সারাদেশে ডেঙ্গু আক্রান্তসহ এ রোগে মানুষের মৃত্যুর বিষয়ে পদক্ষেপের কথা জানতে চাইলে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণমন্ত্রী জাহিদ মালেক মশা নিধন ছাড়া কিছু বলার নেই বলে স্রেফ জানিয়ে দিয়েছেন। তিনি বলেন, আমরা দেখেছি গতকালও ২ হাজার নতুন রোগী আক্রান্ত হয়েছে। সেই সঙ্গে মৃত্যু হয়েছে ১৫ জনের। এখন পর্যন্ত দেড়লাখ লোক আক্রান্ত হয়েছেন। এখনও ১০ হাজার লোক হাসপাতালে ভর্তি নিয়ে চিকিৎসাধীন? মশা নিধনের জন্য প্রত্যেকটি জায়গা পরিষ্কার রাখতে হবে। শুধু ঢাকা-শহরে নয় জেলাগুলোতেও এ কাজ করতে হবে। তবেই মশা কমবে, তবেই ডেঙ্গু রোগী কমবে এর বাইরে আমাদের কিছু বলার নেই। সোমবার (১০ সেপ্টেম্বর) দুপুরে ঢাকার আশুলিয়ার জিরানী বাংলাদেশ-কোরিয়া মৈত্রী হাসপাতালের হস্তান্তর অনুষ্ঠানে এসে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে মন্ত্রী এ কথা বলেন। করোনার কাছে আমরা জয়ী হয়েছি তবে ডেঙ্গুর কাছে সরকার বা স্বাস্থ্যখাত হেরে যাচ্ছে কি না? এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়ের কাজ আপনারা খুব ভালো জানেন। তাদের দায়িত্ব ডাক্তার-নার্সদের ট্রেইন করা। এছাড়া রোগীরা যাতে বেড পায়, ওষুধ পায় ও স্যালাইন পায় সেই কাজ সফলতার সঙ্গে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় করে আসছে। বাইরে আমরা দেখলাম স্যালাইনের অভাব দেখা দিচ্ছে, কিন্তু আমাদের হাসপাতালে স্যালাইনের অভাব নেই। তারপরও আমরা সরকারিভাবে নির্দেশনা দিয়েছি যেন ৭ লাখ স্যালাইন বাজারে ইনপুট করে আনা হয়। সেটিও এরই মধ্যে কার্যক্রম শুরু হয়ে গেছে। খুব অল্প সময়ের মধ্যে দেখবেন বাংলাদেশে স্যালাইন চলে এসেছে। আর লোকাল সেলাইন তো তৈরিই হচ্ছে। এ প্রশ্নে তিনি আরও বলেন, আমরা বারবার বলেছি। মশা যে পর্যন্ত না কমবে, সে পর্যন্ত ডেঙ্গু রোগীও কমবে না। কারণ মশার কামরেই ডেঙ্গু রোগী হয়। কাজেই মশা নিধন করতে হবে। মশা নিধন করলেই রোগী কমবে, মৃত্যু কমবে। স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, আমাদের যা চিকিৎসা দেওয়ার আমরা তার বাইরেও সচেতনতামূলক কাজও করে যাচ্ছি। আমরা টেলিভিশনে দেই, পত্রিকায় দেই মাইকিংও করছি। যে কাজটি সিটি করপোরেশনের, সেটিও আমরা করছি। বাংলাদেশ ও দক্ষিণ কোরিয়া সরকারের যৌথ উদ্যোগে ২০১৪ সালে শুরু হওয়া ‘বাংলাদেশের নির্বাচিত অঞ্চলে অপ্রয়োজনীয় অন্ধত্ব প্রতিরোধ ও চোখের স্বাস্থ্য উন্নয়ন’ প্রকল্পটি দক্ষিণ কোরিয়া সরকারের ৯ দশমিক ৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলার অনুদানের অর্থায়নে এবং কোরিয়া আন্তর্জাতিক সহযোগিতা সংস্থা (কেওইসি) দ্বারা বাস্তবায়িত হয়। এ প্রকল্পটি দেশে অপ্রয়োজনীয় অন্ধত্ব দূরীকরণে অগ্রগতি সাধন করেছে এবং অত্যাধুনিক চিকিৎসা পদ্ধতি প্রদান করে সেবা পরিবর্তন করেছে। হাসপাতালটি হস্তান্তর অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন-কোরিয়ান রাষ্ট্রদূত পার্ক ইয়ং-সিক, হাসপাতালটির বাস্তবায়ন সংস্থা কেওইসি এর ভাইস প্রেসিডেন্ট লি ইউন-ইয়ং, স্বাস্থ্যসেবা খাতের অতিরিক্ত সচিব নাসিমা খানম, কেওইসিএর দেশ পরিচালক তেয়ং কিম, (ডিজিএইচএস) মহাপরিচালক অধ্যাপক ড. আবুল বাশার মোহাম্মদ খুরশিদ আলম এবং বাংলাদেশ ও দক্ষিণ কোরিয়া সরকারের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা।