বর্তমান সরকার মানুষের সকল অধিকার কেড়ে নিয়ে দেশকে সংকটাপন্ন করেছে বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। গতকাল সোমবার দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ মন্তব্য করেন তিনি। রুহুল কবির রিজভী বলেন, এই সরকার মরণকামড় দেয়ার জন্য নানাবিধ নিপীড়নের যন্ত্র গণতন্ত্রে বিশ্বাসী মানুষের ওপর নামিয়ে এনেছে। দেশব্যাপী চলছে মিথ্যা মামলা, গ্রেপ্তারের হিড়িক, হামলা ও ভাংচুরের অব্যাহত নিষ্ঠুর ঘটনা। মানুষের সকল অধিকার কেড়ে নিয়ে দেশকে সংকটাপন্ন করা হয়েছে। সুষ্ঠু নির্বাচন, গণতন্ত্র, মানবাধিকার ও জবাবদিহিতার বিষয়গুলো উপেক্ষা করে ম্যান্ডেটবিহীন সরকারের আচরণ করছে বলেই আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, প্রশাসন, আদালত, বিচারক সবাইকে সরকারের তল্পিবাহকে পরিণত করা হয়েছে।
তিনি বলেন, আওয়ামী লীগের মতো একটি দল তাদের অধীনে এমন কোনো নির্বাচন হতে দেবে না যেখানে তাদের পরাজয় হয়। সুতরাং অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচনের জন্য তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে ভোটাধিকার প্রয়োগই একমাত্র পূর্বশর্ত। আর বিচারের নামে ক্যামেরা ট্রায়াল ও রাজনৈতিক নেতাকর্মীদের আদালতে সাজানো সাক্ষীর মুখে শেখানো বুলি শিখিয়ে এবং দীর্ঘক্ষণ আটকিয়ে রেখে কক্ষে কক্ষে কন্সেন্ট্রেশন ক্যাম্পের আদলে নির্দয় ব্যবহার করা হচ্ছে।
রিজভী বলেন, নির্বাচনের প্রাক্কালে আদালত প্রাঙ্গনে ফ্যাসিবাদের নমুনা ফুটে উঠতে শুরু করেছে। রাজশাহী জেলা বিএনপির আহ্বায়ক আবু সাঈদ চাঁদকে গ্রেপ্তার করে প্রায় ৫ মাস ধরে হয়রানি করা হচ্ছে অত্যন্ত নিষ্ঠুরভাবে। গতকাল রাজশাহীতে আদালত একটি সাজানো মিথ্যা মামলায় তিন বছরের সাজা দিয়েছে। অথচ এই মামলায় এফআইআর এ তার কোন নাম ছিল না, তাছাড়া বাদী মামলাটি প্রত্যাহার করে নিয়েছিলেন। দেশ থেকে বিরোধী দলের তালিকা মুছে দেয়ার জন্যই এখন সারা দেশব্যাপী আজ্ঞাবাহী আদালত দিয়ে মিথ্যা মামলায় সাজা দেয়া শুরু হয়েছে। আমি এই সাজার বিরুদ্ধে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি এবং ঘৃণাভরে প্রত্যাখান করছি।
এ সময় তিনি গত ২৮ ও ২৯ জুলাই থেকে বিএনপি’র কেন্দ্র ঘোষিত কর্মসূচিকে কেন্দ্র করে সারা দেশের মামলা, গ্রেপ্তার আসামি ও আহতদের সংখ্যা তুলে ধরেন। রিজভী জানান, এসময়ে আহত ১৫৪০ জন, মামলা ৩৩৫, গ্রেপ্তার ১৯৯৫ জন এবং আসামি করা হয়েছে ১৪,৩৬০ জনকে।