জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৮তম শাহাদাতবার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানিয়েছেন প্রেসিডেন্ট মো. সাহাবুদ্দিন এবং প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। গতকাল মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৬টায় ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানান তারা। প্রথমে প্রেসিডেন্ট মো. সাহাবুদ্দিন ও পরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। এরপর কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন তারা। তখন বিউগলে বেজে ওঠে করুণ সুর। এসময় সশস্ত্র বাহিনীর সদস্যরা গার্ড অব অনার প্রদান করেন। পরে দলের সিনিয়র নেতাদের নিয়ে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা জানান প্রধানমন্ত্রী। এসময় বঙ্গবন্ধুসহ ১৫ই আগস্টের নিহতদের রুহের মাগফিরাত কামনা করে বিশেষ মোনাজাত করা হয়। গতকাল মঙ্গলবার সকাল সাড়ে ৭টায় বনানী কবরস্থানে জাতির পিতার পরিবারের সদস্য ও অন্য শহীদদের কবরে প্রধানমন্ত্রীর পুষ্পস্তবক ও ফুলের পাপড়ি অর্পণের পর ফাতিহা পাঠ ও মোনাজাত করার কথা রয়েছে।
উল্লেখ্য, ১৯৭৫ সালের এই দিনে স্বাধীনতার স্থপতি, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করে সেনাবাহিনীর উচ্ছৃঙ্খল কিছু বিপথগামী সদস্য। ওই দিন রাতে ধানমন্ডির ৩২ নম্বর সড়কের ঐতিহাসিক ভবনে ঘাতকের নির্মম বুলেটে নিহত হন বাঙালি জাতির জনক।
জাতির পিতার প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন প্রধানমন্ত্রীর: প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৮তম শাহাদাত বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে তাঁর স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেছেন। রাষ্ট্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে প্রধানমন্ত্রী গতকাল মঙ্গলবার রাজধানীর ধানমন্ডি ৩২ নম্বর সড়কে বঙ্গবন্ধু স্মৃতি জাদুঘরের সামনে রক্ষিত বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে দেশের স্বাধীনতার মহান স্থপতির প্রতি এই শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। পুষ্পস্তবক অর্পণের পর তিনি মহান নেতার প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানাতে সেখানে কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন। এ সময় বাংলাদেশ তিন বাহিনীর একটি সুসজ্জিত চৌকস দল রাষ্ট্রীয় সালাম প্রদান করে এবং বিউগলে করুন সুর বাজানো হয়। এ সময় ’৭৫ এর ১৫ আগস্টের শহীদদের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করে মোনাজাত করা হয়। পরে আওয়ামী লীগের সিনিয়র নেতৃবৃন্দ ও তাঁর ছোট বোন শেখ রেহানাকে নিয়ে আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা দলের পক্ষ থেকে বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। অনুষ্ঠানে জাতীয় সংসদের স্পিকার, প্রধান বিচারপতি, মন্ত্রিসভার সদস্যবৃন্দ এবং সেনা, নৌ ও বিমান বাহিনীর প্রধানগণ উপস্থিত ছিলেন। ধানমন্ডি থেকে প্রধানমন্ত্রী বনানী কবরস্থানে যান, যেখানে তাঁর মা বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব, ভাই শেখ কামাল, শেখ জামাল, শেখ রাসেল এবং ১৫ আগস্ট ১৯৭৫ সালের অন্যান্য শহীদগণ চিরনিদ্রায় শায়িত শহীদদের কবরে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন এবং ফুলের পাঁপড়ি ছড়িয়ে দেন। শেখ হাসিনা ফাতেহা পাঠ করেন এবং ১৫ আগস্টের শহীদদের বিদেহী আত্মার মাগফেরাত কামনা করেন। দিনটি সারা দেশে জাতীয় শোক দিবস হিসেবে পালিত হয়েছে। বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, তাঁর সহধর্মিণী বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব, তাঁর তিন ছেলে-শেখ কামাল, শেখ জামাল ও শেখ রাসেল-এবং বঙ্গবন্ধুর পরিবারের অধিকাংশ সদস্য ও তাঁর তিন ঘনিষ্ঠ আত্মীয় একদল বিপথগামী সেনা সদস্যের ব্রাশফায়ারে ১৯৭৫ এর ১৫ আগস্টের কাল রাতে নির্মম হত্যাকান্ডের শিকার হন। বঙ্গবন্ধুর দুই কন্যা বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তাঁর বোন শেখ রেহানা সেই সময় বিদেশে থাকায় হত্যাকান্ডে থেকে প্রাণে বেঁচে যান। টুঙ্গিপাড়ায় বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে শ্রদ্ধা নিবেদন প্রধানমন্ত্রীর : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা গতকাল মঙ্গলবার জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৮তম শাহাদাৎ বার্ষিকী ও জাতীয় শোক দিবসে বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণের মাধ্যমে গভীর শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। পুষ্পস্তবক অর্পণের পর প্রধানমন্ত্রী স্বাধীনতার মহান স্থপতির স্মৃতির প্রতি গভীর শ্রদ্ধা জানিয়ে কিছুক্ষণ নীরবে দাঁড়িয়ে থাকেন, যিনি ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের ভয়াল রাতে কিছু বিপথগামী সেনা সদস্যের হাতে পরিবারের অধিকাংশ সদস্যসহ নির্মমভাবে নিহত হন। বাংলাদেশ সশস্ত্র বাহিনীর একটি সুসজ্জিত চৌকস দল সে সময় রাষ্ট্রীয় সালাম প্রদান করে এবং বিউগলে করুন সুর বাজানো হয়। ছোট বোন শেখ রেহানা ও তাঁর পরিবারের সদস্যদের সাথে নিয়ে প্রধানমন্ত্রী এরপর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব এবং ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের হত্যাযঞ্জের শিকার অন্যান্য শহীদদের বিদেহী আত্মার শান্তি কামনা করে ফাতেহা পাঠ ও মোনাজাত করেন। এছাড়া দেশের অব্যাহত শান্তি, অগ্রগতি ও সমৃদ্ধি কামনা করে মোনাজাত করা হয়। আওয়ামী লীগের জ্যেষ্ঠ নেতাদের নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা পরে দলের পক্ষ থেকে বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে আর একটি পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। আওয়ামী লীগের বিভিন্ন অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতৃবৃন্দও সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করেন। প্রধানমন্ত্রী জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষে সমাধিসৌধ প্রাঙ্গণে মন্ত্রিসভার সদস্য, তাঁর উপদেষ্টাগণ এবং দলীয় নেতা-কর্মীদের সঙ্গে নিয়ে মিলাদ ও দোয়া মাহফিলে যোগ দেন। জাতীয় সংসদের স্পিকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী ও বঙ্গবন্ধুর সমাধিতে পুষ্পস্তবক অর্পণ করে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। এরআগে, জাতীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে ঢাকার ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে জাতির পিতার প্রতিকৃতিতে পুষ্পস্তবক অর্পণের পর গতকাল মঙ্গলবার সকাল ১১টা ৩৫ মিনিটে হেলিকপ্টারযোগে বঙ্গবন্ধুর পৈতৃক নিবাস টুঙ্গিপাড়ায় পৌঁছান শেখ হাসিনা। প্রধানমন্ত্রী ঢাকার বনানী কবরস্থানে ১৫ আগস্ট হত্যাকা-ের শহীদদের কবরেও পুষ্পার্ঘ্য অর্পণ করে ফুলের পাপড়ি ছিটিয়ে দেন। তিনি ফাতেহা পাঠ করেন ও মোনাজাতে যোগ দেন। বাঙালির অবিসংবাদিত নেতা জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, তাঁর সহধর্মিণী বঙ্গমাতা বেগম ফজিলাতুন নেছা মুজিব, তাঁর তিন ছেলে-শেখ কামাল, শেখ জামাল ও শেখ রাসেল এবং বঙ্গবন্ধুর পরিবারের অধিকাংশ সদস্য ও তাঁর তিন ঘনিষ্ঠ আত্মীয় একদল বিপথগামী সেনা সদস্যের নির্মম বুলেটের আঘাতে ১৯৭৫ এর ১৫ আগস্টের কাল রাতে নৃশংস হত্যাকান্ডের শিকার হন। ঐ সময় বঙ্গবন্ধুর দুই কন্যা বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তাঁর ছোট বোন শেখ রেহানা সেই সময় বিদেশে থাকায় হত্যাকান্ডে থেকে প্রাণে বেঁচে যান।