সাভারে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের গেন্ডা বাসস্ট্যান্ড থেকে রেডিও কলোনি পর্যন্ত প্রায় চার কিলোমিটার অংশে চরম বিপাকে পড়তে হচ্ছে পথচারী ও যাত্রীদের। মহাসড়কের সার্ভিস লেনে যানজটের কারণে পাঁচ মিনিটের পথ পাড়ি দিতে সময় লেগে যাচ্ছে ১ থেকে দেড় ঘন্টা। এ ছাড়া মহাসড়কে ইচ্ছেমত গাড়ি চলাচলের নির্দিষ্ট লেনে যত্রতত্র নামানো হচ্ছে যাত্রীদের। ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক প্রশস্তকরণের অংশ হিসেবে প্রায় তিন মাস আগে সাভার বাসস্ট্যান্ড অংশে সড়ক বিভাজক দিয়ে সার্ভিস লেন আলাদা করা হয়। উদ্দেশ্য ছিল যাত্রী ভোগান্তি কমানো।
কিন্তু চালকদের অনীহা, যত্রতত্র পার্কিং ও ভাসমান দোকানপাট দখল করে রেখেছে সড়ক। এর কারণে বেশির ভাগ বাসচালক নির্দিষ্ট লেন ধরে চলায় সড়ক পারাপারে ফুটওভার ব্রিজ ব্যবহার করতে পারছেন না যাত্রীরা। এই সড়কে নিয়মিত চলাচলকারী সাভারের এক পথচারী বলেন, যানজটের কারণে সাভারবাসীর দৈনন্দিন জীবন বিঘ্নিত হচ্ছে। এই সংকট সমাধান করা না গেলে একটি ভালো উদ্যোগ ব্যর্থ হয়ে যাবে। সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, রেডিও কলোনি বাসস্ট্যান্ড থেকে গেন্ডা বাসস্ট্যান্ড পর্যন্ত দখলের এক এলাহি কারবার। সড়ক ও জনপথের আইন না মেনেই ইচ্ছেমতো পার্কিংসহ বসেছে ভাম্যমাণ দোকান-পাট। সাভার বাসস্ট্যান্ড–সংলগ্ন মহাসড়কের পাশে গড়ে ওঠা কাঁচাবাজারের বর্জ্য স্তূপ করে রাখা হয়েছে সার্ভিস লেনে। কিছু অংশ দখল করে রেখেছে ভাড়ায় চালিত গাড়িসহ বিভিন্ন যানবাহন ও নানা রকমের পণ্যের দোকান। এক বাসের চালক বলছিলেন, ‘সার্ভিস লেনে ঢুকে সামনের বাসের কারণে আগাইতে পারছি না। পাশে তো জায়গাও নাই চইলা যাব” ফুটপাত বসাইয়া রাস্তার জায়গা দখল কইরা রাখছে, কিছু কইলে ফুটপাতের পোলাপান মারতে আসে পুলিশও কিছু কয় না। সড়ক ও জনপথ ঢাকা বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ শামীম আল মামুন বলেন, জনসাধারণের বৃহৎ স্বার্থ বিবেচনায় নিয়ে মহাসড়কে নির্দিষ্ট লেন ও সার্ভিস লেন তৈরি করা হয়েছে। রক্ষণাবেক্ষণসহ বেশ কিছু জটিলতার কারণে পদচারী–সেতুতে চলন্ত সিঁড়ি বসানো সম্ভব নয়। একজন পথচারী বলেন, সার্ভিস লেনে যানজট থাকায় বেশ কয়েকটি পরিবহনের বাস সার্ভিস লেনে না গিয়ে ডাইরেক লেন ব্যবহার করছে। আমাদের নামানো হচ্ছে সেই লেনে। নামার পর ভোগান্তির শিকার হচ্ছে সাধারণ মানুষ। সড়ক পার হতে না পেরে এক থেকে ২ কিলোমিটার হেঁটে সড়ক বিভাজক নেই- এমন স্থান দিয়ে সড়ক পার হচ্ছি আমরা। অনেকেই পার হচ্ছেন সড়ক বিভাজকের ওপর দিয়ে। পুরুষরা সহজে পার হতে পারে। কিন্তু আমরা তো মেয়েমানুষ, আমরা কিভাবে পার হবো বলেন? মূল সড়কে যাত্রী নামায় বাস চালকরা, এর কারণে আমাদের ভোগান্তির শেষ নেই। যেখানে আমাদের প্রশান্তি হওয়ার কথা, সেখানেই আমাদের ভোগান্তি। ওই মহাসড়কে সমস্যার কথা তুলে ধরে সড়ক ও জনপথ ঢাকা বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী মোহাম্মদ শামীম আল মামুন বলেন, সার্ভিস লেনটি দুটি লেনের, প্রস্থ ২৪ ফুট। একটি বাস যে লেনে দাঁড়াবে, অপর লেনটি দিয়ে অন্য বাসগুলো নির্বিঘ্নে চলে যাবে। কিন্তু দেখা যায় বাসগুলো যাত্রী নেয়ার সময় পেছনের বাসকে আটকে রেখে লেনের মাঝবরাবর দাঁড়িয়ে থাকে। বিষয়টি দায়িত্বরত পুলিশ সদস্যদের নিয়ন্ত্রণ করতে হবে। এ বিষয়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সাথে কথা বলে জানা যায়, সার্ভিস লেনের সমস্যা নিরসনে ইতিমধ্যে কাজ করছে পুলিশ। এর অংশ হিসেবে প্রতিনিয়ত আমাদের আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী ঝটিকা অভিযানের মাধ্যমে তা নিরসনের কাজ করে যাচ্ছে।