মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ০৫:২৪ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম ::
ভোলার বিভিন্ন চরাঞ্চল অতিথি পাখির কলকাকলিতে মুখরিত লালমোহনে ডা. আজাহার উদ্দিন ডিগ্রি কলেজের সভাপতিকে সংবর্ধনা বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে শহিদ ও আহতদের স্মরণে স্মরণসভা সিংড়ায় পরিবেশ রক্ষার্থে ৫৩৬টি ডাস্টবিন বিতরণ কাজী আজিম উদ্দিন কলেজে শিক্ষার্থীদের সাথে ছাত্রদলের ৩১ দফা নিয়ে মতবিনিময় সভা পটুয়াখালীতে শিক্ষক দম্পতি হত্যাকান্ডের মূল রহস্য উদঘাটনের দাবিতে সংবাদ সম্মেলন টুঙ্গিপাড়ায় ভিক্ষুক ও হতদরিদ্রদের আত্মকর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করলো সমাজসেবা অফিস জুডিসিয়াল সার্ভিস কমিশনের আওতায় এনে সহায়ক কর্মচারী অন্তর্ভুক্ত ও বিচার বিভাগের আলাদা সচিবালয় গঠনের নিমিত্তে দাবি পেশ দাউদকান্দিতে সড়কের মাটি ধসে পড়ল খালে, দুর্ঘটনার আশংকা সীতাকুন্ডে বিতর্কিত মাদ্রাসা পরিচালকের করা মিথ্যা মামলার বিরুদ্ধে মানববন্ধন

ফুঁসছে ব্রহ্মপুত্র, পানিবন্দি হাজারো পরিবার

খবরপত্র ডেস্ক:
  • আপডেট সময় শুক্রবার, ১ সেপ্টেম্বর, ২০২৩

কুড়িগ্রামে সব নদনদীর পানি কমলেও ফুঁসছে ব্রহ্মপুত্র। টানা এক সপ্তাহ ধরে পানি বাড়তে থাকায় এই নদের অববাহিকার নি¤œা লে বন্যা পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে। পানিবন্দি হয়ে পড়েছে তিন উপজেলার চার ইউনিয়নের হাজারেরও বেশি পরিবার। আরও দুই-একদিন পানি বাড়তে পারে বলে জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবো)। পরিস্থিতি বিবেচনায় স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে খাদ্য সহায়তা বিতরণ শুরু হয়েছে। পাউবোর বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানিয়েছে, আগামী ২৪ থেকে ৪৮ ঘণ্টায় জেলার উলিপুর ও চিলমারী উপজেলায় ব্রহ্মপুত্রের পানি ৬ ইি থেকে এক ফুট উচ্চতায় বৃদ্ধি পেতে পারে। এ সময় নদের পানি বিপদসীমায় পৌঁছে আবারও কমতে শুরু করবে বলে আশা করছে প্রতিষ্ঠানটি।
পাউবোর নিয়ন্ত্রণ কক্ষ জানায়, গতকাল বৃহস্পতিবার (৩১ আগস্ট) সকাল ৯টা পর্যন্ত জেলার সব নদনদীর পানি কমতে থাকলেও ব্রহ্মপুত্রের পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। এ সময় নদের পানি বৃদ্ধি পেয়ে নুন খাওয়া পয়েন্টে বিপদসীমার ২১ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে এবং চিলমারী পয়েন্টে ৯ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। ব্রহ্মপুত্রের অব্যাহত পানি বৃদ্ধিতে সদরের যাত্রাপুর, উলিপুরের বেগমগঞ্জ, সাহেবের আলগা, হাতিয়া এবং চিলমারী উপজেলার নয়ারহাট ইউনিয়নের হাজারেরও বেশি পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। নি¤œা লের আমন ক্ষেত ও কৃষিজমি পানিতে তলিয়ে গেছে। এসব এলাকার চরা লের হাজারেরও বেশি পরিবারের ঘরে পানি প্রবেশ করায় বসবাসের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। বাসিন্দাদের রান্নার চুলা ও শৌচাগার পানিতে নিমজ্জিত থাকায় বিড়ম্বনায় পড়েছেন এসব পরিবারের কয়েক হাজার মানুষ। নারী, শিশু ও বয়স্ক সদস্যদের নিয়ে বিপাকে পড়েছে পানিবন্দি পরিবারগুলো।
উলিপুর উপজেলার বেগমগঞ্জ ইউনিয়নের বালাডোবার চরের বাসিন্দা আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘আমগো অবস্থা খারাপ। ঘরে-বাইরে পানি। পানি বাড়তেই আছে।’ মুসার চরের বাসিন্দা মতিয়ার বলেন, ‘এবার নিয়া মৌসুমে চারবার পানি উঠলো। ঘরের ভেতর কোমর সমান পানি। ক্যামনে ভালা থাকি। চরের সব পরিবারের ঘরে পানি। সাহায্য দরকার কিন্তু সবাই সাহায্য পাইতাছে না। ত্রাণ বিতরণ নিয়া অনিয়ম হইতাছে।’ ইউনিয়ন আওয়ামী লীগ সভাপতি আক্তার হোসেন জানান, ব্রহ্মপুত্রের পানি বৃদ্ধির ফলে ইউনিয়নের ছয়টি ওয়ার্ডের কমপক্ষে চার শতাধিক পরিবার পানিবন্দি। এসব পরিবারের ঘরের ভেতর হাঁটু থেকে বুক সমান উচ্চতায় পানি। ইউনিয়নের ব্যাপারীপাড়া নতুন চর, মাঝিপাড়া, ফকিরের চর, পূর্ব বালাডোবা, উত্তর বালাডোবা, মুসার চর, মশালের চরসহ কয়েকটি গ্রামের হাজারো পানিবন্দি মানুষ মানবেতর জীবন যাপন করছেন। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে এসব পরিবারকে সরকারিভাবে খাদ্য সহায়তা দেওয়া হয়েছে। আক্তার বলেন, ‘ইউনিয়নের চারশ’ পরিবারকে খাদ্য সহায়তা দেওয়া হয়েছে। উপজেলা প্রশাসনকে শুকনো খাবার বিতরণের প্রয়োজনীয়তা জানানো হয়েছে।’
এদিকে, চিলমারীর নয়ারহাট ও অষ্টমীরচর ইউনিয়নের কয়েকশ’ পরিবার পানিবন্দি হয়ে পড়েছে। বাড়ির আঙিনা ও ঘরের ভেতর পানি প্রবেশ করায় মানবেতর জীবন যাপন করছেন তারা। ব্রহ্মপুত্রের পানি বৃদ্ধি অব্যাহত থাকায় উপজেলার তিন ইউনিয়নের কয়েকশ’ হেক্টর জমির ফসল পানিতে তলিয়ে গেছে।
নয়ারহাট ইউনিয়নের চেয়ারম্যান আসাদুজ্জামান জানান, তার ইউনিয়নের হাতিয়া বকসি, কাজলডাঙা, গয়নার পটল, উত্তর খাউরিয়ার চর পশ্চিমপাড়াসহ অন্যান্য এলাকার প্রায় এক হাজার পরিবার পানিবন্দি। এসব পরিবারের অনেকের জীবন ঘরের ভেতর চৌকিতে সীমাবদ্ধ হয়ে পড়েছে। তাদের খাদ্য সহায়তার প্রয়োজন হলেও বরাদ্দ না পাওয়ায় একটি পরিবারকেও তা দেওয়া সম্ভব হয়নি। ইউনিয়নের কমপক্ষে দেড়শ’ হেক্টর জমির ছিটা আমন ও কালাই ক্ষেত পানিতে তলিয়ে পুরোপুরি নষ্ট হয়ে গেছে। অসহায়ত্ব স্বীকার করে চেয়ারম্যান বলেন, ‘বন্যা আর ভাঙনে মানুষের অবস্থা খারাপ। কিন্তু কোনও সহায়তা দিতে পারি নাই। (খাদ্য সহায়তার জন্য) বলতে বলতে ক্লান্ত হয়ে পড়েছি। আমি নৌকা মার্কার চেয়ারম্যান। কার কাছে আবদার করবো? ’
জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল আরীফ বলেন, ‘পরিস্থিতি মোকাবিলায় আমরা সব ধরনের প্রস্তুতি রেখেছি। খাদ্য সহায়তা বিতরণ চলছে। যেসব এলাকায় এখনও সহায়তা পৌঁছায়নি সেসব এলাকায় পৌঁছে যাবে। আমি সেভাবেই নির্দেশনা দিচ্ছি।’




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com