বিএনপি চেয়ারপারসন ও সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে ৩৬ ঘণ্টার মধ্যে বিদেশে না পাঠালে তার কিছু হলে পরিণতি শুভ হবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস। গতকাল সোমবার সকালে নয়া পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে তার আশু আরোগ্য কামনায় দোয়া মাহফিল পূর্ব সংক্ষিপ্ত বক্তব্যে তিনি এই হুঁশিয়ারি দেন।
তিনি বলেন, ‘আমি আবারো অনুরোধ জানাব, ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে এর মধ্যে ১২ ঘণ্টা সময় চলে গেছেৃ আর ৩৬ ঘণ্টার মধ্যে যেন দেশনেত্রীকে বিদেশে পাঠানো হয় চিকিৎসার জন্য।’ ‘একটা কথা আমি আবারো বলছি, এই অবস্থায় দেশনেত্রীর যদি কিছু হয়ে যায় তাহলে আপনাদের কারো কোনো অস্তিত্ব বাংলাদেশে আমরা রাখব না। আমি দুঃখিত আমি একটু বোধহয় আবেগপ্রবণ হয়ে গেছি।’
দেশনেত্রীর যদি কিছু হয়ে যায় তাহলে আপনাদের কারো কোনো অস্তিত্ব বাংলাদেশে আমরা রাখব না। আমি দুঃখিত আমি একটু বোধহয় আবেগপ্রবণ হয়ে গেছি।’ গত ৯ আগস্ট থেকে খালেদা জিয়া অসুস্থ অবস্থায় বসুন্ধরার এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। তার জন্য গঠিন মেডিক্যাল বোর্ডের চিকিৎসকরা বলেছেন, তার অবস্থা সঙ্কটজনক। লিভার প্রতিস্থাপনের জন্য তাকে দ্রুত বিদেশে পাঠানো জরুরি।
মির্জা আব্বাস অভিযোগ করেন, ‘আমরা আসলে বোকার স্বর্গে বসবাস করছিৃ আমরা বুঝতে পারিনি। যেদিন নেত্রীকে গ্রেফতার করা হয়েছে, সেদিন থেকেই তাকে হত্যার চক্রান্ত করা হয়েছে। এই গ্রেফতার ছিল তাকে হত্যা করার জন্যৃ আমরা বুঝতে পারিনি। আমরা বুঝেছি গ্রেফতার করা হয়েছে, গ্রেফতার করা হয়েছে। অসুস্থ হওয়ার পরে আমরা বলা শুরু করেছি তিনি অসুস্থ হয়েছেন।’ ‘আসলে উনাকে গ্রেফতার করে অসুস্থ করে মৃত্যুর দিকে ঠেলে দেয়া হবে এটাই ছিল তাদের প্ল্যান। সেই প্ল্যান এখন কার্য্কর করছে। আর তা না হলে কিভাবে অমানুষের মতো, অমানবিকতার মতো একটা কথা বলেন যে খালেদা জিয়াকে বাইরে পাঠানোর কোনো সুযোগ নাইৃ আইনের জটিলতা আছে।’
তিনি বলেন, ‘একটা মানুষের জীবন বাঁচাতে পৃথিবীর কোনো আইন-টাইন কাজে লাগে না। যখন জীবন বাঁচানোর প্রয়োজন হয়, তখন তার জন্য যে চিকিৎসা দরকার যেখানে চিকিৎসা দরকার সেটা করা দরকার এটা হলো মানবিক এটা আইন। আন্তর্জাতিক জেনেভার কনভেনশনের একটা আইন আছে সেই আইনে উনি চিকিৎসা পেতে পারেন। তাকে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে না।’ ‘আমরা আশা করছি, সরকার এই সুযোগটা নেবেন যে দেশনেত্রীকে তারা বিদেশে পাঠিয়েছেন।’ কারাবন্দি নেতাদের বিদেশে পাঠানোর অতীত উদাহরণ তুলে ধরে মির্জা আব্বাস বলেন, ‘ গতকাল ( রোববার) আমাদের মহাসচিব বলেছেন, ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে উনাকে বিদেশে পাঠাতে হবে। আজকে দেখলাম উনারা (সরকার) বলছেন, আইনের জটিলতা আছে। আমি আজকে স্মরণ করিয়ে দিতে চাই, প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান সাহেবের সময়ে আসম আবদুর রবকে জার্মান পাঠানো হয়েছিল। দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার সময়ে আজকের যে বেঈমান একটা আছে রাশেদ খান মেননৃ তাকে বিদেশে পাঠিয়েছিলেন, তার লিভার টুকরা টুকরা হয়ে গিয়েছিল তাকে সুস্থ করেছিলেন। আজকে সে আমাদের বিরুদ্ধে কথা বলে।’
‘হাজী সেলিম সে ব্যাংকক গেল, চিকিৎসা করে ফেরত আসলো সে বাইরে আছে, এখন সহিসালামতে আছে। ম খা আলমগীর (মহিউদ্দিন খান আলমগীর) একই মামলায় সাজাপ্রাপ্ত বাইরে ঘুরাফেরা করছে, মায়া (মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া) একই মামলায় সাজাপ্রাপ্ত বাইরে ঘুরাফেরা করছে। অথচ আমার নেত্রী, যিনি কোনো অপরাধ করেননি তাকে বন্দি করে রাখা হয়েছে।’ নয়া পল্টনের নিচ তলায় ‘৯০-এর ডাকসু ও সর্বদলীয় ছাত্র ঐক্যে ও ছাত্র দলের সাবেক নেতৃবৃন্দের উদ্যোগে অসুস্থ খালেদা জিয়ার আশু রোগমুক্তি কামনায় এই দোয়া করা হয়। এই মিলাদ মাহফিলে সাবেক ছাত্র নেতাদের মধ্যে শামসুজ্জামান দুদু, হাবিবুর রহমান হাবিব, আবুল খায়ের ভুঁইয়া, খায়রুল কবির খোকন,জহির উদ্দিন স্বপন, মোস্তাফিজুর রহমান বাবুল, শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, নাজিম উদ্দিন আলম, ফজলুল হক মিলন, শিরিন সুলতানা, আসাদুর রহমান খান, এ বি এম মোশাররফ হোসেন, আমিরুল ইসলাম খান আলিম, আবদুল কাদির ভুঁইয়া জুয়েল প্রমুখ নেতারা উপস্থিত ছিলেন।