বাংলাদেশে গণতন্ত্রহীনতার কারণেই যুক্তরাষ্ট্র ভিসানীতি প্রয়োগ শুরু করেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু। তিনি বলেছেন, দেশের ৫২ বছরে আমাদের অর্জন আমেরিকার স্যাংশন ও ভিসানীতি। আমাদের প্রধানমন্ত্রী আমেরিকায় থাকা অবস্থায় গতকাল ভিসা-নীতির কার্যক্রম চালু করেছে। কেন করেছে? কারণ বাংলাদেশে গণতন্ত্র নাই। ভোটার অধিকার নাই। মানবাধিকার নাই। আর এই কারণে আমেরিকা আগে স্যাংশন দিয়েছিল এখন ভিসা নীতি কার্যক্রম শুরু করেছে। শোনা যাচ্ছে সরকারি দলের দায়িত্বশীল অনেক নেতা, প্রশাসনের অনেক কর্মকর্তা, এবং সচিব পর্যায়ের অনেকেই এই ভিসা নীতির আওতায় পড়েছে। কেন বাংলাদেশের ওপর ভিসা নিতে আসবে? এটা কোন আনন্দের সংবাদ না। শনিবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের সামনে বাংলাদেশ নাগরিক অধিকার আন্দোলনের উদ্যোগে বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার সুচিকিৎসার জন্য বিদেশে প্রেরণ এবং আমানউল্লাহ আমান, সালাউদ্দিন আহমেদ, রফিকুল আলম মজনু, তানভীর আহমেদ রবিন সহ জাতীয় নেতৃবৃন্দদের মুক্তি দাবিতে এক প্রতিবাদ সভায় তিনি এসব কথা বলেন। শামসুজ্জামান দুদু বলেন, যে দেশ এক সাগর রক্তের বিনিময়ে মুক্তিযুদ্ধ করে স্বাধীন হয়েছে।
গণতন্ত্রের জন্য, স্বাধীনতার জন্য মুক্তিযুদ্ধ করেছে সেই দেশে এখন গণতন্ত্র নাই, স্বাধীনতা নাই। সরকারের উদ্দেশ্যে ছাত্রদলের সাবেক এই সভাপতি বলেন, আপনারা এই দেশ থেকে লক্ষ হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছেন। যারা আমেরিকায় টাকা পাঠিয়েছেন, বাড়ি কিনেছেন তারা সেগুলো ভোগ করতে পারবেন না। আপনারা যে অন্যায় করেছেন। আমেরিকা ইউরোপ আপনাদের উপর কি করলো সেটা বড় বিষয় না। কিন্তু আমাদের লজ্জা হয়। আপনারা প্রশাসনে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীতে যে অপকর্ম করেছেন। বিশ্বের কাছে অপমানজনক অবস্থায় ফেলেছেন এটা কি আপনারা বুঝতে পারছেন? তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী আমেরিকায় সাধারণ অধিবেশনে গিয়েছেন ১-৩ দিনের জন্য কিন্তু শোনা যাচ্ছে সেখানে তিনি এই পুরো মাস থাকবেন। কিসের জন্য থাকবেন, কেন থাকবেন- এটা রাষ্ট্রীয়ভাবে বলা হয় নাই।
কৃষকদলের সাবেক এই আহবায়ক বলেন, আবার শোনা যাচ্ছে তিনি অতি তাড়াতাড়ি চলে আসবেন। আসেন পদত্যাগ করেন। যত তাড়াতাড়ি পদত্যাগ করবেন, তত ভালো হবে। দেশের মানুষ চায় আপনি পদত্যাগ করেন, তত্ত্বাবধায়ক সরকার প্রতিষ্ঠিত করেন দেশে একটি সুষ্ঠু নির্বাচন সুষ্ঠু নির্বাচনের পরিবেশ হোক। আর যদি পদত্যাগ না করেন তাহলে বাংলাদেশের মানুষ বাধ্য করবে কেয়ারটেকার সরকার প্রতিষ্ঠিত করতে। চারদিকের অবস্থা কিন্তু ভালো না। যেখানেই বিএনপি মিটিং সভা-সমাবেশ ডাকে সেখানেই লক্ষ লক্ষ মানুষ হয়।
সরকারের উদ্দেশ্যে শামসুজ্জামান দুদু বলেছেন, আন্দোলন এখনো কিছুই দেখেন নাই। সেপ্টেম্বরের পরে অক্টোবর আসবে। অক্টোবর হবে জালিমের পতনের মাস, স্বাধীনতার, মানবাধিকার মাস। এই অক্টোবরেই সরকারের সঙ্গে দেনা-পাওনার সকল কিছু মীমাংসা হয়ে যাবে।
সংগঠনের আহবায়ক এম জাহাঙ্গীর আলমের সভাপতিত্বে সদস্য সচিব ইঞ্জিনিয়ার মোফাজ্জল হোসেন হৃদয়ের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে আরো বক্তব্য রাখেন বিএনপির সহ-তথ্যবিষয়ক সম্পাদক কাদের গণি চৌধুরী, ডা. মো. ইউনুছ আলী, তাঁতি দলের যুগ্ম আহবায়ক ডা. কাজী মনিরুজ্জামান মনির, কৃষকদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক শাহ আব্দুল্লাহ আল বাকী, সহ-সাধারণ সম্পাদক শেখ রবিউল ইসলাম রবি, মুক্তিযোদ্ধা দলের সাংগঠনিক সম্পাদক মিয়া মোহাম্মদ আনোয়ার প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।