গত ৯ আগস্ট থেকে ২৫দিন ধরে রাজধানীর একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। তিনি আর্থ্রাইটিস, ডায়াবেটিস, কিডনি, লিভার ও হৃদরোগ, পরিপাকতন্ত্রে রক্তক্ষরণের পাশাপাশি ও লিভার সিরোসিসে আক্রান্ত। হাসপাতাল, তার চিকিৎসক দল ও বিএনপি সূত্রে জানা গেছে, বিভিন্ন শারীরিক জটিলতা নিয়ে গত ২৫ তিন ধরে বেগম খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা ভর্তির সময় যেমন ছিল, সেই অবস্থা থেকে বর্তমানে কিছুটা উন্নতি হয়েছে। কিন্তু তার অবস্থা খুব ভালো—এটা বলা যাবে না। যে কারণে তাকে চিকিৎসকরা কবে হাসপাতাল থেকে বাসায় ফেরার অনুমতি দেবেন, সেটা এখনি বলা যাচ্ছে না।
বেগম খালেদা জিয়ার সর্বশেষ শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে বিএনপির মিড়িয়া উইং সদস্য শায়রুল কবির খান বলেন, ‘ম্যাডাম বর্তমানে কেবিনে আছেন। সার্বক্ষণিক মনিটিরংয়ের মাধ্যমে ওনার চিকিৎসা চলছে। ম্যাডাম দেশবাসীর কাছে তার সুস্থতার জন্য দোয়া চেয়েছেন।’ বিএনপি চেয়ারপারসনের চিকিৎসক দলের একজন নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থার আশানুরূপ উন্নতি এখনও হয়নি। তার লিভার সিরোসিসের সমস্যা নিয়মিত বিরতিতে দেখা দিচ্ছে। যেটা বারবার ওষুধ দিয়ে সাময়িকভাবে নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। এই মুহূর্তে বাংলাদেশে এই রোগের পূর্ণাঙ্গ চিকিৎসা সম্ভব নয়। যার ফলে, লিভারের সঙ্গে সংযুক্ত অন্যান্য রোগগুলো কখনও-কখনও বেড়ে গেলে সেগুলোর চিকিৎসা দিতে হয়। যেগুলোর চিকিৎসা বাসায় রেখে তাৎক্ষণিকভাবে করা সম্ভব হবে না। বিএনপির স্বাস্থ্য বিষয়ক সম্পাদক ডা. রফিকুল ইসলাম বলেন, তার শারীরিক অবস্থা আগের মতোই আছে। খুব বেশি ভালো বলা যাচ্ছে না।
ডা. রফিকুল ইসলাম বলেন, তিনি অনেকগুলো রোগে আক্রান্ত। যার মধ্যে বর্তমানে লিভার সিরোসিস একটা বড় সমস্যা। এখানকার হাসপাতালে কোনও রকম চিকিৎসা চলছে। এটা পূর্ণাঙ্গ চিকিৎসা নয়। ম্যাডামের মেডিক্যাল বোর্ডের চিকিৎসকরা বারবার বলেছেন—তার উন্নত চিকিৎসা দরকার। যেটা বাংলাদেশে সম্ভব নয়। তাকে বিদেশে অ্যাডভান্স সেন্টারে চিকিৎসা দেওয়া প্রয়োজন। প্রসঙ্গত, গত বছরের জুনে বেগম খালেদা জিয়ার অ্যানজিওগ্রাম করা হলে তার হৃদযন্ত্রে তিনটি ব্লক ধরা পড়ে। সে সময় একটিতে স্ট্যান্টিং (রিং) করানো হয়।
গত ১৩ জুন রাতে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়লে তাকে এভারকেয়ার হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। সে সময় হাসপাতালে পাঁচ দিন চিকিৎসা শেষে তাকে বাসায় নিয়ে আসা হয়। সর্বশেষ গত ৯ আগস্ট তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। সেই থেকে গত ২৫ দিন ধরে তিনি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।