মহাকাশের দূরবর্তী নক্ষত্রের জীবনকালের শেষ পর্যায়ের অত্যাশ্চর্য চিত্রগুলি জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপে ধরা পড়লো। জ্যোতির্বিজ্ঞানীদের একটি আন্তর্জাতিক দল দ্বারা প্রকাশিত স্ন্যাপশটগুলিতে দেখা গেছে রিং নেবুলা নামক উজ্জ্বল গ্যাসের ডোনাট-আকৃতির কাঠামো , যা আকাশের একটি সুপরিচিত বস্তু। পৃথিবী থেকে প্রায় ২,৬০০ আলোকবর্ষ দূরে অবস্থিত। শক্তিশালী টেলিস্কোপে ধরা পড়েছে নেবুলার ছবি। দেখা যাচ্ছে তারাদের বাইরের স্তর থেকে বেরিয়ে আসছে গ্যাস। আর তা থেকে জমছে গ্যাসের আস্তরণ। যখন একটি মৃত নক্ষত্র থেকে মহাকাশে তার উপাদানগুলি বিস্ফোরিত হয় তখন উজ্জ্বল রঙিন বলয় তৈরি করে, যাকে নেবুলা বলে। বিস্ফোরণের পর বুদবুদগুলি প্রসারিত হয়ে জটিল, বিচ্ছিন্ন মেঘ তৈরি করে। ওই গ্যাসের স্তরের কেন্দ্রের ‘শ্বেত বামন’, নক্ষত্রের শেষ অবস্থা। এখন থেকে বিলিয়ন বছর পর সূর্যের জন্য অনুরূপ ভাগ্য অপেক্ষা করছে। টেলিস্কোপের কাছাকাছি ইনফ্রারেড ক্যামেরা (নিরকাম) থেকে উচ্চ-রেজোলিউশনের ছবিগুলি কেবল নেবুলার প্রসারিত শেলের কাঠামোই নয়, এর অভ্যন্তরীণ অঞ্চলটিও দেখায় যার আকার একটা গ্রহের মতো । টঈখ এ পদার্থবিদ্যা এবং জ্যোতির্বিদ্যার প্রফেসর মাইকেল বারলো বলেছেন, সূর্যের মতো নক্ষত্রগুলি তাদের জীবন শেষ করে সুন্দর নেবুলা তৈরি করে যা তাদের অভ্যন্তরীণ বিকিরণ দ্বারা আলোকিত হয়। নেবুলার রঙিন ব্যান্ডগুলি রাসায়নিক উপাদান দ্বারা তৈরি হয় যা বিভিন্ন তরঙ্গদৈর্ঘ্যে আলো নির্গত করে। চিত্রগুলি বিশ্লেষণ করে, জ্যোতির্বিজ্ঞানীরা নেবুলার গঠন, নক্ষত্রের জীবনচক্র এবং তারা যে মহাজাগতিক উপাদানগুলি সম্পর্কে আরও বিশদে জানার চেষ্টা করছেন । বার্লো বলেন আমরা এখনও শুঁয়োপোকার স্তরে আছি। প্রজাপতির মতো পর্যায়ে পৌঁছাতে এখনো অনেক দেরি আছে। ২০২১ সালের ডিসেম্বরেই মহাকাশে পাড়ি দিয়েছিল অত্যাধুনিক জেমস ওয়েব স্পেস টেলিস্কোপ। দীর্ঘ দু’ সপ্তাহ পরে তা কর্মক্ষম হয়ে ওঠে। তারপর থেকেই মহাকাশের আশ্চর্য সব ছবি পাঠিয়ে চলেছে এটি । সূত্র : দা গার্ডিয়ান