পৃথিবীতে যত প্রাণী রয়েছে সবাই রিজিকের মুহতাজ। ‘রিজিক ছাড়া কোনো প্রাণী বেঁচে থাকা সম্ভব নয়। রিজিক বলা হয় এমন বস্তুকে যা কোনো প্রাণী স্বীয় আহার্য্যরূপে গ্রহণ করে। আর রিজিক হলো দুই প্রকার- হালাল ও হারাম। কোনো ব্যক্তি যখন শরিয়ত সমর্থিত পন্থায় উপার্জন করে তা ভোগ করে তখন তাকে হালাল রিজিক বলে। আর যখন অবৈধ পন্থায় উপার্জন করে তা ভোগ করে তখন তাকে হারাম রিজিক বলে। রিজিক সম্পর্কে মহান আল্লাহ তায়ালা ইরশাদ করেন- ‘ভূপৃষ্ঠে বিচরণকারী সব প্রাণীর রিজিকের দায়িত্ব মহান আল্লাহরই। তিনি তাদের স্থায়ী-অস্থায়ী অবস্থিতি সম্পর্কে অবহিত, সুস্পষ্ট কিতাবে সব কিছু বিদ্যমান’ (সূরা হুদ)। তিনি আরো বলেন- ‘নামাজ শেষ হলে তোমরা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়বে এবং আল্লাহর অনুগ্রহ সন্ধান করবে ও আল্লাহকে স্মরণ করবে, যাতে তোমরা সফলকাম হও’ (সূরা জুমুআ)। তিনি সূরা বাকারায় ইরশাদ করেন- ‘লোক সকল! তোমরা পৃথিবীর হালাল ও পবিত্র খাদ্যদ্রব্য থেকে ভক্ষণ করো, আর শয়তানের পথ অনুসরণ করো না, নিশ্চয় সে তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু।’ হালাল রিজিক সম্পর্কে রাসূলুল্লাহ সা: ইরশাদ করেন, ‘হালাল রিজিক অন্বেষণ করা ফরজ কার্যসমূহের মধ্যে একটি ফরজ। হালাল রিজিক দ্বারা অন্তরে নূর সৃষ্টি হয়, ইবাদতের তাওফিকসহ বিভিন্ন ধরনের পুণ্যের কাজ করার সৌভাগ্য নসিব হয়। পক্ষান্তরে হারাম রিজিক দ্বারা ইবাদতে অনীহা সৃষ্টি হয়।’ রাসূলুল্লাহ সা: বলেন, ‘হারাম দ্বারা লালিত শরীর জান্নাতে প্রবেশ করবে না। কেননা, মানুষ যখন আহার করে তখন আহারকৃত খাদ্যদ্রব্য থেকে তার শরীর রক্ত-মাংস বৃদ্ধি পায় এবং তা সমস্ত শরীর সমানভাবে ছড়িয়ে পড়ে। সর্বত্রই এর প্রভাব পরিলক্ষিত হয়। তাই খাদ্যদ্রব্য হালাল হলে অন্তর ভালো কাজে ধাবিত হয় আর খাদ্যদ্রব্য হারাম হলে অন্তর অশ্লীল কাজে উৎসাহিত হয়।
হারাম খেয়ে দোয়া করলে যেমন দোয়া কবুল হয় না, অনুরূপভাবে হারাম পোশাক শরীরে থাকলে কোনো ইবাদত কবুল হয় না।’ নবী করিম সা: বলেছেন, ‘সে ব্যক্তি ১০ দিরহাম দিয়ে একটি কাপড় ক্রয় করে যার মধ্যে মাত্র একটি দিরহাম হারাম থাকে, তাহলে তার শরীরে সে কাপড় থাকা পর্যন্ত আল্লাহ তার নামাজ কবুল করেন না।’ তাই হারাম রুজি বর্জন করা আর হালাল রুজি উপার্জন করা ফরজ। হজরত উমর রা: বলেন, আমি নবী করিম সা:-কে বলতে শুনেছি, ‘তোমরা যদি আল্লাহ তায়ালার ওপর ভরসা করার মতো ভরসা করো, তাহলে তিনি পশু-পাখিদেরকে যেভাবে রিজিক দেন অনুরূপভাবে তোমাদেরকেও রিজিক দেবেন। পশু-পাখিরা সকাল বেলা ক্ষুধার্ত অবস্থায় বের হয় আর সন্ধ্যা বেলায় উদর পূর্ণ করে বাসায় ফিরে আসে।’ লেখক : নেউতিগাছা, চাটমোহর, পাবনা