দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগে
বগুড়ার দুপচাঁচিয়া উপজেলার জিয়ানগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে বিভিন্ন অপকর্ম, অনিয়ম ও নজিরবিহীন দুর্নীতি, ভুয়া প্রকল্প দাখিলের মাধ্যমে সরকারি অর্থ আত্মসাত, ইউপি সদস্যদের সঙ্গে অসদাচরণ, সহ সকল প্রকার সেবামূলক কাজে অর্থ গ্রহণ এর প্রতিবাদ ও তার অপসারণের দাবীতে মানববন্ধন কর্মসূচী পালিত হয়েছে। গতকাল ইউনিয়নের ছোট নিলাহালী বাজারে সকাল ১০টা হতে ১১টা পর্যন্ত ঘণ্টাব্যাপী অত্র ইউনিয়নের ১১জন ইউপি সদস্য ও জনসাধারণের আয়োজনে এ মানববন্ধন কর্মসূচী পালিত হয়। মানববন্ধন চালাকালে বক্তব্য রাখেন ইউপি সদস্য মোকছেদুল ইসলাম, সালাম উদ্দিন, আহসান আলী তালুকদার, হায়বত আলী শেখ, আব্দুর রাজ্জাক, আনোয়ার হোসেন, শহীদুল ইসলাম, ইদ্রিস আলী, রফিকুল ইসলাম, নূর জাহান বেগম, আঙ্গুর বেগম, ভুক্তভোগী ইউনিয়নবাসী আজিজার রহমান, আজিজুল হক, বেলী মালী প্রমুখ। বক্তারা বলেন, চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন দায়িত্বভার গ্রহণের পর হতে নিয়মিত কোনো সভা করেন না। সভার রেজুলেশনে সদস্যদের শুধু সাক্ষর নেন, কিন্তু তাতে কি লেখা আছে তা দেখানো হয় না। ২০২১-২২ অর্থ বছরে বকেয়া ট্যাক্স ১লাখ ৮হাজার টাকা আদায় করলেও ইউপি সদস্যদের হিসাব দেন মাত্র ৬৫হাজার টাকা। ২০২২-২৩অর্থ বছরে বাজেটের রাজস্ব হিসাবে আদায় না দেখিয়ে তিনি নিজে অর্থ আত্মসাত করেছেন। ২০২২-২৩ অর্থ বছরে ট্যাক্স ও ট্রেড লাইসেন্স বাবদ কত টাকা আদায় তা এখন পর্যন্ত সদস্যদের জানাননি তিনি। ২০২২-২৩অর্থ বছরে ১% এর ৮লাখ টাকার কোনো সভা না করে তিনি এককভাবে কাজ করেছেন। এ বিষয়ে ইউনিয়ন পরিষদে কোনো সভা তিনি করেননি ও সদস্যদেরও জানাননি। ৪০দিনের কর্মসূচীর লোকদের মধ্যে ৫জনের নিকট থেকে তিনি ঘুষ নিয়ে তাদের কাজে সুযোগ করে দিয়েছেন। দায়িত্বভার গ্রহণের পর হতে ইউপি সদস্যদের মাত্র ৪মাসের সম্মানিভাতা দিয়েছেন। ভাতা চাইতে গেলে তিনি অকথ্যভাষায় গালিগালাজ করেন। বাসাবাড়ীর হোল্ডিং প্লেট তিনি একক সিদ্ধান্তে তৈরি করেছেন। হোল্ডিং প্লেটের সংখ্যা কত এবং তা হতে কত টাকা রাজস্ব এসেছে তার কোনো রেজিষ্টার নেই। জিয়ানগর হাট ও বাজার ইজারার ৩০% ২লাখ ৫০হাজার টাকার ভুয়া ফাইল তৈরি করে তিনি তা আত্মসাত করেছেন। এছাড়াও মাতৃত্বকালীন ভাতা, ভিজিডির কার্ড সহ অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা দেয়ার নামে তিনি অনেক অসহায় ও গরীব লোকদের নিকট হতে অর্থ নিয়েছেন। এসব দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতার বিরুদ্ধে অভিযোগ এনে ও আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য গত ২৩আগস্ট বগুড়া জেলা প্রশাসক বরাবর অত্র ইউনিয়ন পরিষদের ১১জন ইউপি সদস্যের স্বাক্ষরিত আবেদন করা হয়েছে। সেই সঙ্গে দুপচাঁচিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার, রাজশাহী বিভাগীয় কমিশার ও স্থানীয় সরকার সচিব বরাবরে আবেদন করা হয়েছে। এছাড়াও ওই ১১জন ইউপি সদস্যদের স্বাক্ষরিত একই অভিযোগে চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে অনাস্থা এনে গত ১৪সেপ্টেম্বর রাজশাহী বিভাগীয় কমিশারের কার্যালয়, দুপচাঁচিয়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও স্থানীয় সরকার সচিব বরাবরেও আবেদন প্রেরণ করা হয়েছে।