দেওয়ানগঞ্জে যমুনার পেটে বাড়ি-ঘর, হুমকির মুখে শিক্ষা প্রতিষ্ঠান জামালপুরের দেওয়ানগঞ্জ উপজেলার চিকাজানী ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের বড়খাল এলাকায় আবার তীব্র নদীভাঙন দেখা দিয়েছে। যমুনার অব্যাহত ভাঙনে বাড়ি-ঘর বিলীন হয়ে যাচ্ছে। হুমকির মুখে রয়েছে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানসহ শতাধিক বাড়ি-ঘর। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, উপজেলার চিকাজানী ইউনিয়নের ৮ নম্বর ওয়ার্ডের বড়খাল গ্রামের তোতা মিয়ার দুটি ঘর নদীগর্ভে চলে গেছে। অন্যান্য ঘর দ্রুত অন্যত্র স্থানে সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে। তোতা মিয়া জানান, আমার ঘরে মা ঘুমিয়ে ছিল। ভোর ৫টার দিকে আমার স্ত্রী হাসনা বেগম ঘুম থেকে উঠে দেখতে পায়, বাড়ির উঠানে ফাটল, তিনি ফাটল দেখেই চিৎকার দিয়ে ডাকাডাকি শুরু করেন। সবাই এসে দেখেন ঘর দেবে যাচ্ছে, অল্পের জন্য রক্ষা পায় ঘরের ভেতর ঘুমিয়ে থাকা ৯০ বছর বয়সী মা ফুলেরা বেগম। আর কিছুক্ষণ পর দেখলেই ঘর নদীতে চলে যেত। আমার ঘরে ২০ মণ পিঁয়াজের বীজ, ৬ মণ ধানের বীজসহ আসবাবপত্র ছিল। সব কিছু যমুনার পেটে গেছে। একই গ্রামের তারিকুল ইসলাম জানান, দীর্ঘদিন থেকে যমুনার ভাঙনে বহু বাড়ি-ঘর শেষ। তবুও কার্যকর স্থায়ী কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। আজ চোখের সামনে একে একে সব বাড়ি-ঘর নদীগর্ভে চলে যাচ্ছে, আমরা দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে দেখছি। মাঝিপাড়ার কুদ্দুস আলীর আক্ষেপ, বিগত কয়েক বছরে ২০ বিঘা ফসলি জমি যমুনা নদী ভেঙে নিয়ে গেছে, শেষ সম্বল ছিল বাড়ি-ভিটে, সেটাও হুমকির মুখে। আমরা স্থায়ী সমাধান চাই, জিও ব্যাগ দিয়ে আর কত দিন আমাদের সান্ত¡না দেবে? এদিকে নদীর ভাঙনে হুমকির মুখে প্রাচীন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান দেলোয়ার হোসেন উচ্চ বিদ্যালয়। কয়েক কোটি টাকা ব্যয়ে নির্মিত সেই বিদ্যালয়ের নতুন ভবন। এলাকাবাসীর দাবি, তাদের গ্রামের শেষ চিহ্ন দেলোয়ার হোসেন উচ্চ বিদ্যালয়কে যেন রক্ষা করা হয়। দুপুরে জামালপুর জেলা প্রশাসক মো. ইমরান আহমেদ ও দেওয়ানগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা(ইউএনও) কামরুন্নাহার শেফা সেই স্থান পরিদর্শন করেছেন। জামালপুর পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপসহকারী প্রকৌশলী শফিকুল ইসলাম দৈনিক খবর পত্রকে জানান, এই মাসের ১২ তারিখ থেকে জিও ব্যাগ ফেলা শুরু হয়েছে, এই এলাকার নদীভাঙন প্রতিরোধের জন্য ১৯৭৭৯ বস্তা জিও ব্যাগ বরাদ্দ পাওয়া গেছে, আশা করি ভাঙন প্রতিরোধ করা সম্ভব হবে।