শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪, ০৯:৫৬ পূর্বাহ্ন

অটিজম চিকিৎসায় সফলতার নেপথ্য

খবরপত্র ডেস্ক:
  • আপডেট সময় শনিবার, ৯ সেপ্টেম্বর, ২০২৩

অটিজম স্পেকট্রাম ডিজঅর্ডার এক ধরনের নিউরোডেভেলপমেন্টাল ডিজঅর্ডারস; যেখানে অনেক ধরনের মানসিক সমস্যা বা প্রতিবন্ধকতা একসাথে ঘটে। ফলে, বয়স বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে শিশুর পরিপূর্ণ মানসিক বৃদ্ধি ঘটে না। এ ধরনের নিউরোলজিক্যাল সমস্যায় মস্তিষ্কের স্বাভাবিক বিকাশ বাধাগ্রস্ত হয়; জন্মগ্রহণের ১৮ মাস থেকে ৩ বছর বয়সের মধ্যেই শিশুর আচরণগত এবং মানসিক সীমাবদ্ধতা পরিলক্ষিত হয়। শিশুর কথা বলা বা ঠিকমতো শব্দ উচ্চারণ করা, নতুন বিষয় বুঝতে পারা বা শেখা কিংবা সামাজিক সম্পর্ক গড়ে তোলা তার জন্য বেশ বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়ায়।
লক্ষণ: শৈশব থেকেই অটিজমের লক্ষণসমূহ প্রকাশ পেতে শুরু করে। শিশুরা এক বছর বয়সে অর্থবহ অঙ্গভঙ্গি করতে পারে, ১৬ মাস বয়স থেকে একটি শব্দ বলতে পারে এবং ২ বছর বয়সে ২ শব্দের বাক্য বলতে পারে কিন্তু অটিজম আক্রান্ত শিশুর মধ্যে এ সব আচরণ দেখা যায় না। অটিজম শিশুরা তার সমবয়সী শিশুদের সঙ্গে বন্ধুত্ব করতে চায় না। অনেক শিশু ৩ বছর বয়স পর্যন্ত খেলাধুলা, কথাবার্তা সব ঠিক থাকে কিন্তু হঠাৎ করে কথা বলা ও সামাজিক মেলামেশা বন্ধ করে দেয়। এটাকে বলা হয় রিগ্রেসিভ অটিজম। নাম ধরে ডাকলে সাধারণত শিশুরা সাড়া দেয়, কিন্তু অটিজমে আক্রান্ত শিশুর নাম ধরে ডাকলেও সাড়া দেয় না। এ ধরনের শিশু আপন মনে থাকতে পছন্দ করে। সবচেয়ে বড় কথা, এরা কারো চোখের দিকে তাকায় না। কারও দিকে তাকিয়ে হাসে না কিংবা আদর করলেও ততটা সাড়া দেয় না। সাধারণভাবে অটিস্টিক শিশুরা একই কথা বারবার বলে এবং একই কাজ বারবার করতে পছন্দ করে। অনেক অটিস্টিক শিশুর কিছু মানসিক সমস্যা যেমন অতি চঞ্চলতা, অতিরিক্ত ভীতি, মনোযোগের সমস্যা, ঘন ঘন মনের অবস্থা পরিবর্তন হওয়া, ঘুমের সমস্যা ইত্যাদি থাকে। সুচিকিৎসা না হলে অটিস্টিক শিশুরা বড় হয়েও স্বাভাবিকভাবে জীবন চালাতে পারে না।
চিকিৎসায় সফলতার নেপথ্য-
আমাদের সেন্টারে অভিভাবকগণ যখন তাদের সন্তানদের নিয়ে আসেন- তখন আমরা দীর্ঘ সময় ধরে শিশুদেরকে পর্যবেক্ষণ করি এবং মনোযোগ সহকারে অভিভাবকদের কথা শুনি। অতঃপর আমাদের প্রয়োজনীয় তথ্যসমূহ প্রশ্নের মাধ্যমে সংগ্রহ করি। এভাবে সকল তথ্যসমূহ বিশ্লেষণ করে সঠিক ওষুধ নির্বাচন করা হয়। চিকিৎসা চলাকালে সকল শিশুর অভিভাবকদের নিকট থেকে ওষুধের কার্যকারিতা সম্পর্কে তথ্য সংগ্রহ এবং যে কোনো প্রয়োজনে চিকিৎসকের সঙ্গে ফোনে যোগাযোগের কথা বলা হয়। এ যেন হাসপাতালে ভর্তি রেখে চিকিৎসা করার আধুনিক বিকল্প ব্যবস্থা। এই ব্যবস্থায় শিশুর অভিভাবকগণ এবং চিকিৎসক দ্রুত প্রয়োজনীয় তথ্য আদান-প্রদানের মাধ্যমে সফলতাকে দ্রুততর ও কার্যকরী করতে পারেন এবং ওষুধের কার্যকর গতিবিধি সম্পর্কে সার্বক্ষণিক অবহিত থাকেন।
সর্বোপরি, অটিজম শিশুদের চিকিৎসায় অভিজ্ঞ চিকিৎসক ও ভালো মানের ওষুধ ব্যবহারের মাধ্যমে দ্রুততম সময়ে শিশুদের বুদ্ধি, ধৈর্য্য, আই-কন্ট্রাক্ট, আচরণ, কথা বলা সর্বোপরি শিশুদের সেন্স ফিরিয়ে আনার মাধ্যমেই সফলতায় পৌঁছানো সম্ভব। এছাড়াও অতিরিক্ত চঞ্চল শিশুদের আচরণও স্বাভাবিক হয়। অটিস্টিক শিশুদের চিকিৎসায় হোমিওপ্যাথির সফলতা অভিভাবকদের নিকট আশার আলো যুগিয়েছে।
লেখক: পিএইচ.ডি; এম.ফিল; ডিএইচএমএস। চিকিৎসক ও গবেষক (ক্রণিক ডিজিজ অ্যান্ড নিউরোডেভেলপমেন্টাল ডিজঅর্ডার)।
চেম্বার: নিউরোডেভেলপমেন্টাল ডিজঅর্ডার ট্রিটমেন্ট অ্যান্ড রিসার্স সেন্টার, বিটিআই সেন্ট্রা গ্রান্ড, গ্রাউন্ড ফ্লোর ১৪৪ গ্রীন রোড, পান্থপথ, ঢাকা। মোবাইল: ০১৭০৭-০৭ ৩১ ৪১।




শেয়ার করুন

এ জাতীয় আরো খবর









© All rights reserved © 2020 khoborpatrabd.com
Theme Developed BY ThemesBazar.Com