপোর্টে জানানো হয়েছে। অথচ অঞ্জু পুরোপুরি পরিকল্পনা করেই পড়শি দেশে গিয়েছেন বলে একটি ভিডিওবার্তায় দাবি করেছেন। তিনি জানিয়েছেন, পুরো পরিকল্পনা করেই সীমান্ত পেরিয়ে পাকিস্তানে গেছেন। পিটিআইয়ের প্রতিবেদনে জানানো হয়েছে যে নয়াদিল্লিতে অবস্থিত পাকিস্তানের হাইকমিশনের কাছে আসা নথি অনুযায়ী, বৈধভাবেই পাকিস্তানে গিয়েছেন অঞ্জু। তাকে যে ভিসা দেয়া হয়, সেটা শুধু আপার দির জেলার জন্য বৈধ। অর্থাৎ আপার দির জেলার বাইরে বেরোতে পারবেন না অঞ্জু।
এমন পরিস্থিতিতে থমাস জানিয়েছেন যে মেয়েকে কিভাবে ভিসা পেলেন, সে বিষয়ে তার কোনো ধারণা নেই। থমাস বলেন, ‘আমি জানি না যে ও কিভাবে পাসপোর্ট পেল বা ও কিভাবে ভিসা পেল।’ সেইসাথে তিনি জানিয়েছেন যে পাকিস্তানে যাওয়ার পর থেকে তার সাথে মেয়ের কোনো কথা হয়নি। মায়ের সাথে কথা বলছেন অঞ্জু। যে অঞ্জুকে সোমবার ‘মানসিক ভারসাম্যহীন এবং উদ্ভট’ বলেন থমাস। এরমধ্যে অঞ্জুর পাকিস্তান সফর নিয়ে একটি মহলে যে জল্পনা তৈরি হয়েছে, তা থমাস উড়িয়ে দিয়েছেন। থমাসরা যেখানে থাকেন, সেই গ্রামের কিছুটা দূরেই বিএসএফের বড় ইউনিট আছে। ওই বিষয়টির সাথে অঞ্জুর পাকিস্তানে যাওয়ার সম্পর্ক আছে কিনা, সেই প্রশ্নের জবাবে থমাস বলেন, ‘আমার মেয়ের কোনো অপরাধমূলক মনোভাব নেই। এই বিষয়টি নিয়ে যেকোনো রকম তদন্তের জন্য আমি তৈরি আছি।’ সূত্র : হিন্দুস্তান টাইমস, জিও নিউজ ও ভারতীয়




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com