রাগ, ক্ষোভ, দুঃখ মানুষ মাত্রই থাকে। জীবনে চলার পথে নানা সুসময় ও দুঃসময় আসে। আনন্দের কিছু ঘটলে আমরা যেমন হাসি, দুঃখ পেলে তেমনই কান্না করি। আবার অন্যের কথা কিংবা আচরণে কষ্ট পাই অথবা রেগে যাই। অনাকাঙ্খিত কোনো ঘটনা ঘটলে রেগে যাওয়াটা অস্বাভাবিক নয়। তবে রাগ যদি অতিরিক্ত হয়, তাহলে তা অস্বাভাবিক। অতিরিক্ত রাগী ব্যক্তিদেরকে ভয় পান কমবেশি সবাই বা তাকে সবকিছু থেকে একটু দূরে রাখতে চায়।
যিনি রেগে যান, তার জন্য এটা অবশ্যই আনন্দের নয়। তাই অতিরিক্ত রাগী মানুষদের উচিত নিজের সঙ্গে বোঝাপড়া করা। খুঁজে বের করতে হবে তার রাগের আসল কারণ কী। শিশুকাল থেকেই অনেকের মধ্যে রাগের লক্ষণ দেখা যায়। অনেক শিশু ছোটখাটো জিনিস না পেলেই জেদ বা চিৎকার করে। এটা থেকেই কিন্তু রাগের শুরু। অনেক মা-বাবা আদর করে তখন কিছু বলেন না বা মনে করেন বড় হলে এই রাগ চলে যাবে। তবে শিশু মনোচিকিৎসকরা জানান, পরবর্তী সময়ে আরও বড় দুঃখ বা কষ্টের হাত থেকে বাঁচানোর জন্য শিশুকে ছোটবেলা থেকেই তার ‘সীমানা’ তাকে জানিয়ে দিতে হবে। একমাত্র তবেই সে তা বুঝতে শিখবে।
সাধারণত মানসিক চাপ থেকে রাগ বাড়ে। এ রকম অবস্থায় গান শুনুন, ভালো কোনো বই পড়ুন। এছাড়া ছবি আঁকতে বা রং করতেও পারেন। বিভিন্ন গবেষণা থেকে জানা গেছে, ছবি রং করলে মন শান্ত হয়।
অতিরিক্ত রাগ, জেদ বা ক্রোধ কমাতে প্রতিদিন ব্যায়াম করুন। এই যেমন জগিং, বক্সিং, যোগচর্চা বা অন্যকিছু। বিশেষ করে বয়ঃসন্ধিকাল ও মধ্যবয়সে যখন শরীরে হরমোনের পরিবর্তন ঘটে, তখন নিয়মিত ব্যায়াম করা খুবই উপকারী।
মনকে শান্ত করতে প্রকৃতির জুড়ি নেই। আর তা শুধু শুনে বা পড়ে নয়, নিজে পরীক্ষা করে নিশ্চিত হতে পারেন। কারো সঙ্গে ঝগড়া হতে পারে এমন মনে হলে বা ঝগড়া হওয়ার পরে কিছুক্ষণের জন্য বাইরে থেকে হেঁটে আসুন, দেখবেন ঘণ্টাখানেকের মধ্যে রাগ পড়ে গিয়ে মন অনেকটাই শান্ত হয়ে গেছে।
যে কাজগুলো বেশি ঝামেলার মনে হয় বা যেসব কাজে সময় বেশি লাগে, সেগুলো সম্ভব হলে আগে থেকেই করে নিন অথবা গুছিয়ে রাখুন। জরুরি কাজগুলো গোছানো থাকলে মন এমনিতেই শান্ত থাকবে। ফলে উত্তেজিত হওয়ার বা রাগ বাড়ার তেমন কোনো কারণ থাকবে না।
অতিরিক্ত রাগ ও উত্তেজনায় রক্তচাপ বেড়ে যেতে পারে। এমনকি তা থেকে ঘটতে পারে হার্ট অ্যাটাক বা স্ট্রোকের মতো ঘটনাও। তাই রাগ না করে যতটা সম্ভব হাসিখুশি থাকুন। উৎস: জাগোনিউজ২৪.কম লেখক: মামুন রাফী,কবি ও সাংবাদিক।