পুকুরের টলমলে স্বচ্ছ পানিতে সকালের নতুন সূর্যের সাথে পাল্লা দিয়ে ফোঁটা লাল শাপলার হাসি মুহূর্তেই মন আনন্দে ভরিয়ে দেয়। লাল শাপলার এই হাসি দর্শনার্থীদের মুখেও ছড়িয়ে পড়ে। ক্ষণিকের জন্য মুছে যায় সকল দুঃখ-গ্লানি। সেই অগভীর পুকুরের পানির মাঝে লাল শাপলার চোখ জুড়ানো হাসির দেখা মিলল সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ উপজেলায়। সেখানে নলকা ইউনিয়নের গুপিনথপুর গ্রামের শিক্ষক বাহাদুর আলীর গ্রামের মেঠো পথের বাড়ির পাশে ছোট্ট পুকুরের বিস্তীর্ণ পানিতে স্বল্প পরিসরে ফুটেছে লাল শাপলা ফুল। পুকুরে ফুটন্ত ফুলের পাশেই পানি থেকে মাথা বের করে পূর্ণ ফুল হয়ে ফোঁটার প্রহর গুনছে কিছু কলি শাপলা। আর সবুজ পাতায় ঢাকা পড়েছে পুকুরের জলরাশি।
ভোরে সূর্যের আলোয় ফুটন্ত শাপলার চোখ জুড়ানো হাসি আশপাশের পরিবেশ আলোকিত করে দেয়। মুগ্ধতা ছড়িয়ে পরিবেশকে আরো আপন করে নেয় ছোট পুকুরের পাশ দিয়ে যাওয়া এই মেঠো পথে চলাচল করা পথচারি ও শিক্ষার্থীদের। লাল শাপলা ফুল যখন বিলুপ্তির পথে তখন গ্রামের স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থী ও স্থানীয় প্রান্তিক কৃষকদের পুকুরে লাল শাপলা বিমোহিত করেছে। স্থানীয় গুপিনাথপুর গ্রামের আমজাদ, শিতল, আশিক বলেন, এই পুকুরে মাছ চাষ না করায় প্রাকৃতিকভাবে গজিয়েছে শাপলা ফুলের গাছ। প্রথমে অল্প কয়েকটি গাছ ছিল। এখন সহস্রাধিক হয়েছে। অযত্বে-অবহেলায় ধীরে ধীরে সবুজ পাতায় ঢাকা পড়েছে সমস্ত পুকুরের পানি। তার মধ্যে ফুঁটতে শুরু করছে শাপলা। মনোমুগ্ধকর পরিবেশে শাপলা ফুলের হাসি দেখতে আশপাশের এলাকার তরুণ-তরুণীসহ নানা বয়সের মানুষেরা ভিড় করছে। দাদপুর জি আর বালিকা বিদ্যালয় ও কলেজের শিক্ষার্থী সুরাইয়া, আশা, রিপন জানান, পথের ধারে ছোট্ট পুকুরে ফুটন্ত শাপলার সৌন্দর্যে দেখে আমি মুগ্ধ হয়েছি। আগে শাপলা ফুল প্রতিটি খাল-বিল ও পুকুরে দেখা যেত এখন আর তেমন একটা পাওয়া যায় না।
পুকুরের মালিক শিক্ষক বাহাদুর আলী বলেন, প্রায় এক বিঘা জমিতে দীর্ঘ দুই যুগ ধরে পুকুরে মাছ চাষ না করার কারণে প্রতি বছর শাপলা ফুল ফোটে। জাতীয় ফুল শাপলা দেখতে অনেকে আসছেন তার পুকুর পাড়ে। রায়গঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুর রউফ বলেন, উপজেলার খাল-বিল ও পুকুর শুকিয়ে ফেলার কারণে শাপলা ফুল এখন বিলুপ্তির পথে।