প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমাদের আর কিছু নেই। আমাদের কোনও মুরুব্বি নেই। আমাদের আছে বাংলাদেশের জনগণ। সেই জনগণ নিয়েই আমাদের চলতে হবে। সংসদ নির্বাচনে নানাভাবে গোলমাল করার চেষ্টা হবে অভিযোগ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, আওয়ামী লীগের প্রতিটি নেতাকর্মীকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। ভোটের অধিকার নিশ্চিত করতে হবে। মানুষ যেন শান্তিপূর্ণভাবে ভোট দিতে পারে সেই পরিবেশ রাখতে হবে। গতকাল শুক্রবার (৩ নভেম্বর) জেল হত্যা দিবস উপলক্ষে আওয়ামী লীগ আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
বিদ্রোহী হয়ে নির্বাচন করা এবং মনোনীত প্রার্থীর বিপক্ষে অবস্থান নেওয়ার বিষয়ে কড়া হুঁশিয়ারি উচ্চারণ করে আওয়ামী লীগ সভাপতি কলেন, নমিনেশন সেটা তো আমরা দেবো। আর আমি বসে থাকি না। প্রতি ছয় মাস পর পর আমার একটা হিসাব থাকে। কেউ যদি মনে করে এখন তো ওরা নেই, আমরা দাঁড়ালে আমরা জিতেই যাবো, আর একটা সিট না পেলে কী হবে, বাকি সিট তো পাবে, সরকার গঠন করবে। এই চিন্তা যেন কারও মাথায় না থাকে। কারণ এই চিন্তায় কিন্তু সর্বনাশ ডেকে আনবে। যে সিদ্ধান্ত দেবো তা মানতে হবে। তিনি বলেন, জনগণের ভোটের অধিকার নিশ্চিত করে সুষ্ঠু নির্বাচন করে গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত রাখতে হবে। যাতে করে এই দেশের অগ্রযাত্রা আর কেউ ব্যাহত করতে না পারে।
দ্রব্যমূল্য নিয়ে নানাভাবে চক্রান্ত হচ্ছে উল্লেখ করে প্রধানমন্ত্রী বলেন, সব কিছুর উৎপাদন খরচ বেড়েছে। তাহলে কীসের অভাব হবে? এগুলোর পেছনে কারা আছে? মজুদ করে রেখে দেবে, কিন্তু বাজারে আনবে না। না এনে দাম বাড়িয়ে সরকারের বিরুদ্ধে কথা বলবে। এটাই তারা করে যাচ্ছে। এই ধরনের কারা মজুত করে? মালপত্র থাকা সত্ত্বেও বাজারে না এনে জনগণের পকেট কাটার চেষ্টা করে এদের খুঁজে বের করতে হবে। তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে হবে। উৎপাদন এতটুকু কমেনি। সবকিছুর উৎপাদন বেড়েছে। আন্তর্জাতিক বাজার থেকে অতিরিক্ত দাম দিয়ে আমরা কিনে নিয়ে আসছি। কিন্তু সেটা মানুষের কাছে পৌছাবে না কেন? ফিলিস্তিন ইস্যুতে বিএনপির অবস্থানের সমালোচনা করে তিনি বলেন, প্যালেস্টাইনে আজ কী হচ্ছে? হাসপাতালে বোমা মেরেছে।
তিনি বলেন, স্বাধীনতার সময়ে অনেক দেশ বাংলাদেশের বিরুদ্ধে ছিল। কিন্তু বাংলাদেশের জনগণই অস্ত্র হাতে তুলে স্বাধীন করেছিল। বাংলাদেশের জনগণই সব ক্ষমতা রাখে। যারা স্বাধীনতাবিরোধী ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনাবিরোধী, দেশ ভালো থাকলে ওদের মনে জ্বালা হয়। এদের যন্ত্রণা হয়। মানুষের স্বস্তিতে থাকাটা ওদের পছন্দ নয়। মানুষের জীবন নিয়ে ওরা ছিনিমিনি খেলে। যে কারণে এর এই জ্বালাও-পোড়াও, অগ্নিসংযোগ করে বেড়াচ্ছে।
আলোচনা সভায় অন্যদের মধ্যে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, সভাপতিমণ্ডলির সদস্য শাজাহান খান, মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া, সভাপতিমণ্ডলির সদস্য জাতীয় চার নেতার অন্যতম তাজউদ্দিন আহমেদের কন্যা সিমিন হোসেন রিমি, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।