রাজধানী ঢাকাতে শুক্রবার সকাল পর্যন্ত ৬৫ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করেছে আবহাওয়া অফিস। গত বুধবার (৪ অক্টোবর) থেকে শুরু হওয়া এই বৃষ্টি গতকাল শুক্রবার (৬ অক্টোবর) দুপুরেও অব্যাহত আছে। ফলে রাজধানীর বিভিন্ন সড়ক ও আবাসিক এলাকায় জলজটের সৃষ্টি হয়। এতে ভোগান্তিতে পড়েছে রাজধানীর দিনমজুর ও নি¤œ আয়ের মানুষ। আয় বন্ধ হয়ে যাওয়ায় অনেকেই বৃষ্টি মাথায় নিয়েও বের হয়েছেন কাজের সন্ধানে। গত শুক্রবার সকাল থেকে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে এমন চিত্র।
পুরান ঢাকার লালবাগ চৌরাস্তায় দেখা গেছে, বৃষ্টির কারণে সড়কে মানুষের উপস্থিতি খুবই কম। রাস্তায় রিকশা নিয়ে বের হওয়া রিকশা শ্রমিকরা অধিকাংশই খালি রিকশা নিয়ে এদিক-ওদিক যাত্রী খুঁজে বেড়াচ্ছেন। অনেকে আবার রিকশা রাস্তার পাশে রেখে পলিথিন মুড়ি দিয়ে রিকশায় বসে ঝিমুচ্ছেন।
কবির হোসেন নামে এক রিকশা চালক বলেন, শুক্রবার ছুটির দিনে এমনিতেই রাস্তায় মানুষ নাই। আবার দুই দিনের বৃষ্টির কারণে প্রয়োজন ছাড়া কেউ বের হচ্ছে না। রিকশা চালাইয়া যা ইনকাম হচ্ছে, তা দিয়ে গ্যারেজের জমা দেওয়ার পর তিন বেলা খাবারের খরচও ওঠে না। ভ্রাম্যমাণ সবজি বিক্রেতা থেকে শুরু করে রাস্তায় বিভিন্ন পণ্য বিক্রি করা হকাররাও পড়েছেন সংকটে। ক্রেতা না পেয়ে তাদের দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা গেছে।
জানা গেছে, শুক্রবার সাপ্তাহিক ছুটির দিন হওয়ায় এদিন পুরো সপ্তাহের তুলনায় তাদের আয় বেশি হয়। কিন্তু টানা বৃষ্টির কারণে তাদের অনেকেই পণ্য নিয়ে বের হতে পারেননি। যারা বের হয়েছেন, তাদের খুব একটা বেচাবিক্রি নেই। পলাশী মোড়ে ভ্রাম্যমাণ সবজি বিক্রেতা কাউসার জানান, সরকারি চাকুরে এবং অন্যান্য ব্যস্ত মানুষেরা পুরো সপ্তাহের বাজার করেন শুক্রবারে। সেই হিসাব করেই আজ একটু বেশি সবজি তুলেছেন তিনি। কিন্তু সে তুলনায় বিক্রি একেবারেই কম।
তিনি বলেন, শুক্রবার দুপুরের আগেই অর্ধেকের বেশি সবজি বিক্রি করে ফেলি। কিন্তু বৃষ্টির কারণে আজ সকাল থেকে লোকজনের দেখা নাই।
টানা বৃষ্টিতে অন্যান্য শ্রেণি-পেশার মানুষও ভোগান্তিতে পড়েছেন। অনেকেই জরুরি প্রয়োজনে বের হওয়ার পর গন্তব্যস্থলে পৌঁছাতে পোহাতে হয়েছে ব্যাপক বিড়ম্বনা। কেউ ছাতা নিয়ে পায়ে হেঁটে, কেউবা বৃষ্টিতে ভিজেই পৌঁছেছেন গন্তব্যস্থলে। এ ছাড়া বৃষ্টিপাতের কারণে সড়কে মানুষের উপস্থিতিও ছিল কম।
এদিকে আবহাওয়া অধিদফতর জানিয়েছে, আজ থেকে সারা দেশে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ কমতে পারে। আজ শনিবার (৭ অক্টোবর) থেকে আরও কমে যাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। তবে দেশের কোথাও কোথাও মাঝারি ধরনের ভারী থেকে ভারী বর্ষণ হতে পারে।